সপ্তাহ খানেক আগে প্রতিটি গাছের গোড়ায় জৈবসার দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন আগে সেচ দেওয়ার কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে ছোট-বড় গাছে এসেছে গোলাপের কুঁড়ি। আবার অনেকগুলো গাছে ফুটেছে রঙ-বেরঙের গোলাপ ফুল। কয়েক দিন পর গোলাপের কুঁড়িগুলো পরিপূর্ণভাবে ফুটবে। তখন একযোগে অনেকগুলো গোলাপ ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করা যাবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে গোলাপ ফুল বিক্রি করে পর্যাপ্ত লাভের স্বপ্ন দেখছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের রামপুর গ্রামের ফুল চাষি আয়ুব আলী। প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে রঙ-বেরঙের গোলাপের বাগান করেছেন তিনি। তার বাগানে গোলাপি, লিংকন, পিঙ্ক, হলুদ ও সাদা কালারের গোলাপ রয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ঘিরে ১০ থেকে ১৫ টাকা প্রতি পিস দরে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার গোলাপের স্টিক বিক্রি করতে পারবেন এমন প্রত্যাশা ফুল চাষি আয়ুব আলীর।
সাতকানিয়া উপজেলায় বেশি ফুল উৎপাদন হয় খাগরিয়া ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের সঙ্গে পালস্না দিয়ে অন্যান্য ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাড়ছে ফুল চাষ। এসব এলাকায় বেশি চাষ হয় গাঁদা ফুল এবং গোলাপ ফুল। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে চাষিরা এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের আবাদ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে প্রতি মৌসুমে গোলাপ ক্ষেত পরিচর্যায় খরচ পড়ে ৯০ হাজার ১ লাখ টাকা। গাঁদা ফুল পরিচর্যায় খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলায় ১ হেক্টর গোলাপ, ২ হেক্টর গস্নাডিওলাস, প্রায় ০.৫ হেক্টর গাঁদা ও ০.৫ হেক্টর জমিতে জারবেরা ফুলের আবাদ হয়েছে। এ ছাড়াও অল্প পরিমাণে স্টার, জিনিয়া, জিপসি ও চন্দ্রমলিস্নকা ফুলের আবাদ করেছে স্থানীয় ফুল চাষিরা।
খাগরিয়া ইউনিয়নের আমিন সেন্টার এলাকার ফুল চাষি রাশেদুল ইসলাম জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাঁদা ও গস্নাডিওলাস ফুলে প্রচুর কুঁড়ি এসেছে। বিজয় দিবসের আগের দিন ক্ষেত থেকে ফুল তুলে বাজারে বিক্রি করে ভালো লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
একই এলাকার ফুল চাষি আব্দুল হান্নান বলেন, 'আমাদের এলাকায় উৎপাদিত ফুল পুরো উপজেলার ফুলের চাহিদা পূরণ করে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন দোকানে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গাঁদা ও গোলাপের চাহিদা অন্যান্য ফুলের তুলনায় অনেকটা বেশি। প্রতি বছর বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। বিজয় দিবস ঘিরে প্রতি ঝোপা গাঁদা ফুল অন্তত ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হবে বলে আশা করছি।'
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিজয় দিবস ঘিরে ভালো দামে ফুল বিক্রির আশায় স্থানীয় ফুল চাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এ এলাকায় উৎপাদিত ফুল চট্টগ্রাম শহরে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আশা করছি অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চাষিরা ফুল বিক্রি করে আরও বেশি লাভবান হবেন।