রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
ফরিদপুরে বাজার মনিটরিং গোপালগঞ্জে মাছ ধরায় আটজনের সাজা

ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

স্বদেশ ডেস্ক
  ১২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যানজট নিরসন, অবৈধ অটোরিকশা ও ইজিবাইক বন্ধ এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সিলেট, যশোর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ অভিযান চালানো হয়। এদিকে, ফরিদপুরে বাজার মনিটরিংয়ে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে, গোপালগঞ্জে ইলেকট্রিক শর্টলাইট দিয়ে মাছ ধরার অভিযোগে ৮ ব?্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আঞ্চলিক অফিস, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-

সিলেট অফিস জানিয়েছে, বহুল প্রতীক্ষিত ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের পুনবার্সন কার্যক্রমের পর ফুটপাত দখলমুক্ত ও যানজট নিরসন করতে অভিযান চালিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। সোমবার দুপুর ২টায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় সিসিকের পক্ষ থেকে সতর্ক করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের নগরভবন লাগোয়া লালদিঘির পাড়ের নির্ধারিত স্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য বলা হয়। নির্দেশ অমান্য করায় কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের থেকে নগদ অর্থ জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেবের নেতৃত্বে অভিযানে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল একলিম আবদীন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর অংশগ্রহণ করেন।

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর জানান, অবশেষে ঘুম ভেঙেছে যশোর পৌরসভার। ফুটপাত দখল, অবৈধ ইজিবাইক-রিকশায় যানজটে শহর অচল হয়ে যাওয়ার পর অভিযানে নেমেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। দুই দিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তবে ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর ইজিবাইক ও অটোরিকশা চালকরা পৌরসভার এই অভিযানের মুখে পড়লেও ফুটপাত দখলকারী বহুতল ভবন মালিক ও অবৈধ ইজিবাইক-রিকশার গ্যারেজ মালিকরা থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রভাবশালীদের কিছুই হচ্ছে না। এ কারণে ফুটপাত দখলকারী বহুতল ভবন মালিক ও অবৈধ ইজিবাইক-রিকশার গ্যারেজ মালিকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।

জানা যায়, যশোর জেলা প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শহরে যানজটে নিরসনে অবৈধ ফুটপাত দখলদার, অবৈধ ইজিবাইক ও অটোরিকশা বন্ধে অভিযান শুরু করেছে পৌরসভা। পৌরবাসীকে যানজটের হাত থেকে স্বস্তি দিতে পুরো রমজান মাসজুড়ে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

রোববার ও সোমবার সকালে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী বিএম কামাল আহমেদের নেতৃত্বে পৌরসভার কর্মী ও ট্রাফিক পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। শহরের দড়াটানা, জজ কোর্ট মোড়, হাসপাতাল মোড়, চিত্রার মোড়, থানার মোড় এলাকা থেকে শতাধিক ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত অটোরিকশা জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে ফুটপাতে দখলকারী দুই শতাধিক অস্থায়ী দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সোমবার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসাইনের নেতৃত্বে শহরের পুরাতন কোর্ট রোড, জেলা রোড, কুমারশীল মোড়, কে দাস মোড়, ডা. ফরিদুল হুদা রোড (নিউ সিনেমা হল রোড)সহ বিভিন্ন ফুটপাতের অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে ফুটপাতে থাকা চায়ের দোকান, ফলের দোকান, অস্থায়ী পিঠার দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় ফুটপাতে মোটর সাইকেল পার্কিং করে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করায় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়। পরে পৌর সভার গাড়িতে করে এসব মোটর সাইকেল থানায় নেওয়া হয়েছে।

অভিযান সম্পর্কে সদর মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, পবিত্র রমজান উপলক্ষে শহরবাসীর ভোগান্তি লাঘবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরে রমজানে নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায় রাখতে বাজার মনিটরিং ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভোক্তাদের অনৈতিকভাবে ঠকিয়ে অধিক মুনাফা নিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে পেস্ন-কার্ডে লেখা থাকে, 'প্রিয় আঙ্কেল, পিস্নজ দাম বাড়াবেন না, আমাদের কষ্ট হয়। আঙ্কেল, আপনার অতিরিক্ত লাভের টাকা জোগান দিতে আমার বাবার কষ্ট হয়। ব্যবসায়ীরা গরিবের বন্ধু, বন্ধুকে বাঁচাতে সাহায্য করুন। আঙ্কেল পোশাকের দাম বাড়িয়ে আমার ঈদের আনন্দ নষ্ট করবেন না।' এমন নানা রকমের আবেদনময়ী পেস্ন-কার্ড হাতে ব্যবসায়ীদের সচেতনতা সৃষ্টিতে বাজার মনিটরিংয়ে আসে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে দেড় ঘণ্টাব্যাপী শহরের চকবাজার এলাকাসহ আশপাশের মার্কেটে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়িক সংগঠনকে সতর্ক করা হয়।

জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, 'আমরা বাজার মনিটরিংয়ের টিম নিয়ে পণ্যের দাম যাচাই করেছি। এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।'

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ইয়াসিন কবির, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ সোহেল, কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া এলাকার খালে ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে বিশেষ কায়দায় মাছ ধরার অভিযোগে ৮ ব?্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম?্যমাণ আদালত। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সদর উপজেলার নজড়া গ্রামের লিংকন খান (৩২), হাবিল মোলস্না (২৭), রবিউল মোলস্না (২৮), সুভাস বিশ্বাস (৩২), রাউত খামার গ্রামের চন্দন ভৌমিক (৩৩), মানিকহার গ্রামের তারক হাজরা (৫০), কাশিয়ানী উপজেলার বিদ্বেধর গ্রামের নূর জমাদ্দার (৩৫) এবং অপর ভাই রানা জমাদ্দার (২৮)। তাদের মধ্যে প্রথম সাতজনকে ১৫ দিন করে এবং শেষ জনকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা মৎস্য অফিস ওই এলাকার বসারতের খালে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে