খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার চার ইউনিয়নে চলতি বছরের আগস্ট মাসের বরাদ্দকৃত ৩৪ দশমিক ৬৪০ মেট্রিক টন ওএমএস খাদ্যশষ্যের চাল মধ্যে প্রায় সাড়ে ৬ টন এখনো বিতরণ করা হয়নি। এসব চাল সোমবার বিতরণ করার তারিখ নির্ধারণ ছিল। এর আগেই গত শনিবার সন্ধ্যায় এক জিপ চাল কালোবাজারে বিক্রির পাঁয়তারা করা হচ্ছিল। এ সময় স্থানীয়রা তা জব্দ করে পুলিশে সোর্পদ করেছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এসব চাল ওএমএসের খাদ্যশস্য বলে নিশ্চিত হয়েছে। পরে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও তদারকি কর্মকর্তা কামরুল আলম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রক্তিম চৌধুরী। জব্দ করা ৫০ কেজি ওজনের ৯০ বস্তায় চাল পুলিশ হেফাজতে। বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন টিসিবি ডিলার।
পুলিশ, টিসিবি ডিলার ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলার ২ নম্বর বাটনাতলী, ৩ নম্বর যোগ্যাছোলা ও ৪ নম্বর তিনটহরী ইউনিয়নে বরাদ্দ করা গত আগস্ট মাসের ১৭ দশমিক ৩২০ টন চাল খাদ্যগুদাম থেকে গত ২৩ থেকে ২৬ আগস্ট তারিখে উত্তোলন করেন ওএমএস ডিলার মাসুদ হোসেন বাপ্পি। উত্তোলিত খাদ্যশস্যের মধ্যে সাড়ে ৬ টন এখনো বিতরণ বাকি। যা সোমবার থেকে বিতরণের তারিখ নির্ধারিত। এর আগেই গত শনিবার সন্ধ্যায় জীপ ভর্তি ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রির সময় তা জনতার হাতে জব্দ হয়!
মানিকছড়ি বাজারের আকাশপরীস্থ 'রহমানিয়া অটো রাইসমিলে' জিীপ ভর্তি চাল আনলোড করার সময় স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ এসে চালগুলো থানায় নেয়। এরপর গাড়ির চালক ও অন্যান্য সূত্র এবং ওএমএস ডিলার ও উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-গ্রন্থাগার বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ হোসেন বাপ্পির গুদাম পর্যবেক্ষণ করে জব্দ চাল ওএমএসের খাদ্যশস্য বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। পরে বিষয়টি ওএমএস, টিসিবি বিতরণ ও বরাদ্দ কমিটির উপজেলা সভাপতি ইউএনও রক্তিম চৌধুরীকে জানান। ইউএনও থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নির্দেশ দেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কামরুল আলমকে।
থানার ওসি আনচারুল করিম বলেন, এ বিষয়ে ইউএনও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জব্দ চাল পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এদিকে টিসিবি ডিলার মামুন আকবর বলেন, পুলিশ মাধ্যমে ওএমএস চাল কালোবাজারে বিক্রির সময় জব্দের কথা শুনে বিতরণ কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন।
এদিকে ওএমএস ডিলার মাসুদ হোসেন বাপ্পি জানান, 'টিসিবি ডিলারের চাহিদা অনুযায়ী আমি শনিবার জিপে এসব চাল সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে (বাটনাতলী) পাঠাই। পথে চালগুলো কে বা কারা বা কিভাবে অটো রাইসমিলে নিল, তা আমি মোটেও জানি না। এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ।'
ইউএনও রক্তিম চৌধুরী বলেন, 'উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'