সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁয় অনিরাপদ ঢাকা

আবাসিক এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ গজিয়ে ওঠায় তারা ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন ও রাজউকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে কোনো ফল পাননি
সাখাওয়াত হোসেন
  ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

রাজধানীর খিলগাঁও আবাসিক এলাকার সি বস্নকের ৫৮৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে একই ভবনে কাচ্চি ভাই, সিরাজ চুঁই গোস্ত ও সেলো নামের তিনটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। আবাসিক আদলে তৈরি পুরানো এ অ্যাপার্টমেন্টের বিভিন্ন পার্টিশন ওয়াল ভেঙে সম্প্রতি এর তিনটি ফ্লোর রেস্তোরাঁয় রূপান্তর করা হয়েছে। অপর একটি ফ্লোরে পেস্ন-জোন চালু রয়েছে। তবে এর সিঁড়ি আগের মতো অপ্রশস্তই রয়ে গেছে।

শুধু এ ভবনই নয়, খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টার থেকে তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট হয়ে চৌরাস্তা পর্যন্ত ১.৩ কিলোমিটার সড়কের দু'পাশে ছোট-বড় ১৪২টি রেস্তোরাঁ রয়েছে। যাদের অধিকাংশের ফায়ার লাইসেন্স নেই। এমনকি সামান্য অগ্নিনির্বাপনেরও কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। অথচ প্রতিটি রেস্তোরাঁতেই ঢাউস সাইজের ৭/৮টি করে গ্যাস সিলিন্ডার রেখে প্রতিনিয়ত রান্নার কাজ চালাচ্ছে।

কোনো আবাসিক ভবন ছয় তলার চেয়ে বেশি হলে সেখানে চলাচলের জন্য দুটি এবং বাণিজ্যিক ভবন হলে আরও বেশি সিঁড়ি রাখার আইন রয়েছে। এছাড়া সিঁড়ি নূ্যনতম ৩ মিটার হওয়া বাঞ্ছনীয়। থাকতে হবে জরুরি বহিনির্গমন পথ। অথচ খিলগাঁও এলাকার ৯০ শতাংশ রেস্তোরাঁতেই এসবের বালাই নেই। আবাসিক ভবনের দেয়াল ভেঙে বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ তৈরি করা হয়েছে। ফলে এসব ভবনে ২ মিটার কিংবা এর চেয়ে সামান্য প্রশস্ত একটি সিঁড়িই। বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁর উপরের অংশের ৪/৫টি ফ্লোরে এখনও আবাসিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধু খিলগাঁও-ই নয়, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরাসহ রাজধানীর অধিকাংশ এলাকাতেই এ ধরনের হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন ও রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় তারা দিব্যি চুটিয়ে ব্যবসা করছে। ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এসব রেস্তোরাঁ খোলা হলেও বেশিরভাগ মালিকই ফায়ার লাইসেন্স নেননি। কেউবা রেস্টুরেন্ট চালুর আগে ফায়ার লাইসেন্স নিলেও পরে আর

নবায়ন করেননি। আবার যেসব রেস্তোরাঁ ফায়ার লাইসেন্স নিয়েছে এবং বছর বছর নবায়ন করেছে, ওইসব রেস্তোরাঁও অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। গুটিকয়েক মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার ইস্টিংগুশার ছাড়া আর কিছুই নেই। এসব রেস্তোরাঁকে কীভাবে ফায়ার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে।

তবে রেস্তোরাঁ মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। তারা অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদি পরিদর্শনের নামে নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে থাকেন। এছাড়া কোনো কোনো রেস্তোরাঁকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে নোটিশ দেন। তবে এতে মাসোহারা টাকা বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনো অসুবিধা হয় না।

নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবাসিক এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ গজিয়ে ওঠায় তারা ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন ও রাজউকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে কোনো ফল পাননি। বরং কাউকে কাউকে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। অথচ এসব রেস্টুরেন্টের রান্নাঘর থেকে মাঝেমধ্যেই ছোটবড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় রেস্তোরাঁর নিজস্ব লোকজন এসব আগুন নেভালেও মাঝেমধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদেরও এ কাজে সহায়তার জন্য ছুটে আসতে হচ্ছে। অথচ দুর্ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই মালিক কর্তৃপক্ষ সবাইকে ম্যানেজ করে ওইসব রেস্তোরাঁ পুনরায় চালু করছেন।

সম্প্রতি খিলগাঁওয়ের শহীদ বাকী সড়কের একটি রেস্তোরাঁয় গভীর রাতে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তবে এ দুর্ঘটনার সময় রেস্টুরেন্টের ভেতরে কেউ না থাকায় প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদিও রেস্তোরাঁটি পুড়ে ভস্মীভূত হয়।

ওই রেস্তোরাঁর অগ্নিনির্বাপণে সহায়তাকারী ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী জানান, দুর্ঘটনার শিকার রেস্তোরাঁটির মধ্যে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল পাঁচটি। কিন্তু অগ্নিনির্বাপণ-ব্যবস্থা ছিল না। রেস্তোরাঁর ভেতরেই বদ্ধ একটি কক্ষে রান্নার কাজ চলে। পাশে চলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) আউটডোর ইউনিট। রান্না ঘরে শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হলেও পরে তা থেকে একাধিক গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি এসি এবং রেস্তোরাঁর কাঠের সাজসজ্জায় ছড়িয়ে পড়ে। ওই দমকল কর্মী জানান, রেস্তোরাঁটির দু'পাশে মাত্র আড়াই থেকে তিন ফুট দূরত্বে দুটি বহুতল আবাসিক ভবন রয়েছে। আগুন কোনোভাবে পাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হতো এবং এতে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, একশ্রেণির অতিলোভী বাড়ির মালিক নিজের বাসা-বাড়িতেই রেস্তোরাঁ ভাড়া দিচ্ছেন। অথচ তাদের ফায়ার লাইসেন্স কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কিনা এবং ওইসব রেস্তোরাঁর কিচেনের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা কতটা নিরাপদ তা খতিয়ে দেখছেন না। অনেক রেস্তোরাঁ মালিক আবাসিক ভবনের সামনের অংশ ভেঙে পুরোটাই কাঁচ দিয়ে আবদ্ধ করে ফেলছেন। এতে অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি আরও বাড়ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বরাবরের মতো উদাসীনই রয়ে গেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, রেস্তোরাঁ করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দরকার। কিন্তু ঢাকা মহানগরীতে যে বিপুল সংখ্যক রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে, এর এক-তৃতীয়াংশ ছাড়পত্র নিয়েছে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে ওই কর্মকর্তার দাবি, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রবিহীন রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তারা একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারেননি। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের কারণেই এ ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা যায় না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৪৬ জনের মৃতু্যর পর ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁর সংখ্যা কত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউই এর সঠিক জবাব দিতে পারেননি। এমনকি রেস্তোরাঁর মোট সংখ্যাও তাদের অজানা বলে অনেকে স্বীকার করেছেন।

তবে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের সিনিয়র স্টাফ অফিসার (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, শুধু রাজধানীতে নয়, ঢাকাসহ সারা দেশে আবাসিক, বাণিজ্যিকসহ নানা ভবনে গড়ে তোলা রেস্টুরেন্টের সঠিক সংখ্যা জানতে পরিদর্শনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভবন বৈধ কিন্তু আবাসিকের অনুমতি নিয়ে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলছে- এমন ভবনের পরিসংখ্যানও তৈরি করা হচ্ছে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা জানান, ঢাকা শহরে প্রায় পাঁচ হাজার রেস্টুরেন্ট ও খাবারের হোটেল রয়েছে। এর ৯৬ শতাংশই নিয়ম না মেনে কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিপজ্জনক পরিবেশে চলছে। এছাড়া আবাসিকের অনুমতি নিয়ে বাণিজ্যিক ভবন করা হয়েছে বহু জায়গায়। যেখানে অবৈধভাবে চালানো হচ্ছে রেস্তোরাঁসহ নানা বাণিজ্যিক কারবার। অগ্নিদুর্ঘটনা এবং এতে হতাহতের ঘটনা এড়াতে অবৈধ ও নিয়ম না মেনে চালানো এসব রেস্তোরাঁ বন্ধ করা জরুরি বলে মনে করেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রথম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। পরে ২০১৬ সালে তালিকাটি হালনাগাদ করে রাজউক। তাদের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা ৩২১টি। এর মধ্যে বিধিবিধান লঙ্ঘন করে নির্মিত ভবন রয়েছে ৫ হাজার। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৩২১টি ভবনের বেশিরভাগই রয়েছে পুরান ঢাকায়। তাদের হিসাবেও নেই ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ বা রেস্টুরেন্টের সংখ্যা।

২০১৯ সালের ২৫ জুন তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম পরিবেশবান্ধব আবাসিক এলাকা তৈরি করতে রাজধানী ঢাকার অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছিলেন। তখন ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে এক হাজার ৮১৮টি ভবন তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। যদিও এসব ভবনের ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ঢাকায় অসংখ্য আবাসিক ভবনের অনুমতি নিয়ে বাণিজ্যিক করা হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে। যথাযথ প্রক্রিয়া ও ফায়ার সেফটি রীতি অনুসরণ না করে গড়ে তোলা হোটেল রেস্তোরাঁর ব্যাপারে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তার দাবি, ঢাকাসহ সারা দেশের অগ্নিঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলোর হোটেল রেস্তোরাঁর তালিকা করা হচ্ছে। শিগগিরই সে তালিকা ধরে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা জানান, শুধু ফায়ারের লাইসেন্স কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে কিংবা বাণিজ্যিক এলাকায় রেস্তোরাঁ খুললেই ঢাকাকে নিরাপদ করা যাবে না। ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ সরাতে হলে আরও অনেক দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, কোনো বহুতল ভবনের রেস্তোরাঁর প্রবেশদ্বার নূ্যনতম তিন মিটার হতে হবে। এছাড়া রেস্তোরাঁ ভবনে পর্যাপ্ত সিঁড়ি ও অ্যালার্ম সিস্টেম থাকা জরুরি। কারণ অ্যালার্ম সিস্টেম যদি কার্যকর থাকে, তাহলে কোথাও আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে (ধোঁয়া হলেই) এটি তা চিহ্নিত করতে পারে এবং বিকট শব্দ করে। এতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে আতঙ্কিত মানুষ দ্রম্নত সেখান থেকে বের হতে পারবে। এতে প্রাণহানি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

যেসব বহুতল ভবনে একাধিক বা বড় আকারের রেস্তোরাঁ রয়েছে ওইসব ভবনে জরুরি বহির্গমন পথ থাকা বাঞ্ছনীয়। যাতে জরুরি অবস্থায় আত্মরক্ষার জন্য ওই পথ দিয়ে বের হওয়া যায়।

এই বিশেষায়িত সিঁড়ি বা জরুরি বহির্গমন পথ এমন স্থানে করতে হবে, যেন ভবনে আগুন লাগলে সেখানে কোনো আগুন এবং ধোঁয়া প্রবেশ করতে না পারে।

অন্যদিকে রেস্তোরাঁ ভবনটি কাঁচঘেরা আবদ্ধ জায়গায় হলেও তার কোনো না কোনো ধরনের উন্মুক্ত ব্যবস্থাপনা (জরুরি বহির্গমন পথ) থাকতে হবে। ভবনে এই ব্যবস্থাপনা না থাকলে ছোটবড় যে কোনো দুর্ঘটনায় ধোঁয়ার কারণেই প্রাণহানির ঘটনা বাড়তে পারে।

রেস্তোরাঁর অগ্নিঝুঁকি কমাতে ভবনে অন্যান্য অনুষঙ্গের সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার বা ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকা জরুরি। যাতে জরুরি মুহূর্তে তা ব্যবহার করে দ্রম্নত আগুন নিভিয়ে ফেলা যায়। এছাড়া আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট বা কল-কারখানা রয়েছে এ ধরনের ভবনে রেস্তোরাঁ না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে