রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

১৬ বছর পর কারামুক্ত ১৬৮ বিডিআর সদস্য

কারাফটকে আবেগঘন পরিবেশ
কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুর প্রতিনিধি
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
১৬ বছর পর কারামুক্ত ১৬৮ বিডিআর সদস্য
১৬ বছর পর কারামুক্ত ১৬৮ বিডিআর সদস্য কারাফটকে আবেগঘন পরিবেশ ম কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুর প্রতিনিধি পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলায় কারাগার থেকে বিডিআরের ৪১ জওয়ান কারামুক্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কারাগারের সামনে বিডিআর সদস্যদের স্বজনরা তাদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলার জামিনপ্রাপ্তরা একে একে বের হতে থাকেন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই সদস্যরা হত্যা মামলায় খালাস পেলেও বিস্ফোরক মামলার কারণে কারাগারে আটকে ছিলেন প্রায় ১৬ বছর ধরে। গত রোববার ঢাকার বিশেষ ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর মঙ্গলবার জামিনপ্রাপ্ত ১৬৮ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বুধবার তাদের জামিননামা দাখিল করা হয়। এরপর তাদের জামিন সংক্রান্ত নথিপত্র কারাগারে গেলে শুরু হয় মুক্তির প্রস্তুতি। কেরানীগঞ্জ কারাগারের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিডিআর সদস্যদের স্বজনরা ফুল ও ফুলের মালা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর ১টা থেকে যখন জামিনপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যরা কারামুক্ত হয়ে বের হয়ে আসছিলেন তখন তাদের দেখে স্বজনরা দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। জামিনপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যরা এবং তাদের স্বজনরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্ত্রী-সন্তান কিংবা স্বজনদের জড়িয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বিডিআর সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সঙ্গে স্বজনরাও জামিনপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যদের বুকে জড়িয়ে ধরে ৬ কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। কারাগার থেকে বের হয়ে বিডিআর সদস্যরা বলেন, বিনা দোষে জীবন থেকে আমাদের ১৬টি বছর চলে গেছে। আমাদের কোনো দোষ ছিল না। অন্যায়ভাবে ১৬টি বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। এখন মুক্ত আকাশে বের হয়ে আমাদের ভালো লাগছে। কারামুক্ত হয়ে আল-আমিন নামে এক বিডিআর সদস্য বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। আমাদের বিনা দোষে এতগুলো বছর ধরে কারাগারে বন্দি করে রেখে দেওয়া হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা কারামুক্ত হয়েছি। তবে এখনো আমাদের যেসব ভাই বিনা দোষে কারাগারে রয়েছেন তাদের জন্য সরকার দ্রম্নত মুক্ত করার ব্যবস্থা করুক। স্বজনদের জড়িয়ে কান্নারত অবস্থায় আরেক বিডিআর সদস্য বলেন, আমাদের জীবন তো শেষ, আমাদের জীবনের ১৬টি বছর কারাগারে কেটেছে। আমরা কোনো দোষ করিনি। অন্যায়ভাবে কারাগারে রাখা হয়। এখন পরিবার পরিজনের কাছে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। এ সময় এক বিডিআর সদস্যের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে আমি ফিরে পেয়েছি। কোনোদিন ভাবিনি তাকে ফিরে পাবো। এতটা দিন কারাগারে তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। এছাড়া কারামুক্ত বিডিআর সদস্যদের বরণ করে নিতে আসেন তাদের সন্তানরাও। সন্তানরা বাবাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। আবার অনেক সন্তান তাদের বাবাকে ফুলের মালা কিংবা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নিচ্ছিলেন। কাশিমপুর থেকে মুক্ত ১২৬ জওয়ান এদিকে. পিলখানা হত্যাকান্ডে দায়ের হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় প্রায় ১৬ বছর ধরে আটক ১২৭ জন বিডিআর জওয়ান গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে তারা মুক্তি পান বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুলস্নাহ আল মামুন। সিনিয়র জেল সুপার মামুন জানান, ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১২৭ জন জওয়ানের মুক্তির আদেশ বৃহস্পতিবার ভোরে কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে পর্যায়ক্রমে তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। এ বিষয়ে কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর থেকে সাবেক বিডিআরের সদস্যদের কারামুক্তি শুরু হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে ৮৯ জন ও কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১২ জনসহ মোট ১৬৮ জন সাবেক বিডিআর সদস্য আজ পর্যায়ক্রমে জামিনে মুক্তি পেলো। এর আগে, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি। বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকান্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে যায় ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের। অন্যদিকে হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাই কোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃতু্যদন্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হাই কোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাই কোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়। ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্র্ব‌তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি জোরালো হয়। এরপর ওই হত্যাকান্ড পুনঃতদন্তে গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে দেয় সরকার। কমিশনকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।##

পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলায় কারাগার থেকে বিডিআরের ৪১ জওয়ান কারামুক্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কারাগারের সামনে বিডিআর সদস্যদের স্বজনরা তাদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলার জামিনপ্রাপ্তরা একে একে বের হতে থাকেন।

সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই সদস্যরা হত্যা মামলায় খালাস পেলেও বিস্ফোরক মামলার কারণে কারাগারে আটকে ছিলেন প্রায় ১৬ বছর ধরে। গত রোববার ঢাকার বিশেষ ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর মঙ্গলবার জামিনপ্রাপ্ত ১৬৮ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বুধবার তাদের জামিননামা দাখিল করা হয়। এরপর তাদের জামিন সংক্রান্ত নথিপত্র কারাগারে গেলে শুরু হয় মুক্তির প্রস্তুতি।

কেরানীগঞ্জ কারাগারের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিডিআর সদস্যদের স্বজনরা ফুল ও ফুলের মালা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর ১টা থেকে যখন জামিনপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যরা কারামুক্ত হয়ে বের হয়ে আসছিলেন তখন তাদের দেখে স্বজনরা দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন।

এ সময় এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। জামিনপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যরা এবং তাদের স্বজনরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্ত্রী-সন্তান কিংবা স্বজনদের জড়িয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বিডিআর সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সঙ্গে স্বজনরাও জামিনপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যদের বুকে জড়িয়ে ধরে ৬

কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন।

কারাগার থেকে বের হয়ে বিডিআর সদস্যরা বলেন, বিনা দোষে জীবন থেকে আমাদের ১৬টি বছর চলে গেছে। আমাদের কোনো দোষ ছিল না। অন্যায়ভাবে ১৬টি বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। এখন মুক্ত আকাশে বের হয়ে আমাদের ভালো লাগছে।

কারামুক্ত হয়ে আল-আমিন নামে এক বিডিআর সদস্য বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। আমাদের বিনা দোষে এতগুলো বছর ধরে কারাগারে বন্দি করে রেখে দেওয়া হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা কারামুক্ত হয়েছি। তবে এখনো আমাদের যেসব ভাই বিনা দোষে কারাগারে রয়েছেন তাদের জন্য সরকার দ্রম্নত মুক্ত করার ব্যবস্থা করুক।

স্বজনদের জড়িয়ে কান্নারত অবস্থায় আরেক বিডিআর সদস্য বলেন, আমাদের জীবন তো শেষ, আমাদের জীবনের ১৬টি বছর কারাগারে কেটেছে। আমরা কোনো দোষ করিনি। অন্যায়ভাবে কারাগারে রাখা হয়। এখন পরিবার পরিজনের কাছে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত।

এ সময় এক বিডিআর সদস্যের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে আমি ফিরে পেয়েছি। কোনোদিন ভাবিনি তাকে ফিরে পাবো। এতটা দিন কারাগারে তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল।

এছাড়া কারামুক্ত বিডিআর সদস্যদের বরণ করে নিতে আসেন তাদের সন্তানরাও। সন্তানরা বাবাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। আবার অনেক সন্তান তাদের বাবাকে ফুলের মালা কিংবা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নিচ্ছিলেন।

কাশিমপুর থেকে মুক্ত ১২৬ জওয়ান

এদিকে. পিলখানা হত্যাকান্ডে দায়ের হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় প্রায় ১৬ বছর ধরে আটক ১২৭ জন বিডিআর জওয়ান গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে তারা মুক্তি পান বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুলস্নাহ আল মামুন।

সিনিয়র জেল সুপার মামুন জানান, ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১২৭ জন জওয়ানের মুক্তির আদেশ বৃহস্পতিবার ভোরে কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে পর্যায়ক্রমে তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।

এ বিষয়ে কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর থেকে সাবেক বিডিআরের সদস্যদের কারামুক্তি শুরু হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে ৮৯ জন ও কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১২ জনসহ মোট ১৬৮ জন সাবেক বিডিআর সদস্য আজ পর্যায়ক্রমে জামিনে মুক্তি পেলো।

এর আগে, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।

সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।

বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকান্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে যায় ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।

অন্যদিকে হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাই কোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃতু্যদন্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।

হাই কোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।

অন্যদিকে হাই কোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্র্ব‌তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি জোরালো হয়। এরপর ওই হত্যাকান্ড পুনঃতদন্তে গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে দেয় সরকার। কমিশনকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে