রোববার, ০৪ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২
রাজনীতিবিদদের উপদেষ্টা রিজওয়ানা

৫৩ বছরেও সংস্কার বাস্তবায়ন হয়নি কেন?

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
৫৩ বছরেও সংস্কার বাস্তবায়ন হয়নি কেন?
সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান -যাযাদি

দেশের রাজনৈতিক সংস্কারে অগ্রগতির অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। কয়েক দশকের স্থবিরতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর জবাবদিহি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, 'যদি রাজনীতিবিদরাই সংস্কার করেন, তাহলে গত ৫৩ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি কেন?' শুক্রবার রাজধানীতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক ও চালক পুনঃপ্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেছেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শিগগিরই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। এটি শব্দদূষণ প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আইনগত ব্যবস্থা দৃঢ় করবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে। শিগগিরই আইনটি প্রকাশ করা হবে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে অস্থিরতার ছায়া দূর করার তাগিদ : বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর রাজনৈতিক অস্থিরতার যে ছায়া পড়েছিল, তা দূর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। দুই দেশের মধ্যে একতাবদ্ধ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর যে ছায়া পড়েছে, দুই দেশের স্বার্থেই তা দূর করতে হবে।'

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণঅভু্যত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্য স্বীকার করে রিজওয়ানা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে এই ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে আরও বলেন, 'ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রভাব আমরা অস্বীকার করতে পারি না।'

'খেলার মাঠে প্রশিক্ষণ নয়' :এদিকে খেলার মাঠকে যাতে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার না করা হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, 'পার্ক মানে পার্কই। খেলার মাঠ মানে খেলার মাঠই। সেখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে খেলতে পারবে। সেখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা দরকার নেই। যেমনটা ধানমন্ডিতে করা হয়েছে।

'সেখানে সব কটি মাঠ প্রাইভেট ক্লাবকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ক্লাবগুলো মুখে বলে, সকলের অ্যাকসেস আছে। আদতে সকলের অ্যাকসেস সেখানে নেই। আর এগুলা টাকা দিয়ে অ্যাকসেস পাওয়া যাবে কেন? এগুলাতো সবার জন্য ফ্রি থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।'

শুক্রবার গুলশান সোসাইটি মসজিদের সামনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি ও গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, পার্ক-খেলার মাঠে সবার প্রবেশাধিকার আছে। সেখানে কোনো রকমের অসামাজিক কাজ যাতে না ঘটে, সেটার জন্যও ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে সেখানে প্রবেশে বাধার দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ঢাকার খালগুলোকে বাঁচানোর জন্য এনজিওগুলোর কাছ থেকে পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। একটি ব্যয় সাশ্রয় পরিকল্পনা এ মাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে।

রিজওয়ানা বলেন, 'সরকারের পক্ষে ধান লাগানো সম্ভব না, এটা কৃষককেই করতে হবে। সরকারের পক্ষে মাছ ধরা সম্ভব নয়, এটা জেলেকেই করতে হবে।

'গুলশানের যে বাসিন্দা, তাদেরকেই পার্ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এই ব্যবস্থাপনায় কোনো গোষ্ঠীকে উপকৃত করে অন্য সকলের অভিগম্যতা বা অ্যাকসেস বন্ধ করে না। এটা পাবলিকের টাকায় করতে হবে।'

তিনি বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ডিসেম্বরেই বিধিমালা চূড়ান্ত করা হবে। এতে বিধিমালায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ক্ষমতা দেওয়া হবে।

'শুধু জেল-জরিমানা করলেই হবে না, মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ আনতে হবে।'

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, 'শব্দদূষণ আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এটি নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা দরকার।'

গাড়ি চালকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'ভাবুন হর্ন নষ্ট, বাজাবেন না। গাড়ির গতি কমালে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কমবে।'

ঢাকার ১০টি এলাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে রিজওয়ানা বলেন, সবাই সচেতন হলে শব্দদূষণমুক্ত একটি বাসযোগ্য শহর গড়া সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে