সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হরিরামপুরে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছে ঝাউবাগান

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
হরিরামপুরে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছে ঝাউবাগান

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বয়ড়া ও হারুকান্দি ইউনিয়নের (আন্ধামানিক খেয়াঘাট) সংলগ্ন পদ্মানদীর নতুন চরে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ঝাউগাছের সমারোহে ঝাউবাগান তৈরি হয়েছে। বিগত গত কয়েক বছরে সেই চরে বন্যার পানি না ওঠায় গাছগুলো বড় হতে থাকে। ঝাউগাছের সঙ্গে চরাঞ্চলে বন থাকায় ঝাউগাছগুলো বাইরে থেকে দেখার উপায় না থাকলেও, একটু ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে ছোট মাঝারি সাইজের ঝাউগাছ। আবার বেশ কিছু ঝাউগাছ কেটে চাষাবাদও করছে অনেকে। অসচেতনতা আর অবহেলায় দিন দিন কমছে ঝাউবাগানের গাছগুলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, একেকটা ঝাউগাছের উচ্চতা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট। আর মোটাও হয়েছে বেশ। এতে ২৫ থেকে ২৫ জনের একটা কুচক্রি দল প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হাজারের বেশি ঝাউগাছ কেটে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঝাউগাছগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার আর বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ ধরতে কাঠা (ফাঁদ) হিসেবে ব্যবহারের জন্য কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এ যেন প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ঝাউবনকে ধ্বংস ও লুটের মহোৎসবে মেতেছে তারা।

ঝাউগাছগুলো কেটে নেওয়ার সময় এক ট্রলারে করে আসা ৬ জনের মধ্যে একজন রহিমা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, 'হারুকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে জানাইছি তারপর কাটতেছি, বাড়িতে রান্না করার লাকড়ি (জ্বালানি) নাই, তাই এইগুলো লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করব।'

আরেক ট্রলারে থাকা ৪ জনের মধ্যে একজন আন্ধারমানিক গ্রামের মজিবর (ছদ্দনাম) জানান, 'চরে অনেক গাছ, এগুলো কি গাছ, কিসের কামে লাগব জানি না। তাই লাকড়ি হিসেবে নিতাছি। আর মাইটেলে (পুকুরে) কাঠা ফালামু। আমগো গেরামের অনেকেই তো প্রতিদিন নিতাছে।' অন্য আরেকটি ট্রলারে থাকা হারুকান্দি গ্রামের রমজান বলেন, 'এগুলা জঙ্গল কাইটা জমি পরিষ্কার করতেছি, এখানে চাষবাস করুম। কয়েক মাস ধরেই তো নিতাছে অনেকেই। চেয়ারম্যান সব জানে।' হারুকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, 'ঝাউগাছগুলো পাহাড়া দেবে কারা। আর আমি কাটতে বলব কেন? এগুলো আন্ধারমানিক, দড়িকান্দি গ্রামের মানুষ কেটে নিচ্ছে। গাছগুলো যাতে আর না কাটে, সেজন্য দেখি কি করা যায়।'

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, 'এ বিষয়ে আমি এসি ল্যান্ডকে বলে দিচ্ছি। তিনি আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্যা নেবেন।'

মানিকগঞ্জ বন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, 'চরে প্রাকৃতিক ঝাউবাগান আছে, জানতাম না। এখন আপনার কাছে শুনলাম। প্রাকৃতিক বন যাতে নষ্ট না হয়, এ বিষয়ে ইউএনও'র সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে