জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাইদের পরিবারের পক্ষ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার ট্রাইবু্যনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাইবু্যনালে অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'আবু সাঈদের পরিবার রংপুরে একটি মামলা করেছে। আমরা আগেও বলেছি- লোকাল কোর্টে যতই মামলা হোক, যেহেতু এটা ক্রাইমস অ্যাগেনস্ট হিউম্যানিটি (মানবতাবিরোধী অপরাধ), তাই এই অভিযোগ যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালে আসে তাহলে সেটা প্রপার আবেদন হবে।'
তিনি বলেন, 'সেই প্রেক্ষিতে ওনারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাইবু্যনালে এসেছেন। তারা আজকে সেই ঘটনাগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন এবং আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। অভিযোগ দিতে আবু সাইদের বড় ভাই রমজান ও তার সঙ্গে ঘটনার সময় যেসব সহযোদ্ধা ছিলেন, তারা এসেছেন। তারা ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। '
সোমবার কোর্টে প্রসিকিউটর টিমের পক্ষ থেকে তিনটি শুনানির আবেদন করা হয় উলেস্নখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, 'ডিজিটাল কোনো তথ্যউপাত্ত কোর্টে হাজির করার আগে এটার একটা সার্টিফিকেশনের প্রয়োজন হয়। আর এই সার্টিফায়েড অথরিটি হচ্ছে আমাদের সিআইডি। তারা এটা যাচাই-বাছাই করবে যে এটা সঠিক কি না অথবা এটা ভুয়া কি না অথবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি (এআই) দিয়ে তৈরি কি না। যাচাই-বাছাই ছাড়া এসব তথ্য-উপাত্ত কোর্টে জমা দেওয়া যায় না। এটা আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশের উভয় আইনেই আছে। জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিষয়ে আমরা ডিজিটাল অনেক এভিডেন্স পেয়েছি। এখানে কল রেকর্ড, ভিডিওসহ অনেক ডিজিটাল এভিডেন্স আছে। এই ডিজিটাল এভিডেন্সগুলোকে ফরেনসিক চেক করার জন্য সিআইডির কাছে পাঠাতে আদালতের কাছে আবেদন করেছিলাম।'
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'পাশাপাশি সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা বা অসহযোগিতার বিষয়ে আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিচ্ছি না। কারণ এটা চলমান একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, তথ্য সংগ্রহ চলছে। কারো বিরুদ্ধে বেস্নইম করার মতো অবস্থায় আমরা যাইনি। কোনো সংস্থা যদি তদন্তে সহযোগিতা না করে, সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পদ্ধতি আছে।'
এর আগে শুনানি শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, 'আজকে ট্রাইবু্যনালে তিনটি আবেদনের শুনানি হয়েছে। এর প্রথমটি গাজীপুরে এক চায়ের দোকানে থেকে একজনকে টেনে হিঁচড়ে বের করে এবং পেছন থেকে একজন পুলিশ তাকে সরাসরি শট গান দিয়ে গুলি করে; জায়গাতেই সেই ব্যক্তি নিহত হয়। পরবর্তীতে সেই কনস্টেবল আকরামকে গ্রেপ্তার করা হয়।