বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে জড়িয়ে আক্রমণাত্মক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে অবশেষে দুঃখ প্রকাশ করলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ-জামায়াতে ইসলামীর আমিরকে নিয়ে একটি পোস্ট করেন। পোস্টের পরেই কমেন্টে পক্ষে ও বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। স্ট্যাটাস দেওয়ায় মৌলভীবাজারসহ সিলেট বিভাগ জুড়ে শুক্রবার রাতভর আলোচনা-সমালোচনা হয়। পরে সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি ওই স্ট্যাটাস ডিলিট করে নতুন আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে এম নাসের রহমান লিখেছেন, 'জামাত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের আজকাল বক্তব্য শুনলে মনে হয়, উনি বুঝি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়ে গেছেন। প্রায় প্রায়ত্যেক দিন উনার বিভিন্ন বয়ান শুনলে তাই তো মনে হয়। এত নসিহত তিনি কেন করছেন বোধগম্য হচ্ছে না। গতকাল উনি বলেছেন যে গত ১৫ বছর জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে বেশি নির্যাতিত কোনো দল হয় নাই। এ ধরনের হাস্যকর বক্তব্য; উনার কাছ থেকে আশা করা যায় না। জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীর সংখ্যা কি বিএনপি থেকেও বেশি বিএনপির যে কয়েক লাখ নেতাকর্মী হাজার হাজার মামলায় পর্যুদস্ত হয়েছে ও জেল খেটেছে তার ২০ শতাংশের কাছে কি জামায়াত নেতাকর্মী পতিত আওয়ামী লীগ কর্তৃক হেনস্তা হয়েছে স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপির ১৫ বছরের বিভিন্ন প্রকারের আন্দোলন আর অত্যাচারকে খাটো করার উদ্দেশে এ ধরনের এক হাস্যকর ও অবাস্তবিক বক্তব্য দিয়ে উনি দেশবাসী সহানুভূতি পাওয়ার এক বৃথা চেষ্টা করেছেন।'
সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান পুত্র আরও লিখেছেন, 'একটা বিষয় বুঝতে পারছি না, জামায়াত ইসলামী কেন তদের আসল আমির মাওলানা আজহারুল ইসলামকে জেল থেকে বের করছে না! এতদিনে তো উনাকে অন্তত জামিনে মুক্ত করা উচিত ছিল! এইটা কোনো দুরভিসন্ধি মূলক কারণ কিনা সেই বিষয়টা জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে!'
পরে ওই রাতেই স্ট্যাটাস ডিলিট দিয়ে এম নাসের রহমান অনেক কথার মাঝে সবশেষে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'আমার এই বক্তব্যের কারণে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।'
বাংলাদেশ-জামায়াতে ইসলামীর মৌলভীবাজার জেলা সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী শনিবার সকাল ৮টায় তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যটাসটি হলো- 'মন্দের জবাব মন্দ ভাষা দিয়ে নয়, সর্বোত্তম পন্থায় মোকাবিলা করতে হয়। তবে এটা ঠিক যে, আমরা আমাদের দায়িত্বশীলকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা করি। সংগঠন ও দায়িত্বশীলদের ওপর কোনো আঘাত আমাদের খুব ব্যথিত করে। তবুও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পেছনে তাকানোর সময় কোথায়। এখন বিভেদ নয়, প্রয়োজন ঐক্য।'