খুলনার রূপসা উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দেওয়া উপহারের বেশিরভাগ ঘরেই ঝুলছে তালা। থাকছেন না বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তবে বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা এসব ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের সামন্তসেনা নেহালপুর, ঘাটভোগ ইউনিয়নের শিয়ালী, আলাইপুর, গোয়াড়া, টিএসবি ইউনিয়নের পাচানী ও খাজাডাঙ্গাসহ উপজেলায় ৫৪৩টি ঘর বরাদ্দ হয়। এর অধিকাংশ ঘরে কেউ থাকে না। ফলে সেগুলো ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। ফাঁকা ঘরে এখন খড়কুটো ও গরু-ছাগল রাখা হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের নেহালপুল এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর যাদের নামে বরাদ্দ হয়েছে তারা ৫ বছরের মধ্যে একদিনের জন্যও সেখানে বসবাস করেননি। একপাশে তিনটি ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। অন্য ঘরগুলোয় পরিবার নিয়ে বসবাস করছে কিছু পরিবার।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা জানান, তালাবদ্ধ করে বেশিরভাগ লোকজনই চলে গেছেন নিজ বাড়িতে। এমনও আছেন, শুধু ঘর তালাবদ্ধ করে চলে গেছেন, আর কখনো আসেননি। এজন্যই বেশির ভাগ ঘর ফাঁকা পড়ে আছে। জায়গা কম পড়লে কেউ ফাঁকা ঘরগুলোয় খড়কুটো ও গরু-ছাগল বেঁধে রাখছেন। প্রকল্পের এ ঘরের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে এবং ঘরের মেঝেতে ইঁদুর গর্ত করেছে বলে অভিযোগ করেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা।
আশ্রয়ণকেন্দ্রে বসবাসকারী দাউদ বলেন, যাতায়াতের রাস্তা নেই, মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বৃষ্টি হলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পানি জমে যাতায়াতসহ আরও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আশ্রয়ণে বাসিনদা ময়না বেগম বলেন, 'যারা ঘর পেয়েও সেখানে থাকছেন না, তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘরবাড়ি রয়েছে। শুধু দখলে রেখেছেন। এই এলাকাতেই ভূমিহীন অনেকে রয়েছেন, যারা ঘর পাননি।'
ইউএনও আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদু্যৎসহ সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া ঘরের উপকারভোগীদের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। যারা থাকতে চান না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আর যাতায়াতের সমস্যা শিগগিরই সমাধান করবেন।