স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও ভোগান্তি দূর হয়নি চার গ্রামের মানুষের। একমাত্র সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সদর ইউনিয়নের রায়নগর, বাগরা, সুন্দরপই ও বড়বন্দ গ্রামের অন্তত প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মরা নদীর ওপর রায়নগর থেকে শরীফপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী বারবার দাবি জানিয়ে আসলেও আজ অবধি আলোর মুখ দেখেনি। বিগত দিনে কোনো সরকারের আমলে এখানে সেতু নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রত্যেকবার ভোটের সময় ঘনিয়ে আসলে জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে যায়। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউ সামান্যতম খোঁজখবর পর্যন্ত রাখেন না। এভাবেই বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে জনগুরুত্বপূর্ণ রায়পুর থেকে শরীফপুর সংযোগ সেতুর দাবি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতু না থাকায় বাঁশের নড়বড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও পথচারীরা।
রায়নগর গ্রামের বাসিন্দা কাচা মিয়া (৫৩) বলেন, 'আমরা বাপদাদার আমল থেকে এখন পর্যন্ত একই অবস্থায় আছি। সেতু না থাকায় উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারি না। সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য এলাকার বাইরে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করাতে পারি না। অসুস্থ রোগীদের তাৎক্ষণিক ডাক্তার দেখাতে পারি না। আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।'
একই গ্রামের বাসিন্দা মাছচাষি রাজা মিয়া (৩৪) ও বাবলু (৩০) বলেন, 'এখানে সেতু না থাকায় মাছের খাবার আনতে এবং মাছ বাজারজাত করতে যা কষ্ট করতে হয় তা বলে বুঝানো যাবে না।' ব্যবসায়ী শিপন মিয়া (৪০) বলেন, 'এই একমাত্র সেতুর অভাবে আমরা শত বছর পিছিয়ে আছি। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কৃষিকাজ করে অতিরিক্ত পরিবহণ ব্যয় বহন করতে গিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।'
যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, 'রায়নগর-শরীফপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের বিষয়ে কোনো প্রস্তাবনা দেওয়া আছে কি না আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।' ইউএনও নেহের নিগার তনু বলেন, 'রায়নগর থেকে শরীফপুর সংযোগ সেতু নির্মাণের বিষয়ে এলাকাবাসী আমাকে লিখিতভাবে জানালে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।'