শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সর্বত্রই উচ্চারিত হচ্ছিল 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই'

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সর্বত্রই উচ্চারিত হচ্ছিল 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই'

ভাষা আন্দোলনের এই পর্যায়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত ছিল বাঙালিরা। বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন রূপ নেয় শাসকদের কাছ থেকে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। বায়ান্ন সালে ফেব্রম্নয়ারি মাসের প্রতিটি দিন ছিল তারই সাক্ষী। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যা আরও গতি পাচ্ছিল।

১৩ ফেব্রম্নয়ারির আগেই প্রকাশ্যে ও গোপনে চলছিল মিটিং মিছিল সভা-সমাবেশ। সর্বত্রই উচ্চারিত হচ্ছিল 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই'। আর এসব তৎপরতার মধ্য দিয়ে বাঙালি জেগে ওঠে নতুনভাবে নতুন চেতনায়। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রম্নয়ারি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় ১১ ও ১৩ ফেব্রম্নয়ারি পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী কর্মসূচি পালিত হয়। তবে মূল প্রস্তুতি চলে ২১ ফেব্রম্নয়ারির সাধারণ ধর্মঘট সফলের।

এদিন পুরুষের পাশাপাশি নারী কর্মীরা পতাকা বিক্রি করে ভাষা আন্দোলনের জন্য তহবিল গঠনের কাজ করেন। একই সঙ্গে ২১ ফেব্রম্নয়ারির কর্মসূচি সফল করার জন্য গণসংযোগের কাজ করেন। এভাবে পরিণতির দিকে এগোতে থাকে বাঙালির ভাষা আন্দোলন।

এদিকে ২১ ফেব্রম্নয়ারিতে ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪৪ ধারা জারি করে শাসক গোষ্ঠী। ২০ ফেব্রম্নয়ারি থেকে ঢাকায় সব ধরনের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ১৪৪ ধারা ভাঙতে প্রস্তুতি নিতে থাকে আন্দোলনকারীরা। চলে অর্থ সংগ্রহের কাজ।

ভাষাসৈনিক গাজীউল হক তার স্মৃতিকথনে উলেস্নখ করেন, 'ওই দুদিনে (১১ ও ১৩ ফেব্রম্নয়ারি) অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থাও করা গেল। দুদিন ঢাকার বুকে ও নারায়ণগঞ্জে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিপালিত হয়। অর্থ সংগ্রহই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। ওইদিন দুটিতে যে অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল তা যৎসামান্য, ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতিলগ্নে এটি একটি চমৎকার পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। এ পতাকা দিবসকে উপলক্ষ করে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে

জড়িয়ে পড়ে আরও নতুন নতুন কর্মী। সে সময় ৫শ' পোস্টার লেখানোর দায়িত্ব দেওয়া হলো নাদিরা বেগম এবং ডা. সাফিয়াকে। নাদিরা বেগম এবং ডা. সাফিয়া তাদের বান্ধবী ও অন্যান্য ছাত্রী নিয়ে পোস্টার লেখার ব্যবস্থা করেন।' বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের এ কঠিন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় ছাত্রদের আলোচনার কেন্দ্র ছিল ২১ ফেব্রম্নয়ারির সাধারণ ধর্মঘট সফল করা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে