বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে শিশু কল্যাণ প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
কিশোরগঞ্জে শিশু কল্যাণ প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার মহিনন্দ ভদ্রপাড়া গ্রামে নির্মিত শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে স্থানীয় ও স্কুল কর্তৃপক্ষের মাঝে কৌতূহল। অসাধু মহলের অর্থের লেনদেনে সামাজিকভাবে তৈরি হয়েছে ভিন্ন পরিবেশ।

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুল হক রঙ্গু জানান, 'নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পরপরই অসাধু চক্রটি গত ২৪ ডিসেম্বর প্রায় ১০ শতাংশ জায়গার ওপর ঘর নির্মাণ করতে চায়। জায়গার মালিকের সঙ্গে টাকা লেনদেনে কিছু ঝামেলা হলে ঘরের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। পরে মালিকের ইচ্ছানুযায়ী অর্থ দেওয়ায় আবার স্কুল ঘর তৈরি করার কার্যক্রম শুরু হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর নির্মিত হওয়া স্কুল ঘরটি সম্পর্কে জানা যায়, এটি নাকি ২০১৪ সাল থেকে চালু ছিল।'

সরেজমিনে দেখা যায়, গত ৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ স্কুল ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্যসহ ঘর নির্মাণে প্রায় কোটি টাকার ওপরে অবৈধ অর্থের লেনদেন হয়। এছাড়াও সরকারি চাকরি হবে বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে মোটা অংকের টাকা লেনদেন হয়েছে।

সরেজমিনে আরও জানা যায়, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ স্কুল ঘরের জায়গাটি কেনার কথা ছিল। পরে টাকার বনিবনা না হওয়ায় স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। ২ দিন পর ২৬ ডিসেম্বর আবার মোটা অংকের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে নাকি স্কুলের ঘরের জায়গাটি দলিল হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ ৯৮১১নং দলিলটি রেজিস্ট্রি হয়েছে।

জানা যায়, দলিল দাতা হলেন সাদেকুর রহমান ও মুখলেছুর রহমান। বর্তমানে ১০ শতাংশ জায়গার ওপর স্কুলটিতে একটি টিনসেড নতুন ঘরের নির্মাণ করা হয়েছে ও সামনে গোরস্তানসহ মাটি ভরাটের কাজ চলছে। তিনদিন স্কুলটিতে যাওয়ার পর ৩ জন শিক্ষকের নাম পাওয়া গেছে। তাদের একেকজনের বক্তব্য একেকরকম।

শিক্ষক সালমা আক্তার জানান, তিনি জানুয়ারিতে এই স্কুলে নিয়োগ পেয়েছেন। অন্য এক শিক্ষক শাউরিন তিনি জানান, ২০১৪ সালে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। অন্য এক শিক্ষক রাহাতুন্নেসা বলেন, তিনি ২০১৪ সনে আবেদন করেছিলেন তার কাছেও কোনো ডকুমেন্ট নেই।

তথাকথিত প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান কামালের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি ২০১৪ সালে চুক্তিভিত্তিক স্কুলটিতে কার্যক্রম শুরু করেন এবং মন্ত্রণালয়ে কোনো একজনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তারা স্কুলের জায়গা ও ঘরটি দান করবে সেই শর্তে স্কুলটি সরকারিকরণ করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মজিব আলম জানান, 'শিশু কল্যাণ' নামক স্কুলের প্রস্তাবনা এসেছে। আপনার মত আমিও শুনেছি এটি নাকি মন্ত্রণালয়ের প্রজেক্টের আওতাধীন। এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়। বরং শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় একটি প্রজেক্ট স্কুল। তবে এই স্কুলের জন্য অনেকগুলো শর্ত থাকে। শর্তসাপেক্ষে স্কুলগুলো পরিচালিত হয়। এই স্কুল সম্পর্কে বিস্তারিত আমার জানা নেই। তবে শুনেছি এক সপ্তাহ আগে স্কুলের নামে জায়গা দেওয়া হয়েছে। জায়গাটি নামজারী জমা খারিজ হলে পরবর্তীতে শর্ত সাপেক্ষে স্কুলটি পরিচালনার জন্য অনুমতি পাবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে