রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

নীলফামারীতে নিরাপদ ক্যাম্পেইনে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রচার অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী
  ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নীলফামারীতে নিরাপদ ক্যাম্পেইনে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রচার অভিযান
নীলফামারীতে নিরাপদ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে রোধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে -যাযাদি

পলস্নীশ্রী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন বিশেষ করে কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে গবেষণার মাধ্যমে দেখা যায় পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু বিয়ের হার বাংলাদেশে। শিশু বিয়ে যে কোন কিশোরীর জীবনের এমন একটি ঘটনা, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ওই বিবাহিত কিশোরীর ব্যক্তিগত জীবনের সব ক্ষেত্রে। আর এর সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়ে বিবাহিত কিশোরীর নিজের ও সন্তানের স্বাস্থ্যের উপর, পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি একটি রাষ্ট্রের শিক্ষা-স্বাস্থ্য-অর্থনীতির মত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে। বিবাহিত কন্যা শিশুদের কখনোই শিশু হিসেবে স্বীকৃতি বা বিবেচনা করা হয় না। বিবাহিত হওয়ার পর তারা ঘরে আটকে যায় ও মেয়ে শিশু হিসেবে প্রতিনিয়ত তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়।

এরই দৃষ্টিকোন থেকে নীলফামারী জেলা সদরের পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়ন, ডোমার পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়ন ও ডিমলা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে বাল্যবিয়ে রোধে নিরাপদ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

সরেজমিনে সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পলস্নীশ্রী'র একজন মাঠকর্মী ও স্থানীয় অনেক কিশোর-কিশোরী মিলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাল্যবিয়ে রোধে প্রচারণা চালাচ্ছে। সেসময়ে দেখা গেছে তারা বিভিন্ন বয়সী শিক্ষার্থীদের বিয়ের বয়স সম্পর্কে সচেতন করছে। অনেকের নাম ও বয়সের তথ্য তাদের স্থানীয় নারী ক্লাবে সংরক্ষণ করছে। এছাড়াও নারীর ক্ষমতায়ন, প্রত্যেকের জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলকের বিষয়েও প্রচারণা চালাচ্ছে।

বানিয়াপাড়া কিশোরী ক্লাবের সদস্য রাইসা আক্তার বলেন, 'পলস্নীশ্রীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। কারণ এখানে নারীর ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক বিষয়ে সুন্দরভাবে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও সরকারী নিয়ম অনুযায়ী মেয়ের ১৮ ও ছেলেদের ২১ বছর বয়সের আগে বিয়ে নয়। বাল্যবিয়ের নানা কুফল, এ সম্পর্কিত কু-সংস্কার, রাষ্ট্র নির্ধারিত বিয়ের সঠিক বয়স, রাষ্ট্রীয় আইন এবং টোল ফ্রি নম্বর ১০৯, ৯৯৯, ৩৩৩, ১০৯৮ নম্বর সর্ম্পকে অবগত, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা, গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা, প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ, কর্মসংস্থান সৃস্টি সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করা হয়। তাছাড়া প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে ছেলে মেয়েদের তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সবাইকে সচেতন করা হয়।'

তানজিনা বেগম সিবিও সভানেত্রী বলেন, চড়াইখোলা ইউনিয়নের নারীরা আগে অনেক অবহেলিত ছিল। পলস্নীশ্রী যুক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন এলাকায় নারী ক্লাব, সিবিও ও আর্দশ গ্রাম গঠন করা হয়েছে। কমিউনিটির কিশোর-কিশোরীরা এখন উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে।

পলস্নীশ্রী সূত্রে জানা গেছে, পলস্নীশ্রী একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন হিসেবে ১৯৮৭ সালের ০৪ ফেব্রম্নয়ারি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলায় ১১৩টি নারী ক্লাবের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে রোধে নিরাপদ ক্যাম্পেইন (নিজেকে রাখিবো পরম দায়িত্বে) অব্যাহত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে