পাওনা আদায়ের দাবিতে ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুলস্নাহপুর সড়কে প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরোধের পর জলকামানের মুখে সড়ক ছেড়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে জলকামান ব্যবহার করে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এর আগে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের নরসিংহপুর এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শারমিন গ্রম্নপের চাকরিচু্যত শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানান, কারখানায় খাবার নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। পরে সেই ঝামেলা আন্দোলনে রূপ নেয়। এ ঘটনায় ৪৩০ জন শ্রমিককে পাওনা না দিয়ে চাকরিচু্যত করা হয়। বিষয়টি সমাধানে প্রথমে গ্রামীণ কনভেনশন সেন্টার, পরে রাজ পার্কে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় সোমবার পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। তবে দুপুর আড়াইটার দিকে জলকামান ব্যবহার করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জলকামানের মুখে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। অবশেষে সড়ক ছেড়ে দেন তারা।
শিল্প পুলিশ জানায়, সম্প্রতি মালিকপক্ষের ছেলের বিয়ে উপলক্ষে কারখানায় শ্রমিকদের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে মালিকপক্ষ। খাবার খাওয়াকে কেন্দ্র করে কারখানার ভেতরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মালিকপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৩ ধারায় বেশ কিছু শ্রমিককে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এবং পরে তদন্ত করে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পায় তাদের চাকরিচু্যত করে। চাকরিচু্যত ৪৩০ জন শ্রমিক সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, 'সকাল থেকে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করেন। বর্তমানে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।'
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আশুলিয়া থানার পরিদর্শক ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, 'শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছে। সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।'
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে গতকাল ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী পাওনাদি পরিশোধে রাজি নয় মালিকপক্ষ। ফলে রোববার কোনো সমাধান হয়নি। তাই আজ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। আজ আবার শ্রমিক প্রতিনিধি, মালিকপক্ষ, পুলিশ ও বিজিএমইএ'র আলোচনা চলছে। বিষয়টি দ্রম্নত সমাধান হবে বলে আশা করছি।'