রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

'দুই এনআইডি'র সেই জাকিরের বিরুদ্ধে এবার ভুয়া দলিলে জমি বিক্রির অভিযোগ!

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
  ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
'দুই এনআইডি'র সেই জাকিরের বিরুদ্ধে এবার ভুয়া দলিলে জমি বিক্রির অভিযোগ!

দুটি এনআইডি কার্ড নিয়ে জালিয়াতি করা সেই জাকির হোসেন ওরফে মোশারফের বিরুদ্ধে এবার জাল-জালিয়াতি করে অন্যের জমি বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। জমির মালিক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করেছেন, 'প্রতারক' জাকির তার জমির জাল দলিল করে বিক্রির চেষ্টায় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বায়না করেছেন। কিন্তু মামলা থাকায় রেজিস্ট্রি করে দিতে না পারায় বায়না ফেরতও দিয়েছেন। ফলে জমি কেনার নামে তার খপ্পরে পড়লে সর্বস্বান্ত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

যশোর শহরের ঘোপ জেল রোড এলাকার মৃত ফজলে আকবরের ছেলে ফজলে রাব্বী জানান, যশোর কোতোয়ালি থানার ৯২ ঘোপ মৌজায় এসএ ৫০৩ আরএস ৫২৩ খতিয়ানের আরএস ১৭৭০ দাগে তাদের ২৮.৬৯ শত জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৬ শতক জমি জাল-জালিয়াতি করে জাকির হোসেন ওরফে মোশারফ হোসেন দলিল করে নিয়েছেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে তিনি ওই জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না নিয়েছেন। মামলার বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রি অফিস অবহিত থাকায় জাকির হোসেন জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। ফলে বায়না ফেরত দিতেও বাধ্য হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এই জাকিরের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার উপশহরের জলপাইতলা ফকিরার মোড় এলাকায়। কিন্তু তার দুটি এনআইডি কার্ড রয়েছে। দুটি এনআইডি'র তথ্য অনুযায়ী, একটিতে নাম-জাকির হোসেন, পিতা মো. মুনছুর আলী, মাতা সাফিয়া খাতুন, ঠিকানা- সেক্টর ১, উপশহর, সদর, যশোর; জন্ম তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ইং, এনআইডি নং-৪১১৪৭৯৫২৫২৩৬৬। অন্যটির নাম্বার- ৭৩৪৯০৬৪৬৫৪, নাম মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, পিতা মো. হারুনউর রশিদ; মাতার নাম ঠিকানা ও জন্ম তারিখ একই।

গত জানুয়ারি মাসে বিদু্যৎ চুরির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে গ্রেপ্তার করলে বিষয়টি ফাঁস হয়। জাকির হোসেন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি দাবি করেন, তিনি মোশরফ হোসেন। এনআইডি জালিয়াতির এ ঘটনা উদ্ঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদনও দাখিল করেন যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই টমাস মন্ডল। বিষয়টি নিশ্চিতও করেন টমাস মন্ডল। ওই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে 'জাকিরের এনআইডি জালিয়াতি' নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই মামলায় জামিনে বের হওয়ার পর শহরের ঘোপ এলাকায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেন বলে অভিযোগ।

জমির মালিক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করেন, এক সময় জাকির তাদের জমি ও স্থাপনার কেয়ারটেকার ছিলেন। ওই সময় জাল-জালিয়াতি করে ভুয়া দলিল তৈরি করেন। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলা চলমান রয়েছে। এজন্য জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা সংবলিত সাইনবোর্ডও টানানো রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময় সেই সাইনবোর্ড নষ্ট করে এবং নির্দেশনা উপেক্ষা করে জমি বিক্রির চেষ্টা করছেন। ফলে ওই জমি কেউ কিনতে গেলে জাকিরের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

জাকির হোসেন ওরফে মোশারফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি বিক্রি চেষ্টার কথা স্বীকার করে বলেন, যখন জমি বিক্রির কথা চলছিল, তখন মামলা ছিল না। তবে বায়না রেজিস্ট্রি করতে না পারায় তিনি টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে তিনি দাবি করেন, ফজলে রাব্বী তাকে জমি লিখে দিয়েছেন। আর একাধিক এনআইডি'র বিষয়ে তিনি দাবি করেন, তার এনআইডি একটি। অন্যটি কোথা থেকে এসেছে তা তিনি জানেন না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে