শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভূঞাপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলনে প্রতিবন্ধক 'ফল আর্মিওয়ার্ম'

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ভূঞাপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলনে প্রতিবন্ধক 'ফল আর্মিওয়ার্ম'

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ভুট্টার অপার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে 'ফল আর্মিওয়ার্ম' পোকা। যমুনা বিধৌত চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ সবুজ ফসলের মাঠ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ভুট্টা গাছের সবুজ পাতার সমারোহ। কৃষকের চোখে তাই সোনালি ভুট্টার রঙিন স্বপ্ন। সেই রঙিন স্বপ্ন ম্স্নান করে দিচ্ছে- 'ফল আর্মিওয়ার্ম'।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শুরুতেই ভুট্টা চাষে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। এখানে প্রতি একরে ৭৫ থেকে ৯০ মণ ভুট্টা হয়ে থাকে এবং প্রতি মণ ভুট্টা এক হাজার থেকে ১২শ' টাকায় বিক্রি হয়।

চর গাবসারা গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, বরাবরই ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। তবে এ বছর 'ফল আর্মিওয়ার্ম' পোকার আক্রমণ উৎপাদন কম হতে পারে। ভুট্টাচাষি সুরুজ্জামান, জহির, কবির জানায়, 'আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করে দিচ্ছে ফল আর্মিওয়ার্ম নামে এক ক্ষতিকারক পোকা। কীটনাশক ব্যবহার করেও ক্ষতিকর এ পোকা দমন করতে পারছি না। ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিশেহারা ভুট্টা চাষিরা।'

সরেজমিনে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের গাবসারা, কালিপুর, জয়পুর, রেহাইগাবসার, চন্ডীপুর, রুলী ও পুংলীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যমুনার চরে ভুট্টা জমিতে ভোর থেকে চরাঞ্চলের কৃষকরা আগাছা দমনে কাজ করছেন, কেউ বীজ রোপণ করছেন, জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ পানি দিচ্ছেন, কেউ ভুট্টা গাছের পুরনো পাতা ছেঁটে দিচ্ছেন, বেশির ভাগই চাষিরা ক্ষতিকর পোকা নিধনে নানা ধরনের কীটনাশক স্প্রে করছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ উপজেলায় ৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। এতে চাষিরা ভালো ফলন পেয়েছেন। চলতি মৌসুমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ৪০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। প্রণোদনার আওতায় চরাঞ্চলে কৃষদের মধ্যে ভুট্টা বীজ ও কীটনাশক বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।

কালীপুর গ্রামের ভুট্টা চাষির আব্দুল আলীম বলেন, 'গতবারের মতো এবারও ৮-১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। কিন্তু শুরুতেই ভুট্টা পাতায় ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার উৎপাতে অতিষ্ঠ ও দুঃশ্চিতায় পড়েছি। কিন্তু কীটনাশক প্রয়োগ করেও এ পোকা দমন করতে পারছি না। যার ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছ। এভাবে পোকার উপদ্রব চলতে থাকলে আর লাভের মুখ দেখতে পারব না।'

উপজেলা কৃষি অফিসার আরিফুর রহমান বলেন, করতেনজা দিয়ে বীজ শোধন না করা, এসএফএন এনপিভি (ফউলিজেন) স্প্রে না করা, ব্রাকন হেবিটর অবমুক্ত না করা ও বালাইনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার না করায় ভুট্টা গাছের পাতায় ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার উপদ্রব দেখা দিয়ে থাকে। চাষিদের দুঃশ্চিতার কিছু নেই। সঠিক নিয়মে কীটশনাক ব্যবহারে পোকার উপদ্রব হ্রাস হবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে এ নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে