মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন

গর্ভাবস্থায় নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় সক্রিয় মায়েদের পরিবর্তিত শরীরের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া সহজ হয়। তাই, যতক্ষণ আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, ততক্ষণ চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক দৈনিক শারীরিক ব্যায়াম চালিয়ে যেতে বাধা নেই। তবে নিজেকে কখনোই ক্লান্ত করবেন না
  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন
গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন

মা হওয়া একটি রোমাঞ্চকর এবং ফলপ্রসূ অভিজ্ঞতা। গর্ভকালীন সেবা নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি অপরিহার্য অংশ। গর্ভাবস্থায় মায়েদের প্রায়শই হাড়, মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি, স্নায়ু সংক্রান্ত জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। ফলে, একজন মা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েন। ফলশ্রম্নতিতে, মা ও অনাগত শিশুকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া, গর্ভাবস্থায় প্রয়োজন অনুযায়ী সীমিত সংখ্যক ওষুধের ব্যবহার করতে হয়। এই অবস্থায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি।

গর্ভাবস্থায় সাধারণত যেসব বিষয়ে পুনর্বাসন চিকিৎসা আলোকপাত করা হয়, সেগুলো হলো-

প্রথম তিন মাস:

পিঠ, কোমর অথবা পা ব্যথা হওয়া।

ক্লান্তি বোধ করা।

গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় তিন মাসে-

হাত এবং আঙুলে ঝিঁ ঝিঁ ধরা, অবশ হয়ে যাওয়া।

অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।

অস্বস্তি অনুভব করা।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম তিনমাসের সমস্যা, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় তিন মাসেও অব্যাহত থাকতে পারে।

কারণ

* হরমোনজনিত।

* মেরুদন্ডের বক্রতার পরিবর্তন।

*শারীরিক স্থূলতা।

*নার্ভের ওপর অতিরিক্ত চাপ।

গর্ভাবস্থায় রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসার উদ্দেশ্য :

১. মায়েদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো।

২) মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।

৩) গর্ভকালীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁঁকি কমানো।

৪) গর্ভকালীন স্বাস্থ্য জটিলতার চিকিৎসা করা।

৫) নিরাপদ মাতৃত্ব।

৬) প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী জটিলতা হ্রাস করা।

গর্ভবতী মহিলার পুনর্বাসন চিকিৎসা

চিকিৎসক রোগ নির্ণয়ের জন্য অনেকটাই রোগীর উপসর্গ অনুযায়ী ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল থাকেন। তবে, সামান্য প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজনও হতে পারে।

রোগীর কাউন্সেলিং ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

ওষুধ

গর্ভাবস্থায় ওষুধের ব্যবহার সীমিত। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক আয়রন, ফলিক এসিড, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া যাবে।

শারীরিক অনুশীলন

গর্ভাবস্থায় নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় সক্রিয় মায়েদের পরিবর্তিত শরীরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া সহজ হয়। তাই, যতক্ষণ আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, ততক্ষণ চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক দৈনিক শারীরিক ব্যায়াম চালিয়ে যেতে বাধা নেই। তবে, নিজেকে কখনোই ক্লান্ত করবেন না। স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি দৈনিক ২০-৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন হাঁটার চেষ্টা করুন। তাছাড়া, মায়ের নিয়মিত ব্যায়াম বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়।

খাবার

*প্রতিবেলা গর্ভ পূর্ববর্তী খাবারের চেয়ে নিয়মিত একটু বেশি করে খাবার খেতে হবে।

*স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার, সবুজ শাক-সবজি ও ফল খেতে হবে।

*ভিটামিন সি'যুক্ত খাবার খেতে হবে।

*আয়োডিন যুক্ত লবণ খেতে হবে।

দৈনন্দিন কাজ

*পর্যাপ্ত বিশ্রাম (দুপুরের খাবারের পর ২ ঘণ্টা এবং

রাতে ৬-৮ ঘণ্টা) নিতে হবে।

*শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে হবে।

*ভারী কাজ নিষেধ।

*পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

*সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলতে হবে।

*একপাশে ফিরে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। *প্রয়োজনে, দুই হাঁটুর মাঝখানে একটি ছোট বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।

সতর্কতা

*চলাফেরায় তাড়াহুড়া করবেন না।

*তীব্র মাত্রার কোনো শারীরিক অনুশীলন করবেন না।

* কোনোক্রমেই পেটে ঠান্ডা বা গরম সেঁক অথবা কোনো ম্যাসাজ করবেন না।

*হাই হিল জুতা পরবেন না। প্রেগনেন্সির সময় কম হিলের আরামদায়ক জুতা পরুন।

*যে কোন বিপদ চিহ্ন দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে