সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

নৌ সদস্য পরিচয়ে ১৩ বিয়ে বাদ যায়নি প্রতিবন্ধীও

ময়মনসিংহ বু্যরো
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
নৌ সদস্য পরিচয়ে ১৩ বিয়ে বাদ যায়নি প্রতিবন্ধীও

২০১৬ সালে শৃঙ্খলার ভঙ্গের দায়ে নৌ-বাহিনীর অফিস সহায়ক পদ থেকে চাকরি হারিয়ে মহিদুল ইসলাম নামের এক যুবক হয়ে ওঠেন ভয়াবহ প্রতারক। একটি-দুটি নয়, প্রতারণার মাধ্যমে ১৩টি বিয়ে করেন। বিয়ে করেই শ্বশুড়বাড়ির লোকজনকে প্রলোভন দেখিয়ে ধাপে ধাপে হাতিয়ে নেন ৫০ লাখ টাকা। গত শুক্রবার গোয়েন্দা পুলিশ এমন এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করলে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ভুক্তভোগীরা জানান, নৌ-বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে প্রথমে বিয়ে, তারপর বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে পরিবারগুলোর কাছে টাকা হাতিয়ে নেওয়া ছিল গ্রেপ্তার মহিদুল ইসলাম ওরফে মইদুলের উদ্দেশ্য। এবার তিনি ১৪তম বিয়ের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। মইদুলের গ্রেপ্তারের খবরে শনিবার ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে এসে হাজির হন প্রতারিত ছয় স্ত্রী ও তাদের পরিবার।

প্রতারণার শিকার এক নারী বলেন, তাদের বাড়ির পাশের এক ঘটকের মাধ্যমে মইদুল প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়। এরপর আশুলিয়ায় জমি কিনছেন বলে পরিবারের কাছ থেকে চার লাখ টাকা নেন। এরপর অসুখ ও নতুন বাসায় ফার্নিচার কেনার কথা বলে আরও দুই লাখ টাকা নেন।

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ একদিন পাশের ইউনিয়নে এমন পাত্রের কাছে একটি মেয়ের বিয়ে হয়েছে শুনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন মইদুল সেখানেও বিয়ে করেছেন। পরে খোঁজ নিয়ে চাকরি করেন না নিশ্চিত হন। এদিকে, শনিবার ডিবি অফিসে এসে জানতে পারেন তিনি ১৩টি বিয়ে করেছেন।

আরেক ভুক্তভোগী নারী বলেন, বাবা-মায়ের তিন মেয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বাবা-মাকে ম্যানেজ করে তাড়াহুড়া করে মইদুল তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর জমি কেনার কথা বলে বাবার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন। এরপর তার এক আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আরও কয়েক লাখ টাকা নেন। মোট আট লাখ টাকা নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঞা বলেন, এক ভুক্তভোগি নারী ও তার পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নামে। প্রযুক্তির সহায়তায় গত শুক্রবার রাতে গাজিপুর জেলার চন্দ্রা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক মহিদুল ইসলাম এবং ঘটক সহযোগী কুদ্দুস আলীকে তারাকান্দা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হয়েছে।

প্রতারক মহিদুল ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার মোহাম্মদ আলীর আলীর ছেলে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে