বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইয়াশফি ডেভেলপারের এমডি ইমরানের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ

জাহাঙ্গীর আলম
  ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ইয়াশফি ডেভেলপারের এমডি ইমরানের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ
ইয়াশফি ডেভেলপারের এমডি ইমরানের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুলস্না মডেল থানার ভূইগড় সাইনবোর্ড এলাকার ইয়াশফি ডেভেলপার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইমরানের বিরুদ্ধে বহুতল ভবন নির্মাণের চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন জমির মালিক রুবিনা রহমান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুলস্না সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অধীনে, জে.এল নম্বর সিএস ১৪৮, এসএ ০৬ এবং আরএস ০৬ নং, মৌজা-ভূইগড়স্থ। এই জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ইয়াশফি ডেভেলপার লিমিটেডের পরিচালক মো. ইমরানের সঙ্গে ২৩-০২-২০২২ তারিখে চুক্তিপত্র দলিল নারায়ণগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করা হয়। দলিল নম্বর ছিল ২৬০৫। কিন্তু ইমরান চুক্তিপত্র লঙ্ঘন করে জমির মালিক রুবিনার সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেন।

1

এ বিষয়ে জমির মালিক রুবিনা বলেন, 'ইমরানের সঙ্গে চুক্তির আগে আমরা নিজস্ব খরচে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক অনুমোদিত পস্ন্যান ও নকশা নিজের নামে করাই। জমির পাইলিং ও ১০তলা পর্যন্ত ফাউন্ডেশনের কাজ সম্পন্ন করে ২০২১ সালে বেজমেন্ট ফ্লোর নির্মাণ শেষ করি। পরবর্তীতে ইয়াশপি ডেভেলপার লিমিটেডের সঙ্গে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়।'

রুবিনা রহমান অভিযোগ করে বলেন, 'ইমরান বেজমেন্ট থেকে ৮ম তলা পর্যন্ত ভবনের অংশ অন্যত্র ভাড়া দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী আমাদের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। বেজমেন্ট ও ফাউন্ডেশন নির্মাণে আমাদের প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে ইমরান প্রথমে ৫ লাখ টাকা, পরবর্তীতে দুটি চেকের মাধ্যমে মোট ২৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। তবে বাকি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধ না করে সময়ক্ষেপণ করছেন এবং আমাদের হয়রানি করছেন।'

তিনি আরও জানান, 'চুক্তিপত্র অনুযায়ী সঠিক মানের উপাদান ব্যবহার না করে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ভবনের কাজ চালানো হচ্ছে। এছাড়া চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে দু'টি বিল্ডিংয়ের ছাদ একত্রে নির্মাণ করা হয়েছে। আমি ভবনের কাজ তদারকি করতে গেলে ইমরান অশালীন ভাষায় কথা বলেন এবং উগ্র আচরণ করে আমাকে তার অফিস থেকে বের করে দেন।'

রুবিনা রহমান আরও অভিযোগ করেন, 'ইমরান একজন প্রতারক ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন।

বর্তমানে বিএনপির বিভিন্ন সিনিয়র নেতার নাম ব্যবহার করে নিজেকে বিএনপির লোক বলে পরিচয় দেন এবং তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। মো. ইমরান স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের মাধ্যমে আমাদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।'

ভূমির মালিক রুবিনা রহমান আরও বলেন, 'আমি আমার সম্পদ চাই। এই বিষয়টি যাতে ন্যায়, সমতা ও তদন্তের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি হয় তার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সিনিয়র সচিব (জননিরাপত্তা বিভাগ) পুলিশের আইজিপি, ঢাকা বিভাগের পুলিশের ডিআইজি, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।'

এই ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র নেতা মিজা আব্বাস বলেন, 'যারা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তার ও অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে শুরু করে আমাদের দল কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। সে যেই দলের হোক না কেন অন্যায় করে কেউ ছাড় পাবে না।'

এই বিষয়ে অভিযুক্ত ইয়াশফি ডেভেলপার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইমরানের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বহুতল ভবন নির্মাণ নিয়ে কথা বলেননি। তবে তিনি বলেন, 'আমি একজন ব্যবসায়ী, সেই সুবাদে আমার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকদের পরিচয় আছে। এর বাইরে আর কিছু না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে