ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অপরাধে শিক্ষক কারাগারে গেছেন। ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রী সদরপুর থানায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর থেকে ওই বিদ্যালয়ের খন্ডকালিন গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক রইচ উদ্দিন শিকদার পলাতক ছিলেন। শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত মধ্যরাতে শিক্ষক রইচ উদ্দিন শিকদার কে সদরপুরের পার্শ্ববর্তী চরভদ্রাসন থানা এলাকার চরসুলতানপুর গ্রামে তার স্ত্রীর বোনের বাড়ি থেকে আটক করে সদরপুর থানা পুলিশ। অভিযানের নেতৃত্ব দেন সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নাজমুল হাসান।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে সদরপুর থানায় “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে ওই শিক্ষক কে সদরপুর থানা পুলিশ ফরিদপুর কোর্ট আদালতে সোপর্দ করে।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, শিক্ষক রইচ উদ্দিন তাকে নিয়মিত কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলতেন। গত ২৯ এপ্রিল রইচ তাকে অন্তর্বাস কেনার জন্য টাকা নিতে বলেন। সে টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর আগেও রইচ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করে সে। এ ঘটনা গত ৮ই মে জানাজানি হলে স্থানীয় ও অভিভাবক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
তারা অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের দ্রুত অপসারণসহ শাস্তির দাবি জানান। অপরদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ওই শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে কাওকে কোনো কিছু না বলেই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ বিল্লাল হোসেন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দেন। তিনি এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে শিক্ষার্থীদের নিষেধ করেন প্রধান শিক্ষক।
নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুল ছুটি ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন আচরণ প্রসঙ্গে, ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদরপুরের ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, ঘটনাটি তাঁর কাছে সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ছাত্রী নিজে এসে অভিযোগ দেয়। বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোফাজ্জেল হোসেন প্রধান শিক্ষক মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রসঙ্গে শনিবার দুপুরে প্রেতিবেদক কে বলেন, তার বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রæত লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।