দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বপ্নের তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু এখন দৃশ্যমান। সেতুর সবশেষ ৩১তম পিলারটিরও কাজ চলছে জোরেশোড়ে। এ পিলারের কাজ শেষ হলে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাবে।
চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতু প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে দিন-রাত কাজ চলছে। সেতুর নির্ধারিত ৩১টি পিলারের মধ্যে ৩০টির কাজ শেষ হয়েছে। স্প্যানের ওপর স্স্নাব বসানো বাকি রয়েছে ৬টি ও গার্ডার বসানো বাকি রয়েছে ৩টি।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতু চালু হলেই যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। সেতু দিয়ে বাস-ট্রাকসহ ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করবে; যোগাযোগ আরও সহজ হবে; পথের ভোগান্তি কমবে- উত্তরের জেলা গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মানুষের এই স্বপ্ন বহুদিনের।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধা সার্কিট হাউসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুর-চিলমারি তিস্তা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করেন। সৌদি সরকারের অর্থায়নে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর খেয়াঘাট এলাকায় এক হাজার ৪৯০ মিটার (প্রায় দেড় কিলোমিটার) দীর্ঘ ও ৯.৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটির নির্মাণকাজ করছে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা।
সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে ৮৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৭৬ কিলোমিটার গাইবান্ধা অংশে। বাকিটা কুড়িগ্রাম অংশে। এ ছাড়া দুই তীরে স্থায়ীভাবে নদীশাসন করা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার। যা নদী ভাঙন রোধে বিশেষ অবদান রাখবে।
শুধু তাই নয়, সড়কগুলোতে নতুন করে ৫৮টি বক্স কালভার্ট এবং ৯টি আরসিসি সেতুও নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৯৬ মিটার দীর্ঘ একটি, ৪৮ মিটার দীর্ঘ দুটি, ২০ মিটার দীর্ঘ দুটি, ১৬ মিটার দীর্ঘ একটি এবং ১২ মিটার দীর্ঘ তিনটি সেতুর নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রকল্পের ৮৮ভাগ কাজ। বাকি কাজ চলতি বছরের জুনের আগেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিউল ইসলাম জানান, প্রকল্পের কাজ চলছে পুরোদমে। মে মাসের মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হবে। তবে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হতে জুন মাস পর্যন্ত সময় লাগবে।