বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লংগদুতে পিলার ভেঙে ঝুলছে সেতু:ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
  ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০
রাঙামাটির লংগদুতে সংস্কারের অভাবে নিচের অংশে পিলার ও উপরের রেলিং ভেঙে জরাজীর্ণ হয়ে পড়া সেতু -যাযাদি

একটি সেতুর প্রধান অংশ হলো পিলার। পিলারের কাজ সেতুকে ঠেক দিয়ে রাখা। যানবাহনের চাপ সামলানো। কিন্তু সেই সেতুর পিলারই যদি না থাকে তা হলে পরিস্থিতি কি দাঁড়ায়! ভাবতেই আতঙ্কে বুক কেঁপে ওঠে। কিন্তু বাস্তবে এমনই এক সেতুর খোঁজ পাওয়া গেছে। সেই সেতুটি রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী, বগাচতর, ভাসান্যদম ও বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলীতে অবস্থিত।

জানা গেছে, লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সেতুটি এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সেতুটির নিচের অংশে পিলার ভেঙে ঝুলছে সেতুর সঙ্গে। সেতুর উপরের অংশে দু'পাশের রেলিংগুলো ভেঙে পড়েছে আরও একযুগ আগেই। কর্তৃপক্ষ সেতুটির ওপর দিয়ে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েই নিজেদের দায় সেরেছেন। অথচ গত ৭ নভেম্বর পাশের জেলা খাগড়াছড়িতে একসঙ্গে ৪২টি সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোনো এক রহস্যজনক কারণে সেতুটি সরকারের নজরে আসেনি। যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে সেতুটি, হারিয়ে যেতে পারে নদীগর্ভে। এতে বন্ধ হয়ে যাবে লাখো মানুষের চলাচল।

সূত্রমতে, দীর্ঘদিন ধরে ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। মালামাল পারাপার করতে না পেরে গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও। এই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও করছে যাতায়াত। পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছে গবাদিপশুর মালিকরাও। রেলিং না থাকায় সেতু থেকে পড়ে হতাহত হচ্ছে গবাদিপশু। এসব ভোগান্তির কারণে গাড়িচালকরাও থাকেন আতঙ্কে। স্থানীয়দের দাবি নড়বড়ে এই সেতুতে যেহেতু সাময়িকভাবে ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি করে যান চলাচল চালু রাখতে হবে এবং দ্রম্নত সময়ের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, সেতুটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই অবস্থায় পড়ে আছে। বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে বহুবার। কিন্তু কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। ৭০ মিটারে এ সেতুর জরাজীর্ণ অবস্থার জন্য আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। দ্রম্নত সময়ের মধ্যে নতুন সেতু চাই।

বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার জানান, একটি মাত্র সেতুর জন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে লাখো মানুষের। প্রতিদিন কয়েক টন কাঁচামাল এই রাস্তা দিয়ে পারাপার করা হয়। বর্তমানে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে প্রায় চার ইউনিয়নের দেড় লাখেরও অধিক মানুষ। তিনি বলেন ইতিমধ্যে সেতুটি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবারও তদবির করছি।

সেতুটির সব তথ্য নথিভুক্ত করে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। আশা করি শিগগিরই সেতুটি অনুমোদন হবে বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আলম। তিনি আরও জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে কোনো প্রকল্প থেকে সেতুটি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে দ্রম্নত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে