শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আসছেন আজ

সম্পর্কের অচলাবস্থা নিরসনের আশা ঢাকার
যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আসছেন আজ
বিক্রম মিশ্রি

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে (এফওসি) অংশ নিতে আজ ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। গত শুক্রবার নয়াদিলিস্নতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

তিনি বলেন, ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা করবেন। পাশাপাশি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও তার সৌজন্য সাক্ষাৎ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা

সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এই প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে। এবারের এই বৈঠকে ভারতের অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু করা, ভিসা ব্যবস্থা সহজীকরণ, সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমন এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবারের বৈঠকটিকে। সবশেষ ২০২৩ সালের নভেম্বরে নয়াদিলিস্নতে দুই দেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনসাল্টেশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সম্পর্কের অচলাবস্থা নিরসনের আশা ঢাকার

এদিকে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে চলমান সম্পর্কে অচলাবস্থা নিরসনের আশা করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ৪০তম সার্ক চার্টার দিবস উপলক্ষে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) আয়োজিত 'দ্য সার্ক- পিপল অব সাউথ এশিয়ে ক্রেভ ফর' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত যদি আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিতে পারতো তাহলে তাদেরও সুবিধা হতো আমাদের সুবিধা হতো কিন্তু সেটা দুঃখজনকভাবে হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান খুবই ভালো কিন্তু গত দুই-তিন মাসে যে ব্যবসায়িক মন্দা যাচ্ছে সেটা কি শুধু বাংলাদেশকে ইফেক্ট করছে!

তিনি বলেন, এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশকে ইফেক্ট করছে না, ভারতকেও ইফেক্ট করছে। পরিমাণটা এত বেশি না তবে ইফেক্ট কিন্তু পড়ছে। কলকাতার অর্থনীতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা আশা করি এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবো। অচল অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগাযোগ স্থাপন। আজ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করতে। এটা স্ট্যান্ডিং মেকানিজম অস্বাভাবিক কিছু না। প্রতি বছর আমাদের একজন যান ওপাশে পরের বছর ওপাশ থেকে একজন আসেন। এটাকে কনসাল্টেশন বলা হয়। এটা দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে। আমি আশা করব তারা একটা ফলপ্রসূ আলোচনা করবেন।'

তিনি বলেন, 'আমি এর আগেও বলেছি, কোনো সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে স্বীকার করতে হবে যে সমস্যা আছে। আমাদের এটিও স্বীকার করতে হবে যে পাঁচ আগস্টের আগে এবং পরে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের একটি গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদের চেষ্টা করতে হবে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। সে হিসেবে আমি প্রস্তাব করেছিলাম যে আমাদের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কনসালটেশন আছে সেটি শুরু করব।'

উপদেষ্টা বলেন, 'সার্ক শক্তিশালী হোক এ বিষয়ে প্রফেসর ড. ইউনূস অত্যন্ত পজিটিভ এবং আমরা আবার আঞ্চলিকভাবে একটি স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরে যাই। এটা হচ্ছে না, এটা আমাদের শুরু করতে হবে। শুরু করলে একবার আমরা সবকিছু করে ফেলতে পারব, সেটি চিন্তা না করাই ভালো।'

তিনি বলেন, দেশের সরকার অস্থায়ী হতে পারে কিন্তু দেশ ও স্বার্থ স্থায়ী। আমি নিশ্চিত যে স্বাভাবিকভাবে সার্ক নিয়ে একটি পজিটিভ মনোভাব মানুষের মধ্যে আছে। সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক শুরু হোক যেটি গত ১০ বছরে হয়নি।'

আঞ্চলিক দারিদ্র্য দূরীকরণে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, 'আমরা যদি পরস্পরকে সহযোগিতা করি তাহলে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর করা যাবে। দারিদ্র্য থেকে সবাইকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আমরা কিছুটা সাফল্য অর্জন করিনি তা কিন্তু না, আরও কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হবে সেজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। সার্ককে আমাদের কর্মক্ষমতা পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।'

অনুষ্ঠানে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরামের (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) সভাপতি নাসির আল মামুনের সভাপতিত্বে, সেমিনার অর্গানাইজিং কমিটির কনভেইনার রফিকুল ইসলাম আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

এছাড়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তাফা কামাল মজুমদার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে