মা ইলিশ ও সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণে দেশের নদী ও সাগরে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। রোববার মধ্যরাত থেকে উপজেলার জেলেরা নদী ও সাগরে ইলিশ ধরতে নামেন। ইতোমধ্যে জাল, ট্রলার, নৌকাসহ মাছ ধরার সব সরঞ্জাম মেরামত করে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলেরা।
এর আগে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এ সময় মাছ আহরণ, পরিবহণ ও বিপণন নিষিদ্ধ। রোববার সকালে উপজেলার সবচেয়ে বড় মৎস্যবন্দর আলীপুর ও মহিপুর ঘাট ঘুরে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তের কর্ম ব্যস্ত রয়েছেন জেলেরা। সমুদ্রে রুপালি ইলিশের সন্ধানে যেতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। তবে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারি সহায়তা নিয়ে রয়েছে জেলেদের ক্ষোভ রয়েছে।
প্রতিবছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার শেষদিকে গভীর সমুদ্র থেকে নদীর মোহনায় এসে ডিম ছাড়ে মা-ইলিশ। তাই ২০০৬ সাল থেকে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের অবরোধ দিয়ে আসছে সরকার। এ সময় সব ধরনের মাছ শিকার পরিবহণ মজুত ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এবার প্রশাসনের তৎপরতা বেশি থাকায় উপকূলজুড়ে মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
স্থানীয় জেলে জাকির হোসেন মাঝি জানান, 'আমরা সরকারের আইন মেনে অবরোধ পালন করেছি। সমুদ্রে যাওয়ার জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২২ দিনের অবরোধে সরকারের তরফ থেকে জেলেদের চাল দেওয়া হয়, কিন্তু আমাদের এখানে অনেক জেলে চাল পাননি। তাই আমি সরকারের কাছে আবেদন করব যারা প্রকৃত জেলে তাদের বাছাই করে যাতে তাদের চালসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।
মহীপুর মৎস্য আড়তদার আ. রহিম বলেন, এ বছর জেলেরা সঠিকভাবে মাছ শিকারে সামুদ্রিক নিষেধাজ্ঞা পালন করেছেন। যেহেতু নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার আগে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়েনি, তাই আশা করছি অবরোধ শেষে বড় সাইজের পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়বে জেলেদের জালে।'
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, 'উপকূলের জেলেরা নিজেরাই আগের থেকে অনেকটা সচেতন হয়েছেন। আমরা এ পর্যন্ত যৌথ অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভারতীয় জেলেদের জরিমানা আদায় এবং জালসহ তাদের ট্রলার জব্দ করেছি। ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে পালন করার জন্য আমরা সর্বাত্মক সচেতন ছিলাম।'
তিনি আরও জানান, উপজেলায় নিবন্ধিত ১৮ হাজার ৩০৭ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে সরকারি প্রনোদনার চাল দেওয়া হয়েছে।