বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টাঙ্গাইলে প্রশিক্ষণরত ১৪ পুলিশ কনস্টেবল ও মেডিকেল কলেজের ১৫ কর্মচারীকে অব্যাহতি

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
  ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
টাঙ্গাইলে প্রশিক্ষণরত ১৪ পুলিশ কনস্টেবল ও মেডিকেল কলেজের ১৫ কর্মচারীকে অব্যাহতি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেণ্টারে প্রশিক্ষণরত ১৪ জন কনস্টেবল ও টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজের ১৫ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেণ্টারে প্রশিক্ষণরত ১৪ জন কনস্টেবলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে ওই ১৪ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আদেশে বলা হয়েছে, 'শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত কারণে অদ্য ২ জানুয়ারি অপরাহ্ন হতে প্রশিক্ষণ থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।'

1

জানা গেছে, গত ২৪ জুন থেকে ৫৪তম ব্যাচের টাঙ্গাইলের মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেণ্টারে ৭৯৩ জনের ৬ মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তাদের মধ্যে ৬জন অসুস্থ হওয়ায় তাদের বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৭৮৭ জন কনস্টেবল প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। ১৯ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণরত ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলের (টিআরসি) সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও তারিখ পরিবর্তন করে ১২ জানুয়ারি করা হয়।

অব্যাহতি পাওয়া কনস্টেবলরা জানান, তারা ১৯১ দিন প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন। পাসিং প্যারেড হওয়ার কথা থাকলেও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হঠাৎই অব্যাহতির চিঠি দেওয়া হয়। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো কাজ না করেও তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়োগ হওয়ায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেণ্টারের পুলিশ সুপার সাহেদ মিয়া জানান, এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার ছাড়া তারা কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না।

অন্যদিকে, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত বিভিন্ন পদের ১৫ জন আউটসোসিং কর্মচারীকে অব্যাহতি দিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। ওই কর্মচারীরা আউটসোর্সিংয়ে গত ২০২২ সালে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে ১৫ কর্মচারীর অব্যাহতির বিষয়ে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত নয় বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সম্প্রতি নতুন নাম করা হয় 'টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল'।

গত ৩১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে কর্মরত ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট, ওয়ার্ড বয়, ইলেকট্রিশিয়ান, বাবুর্চি ও নিরাপত্তা প্রহরী পদের ১৫ জনকে অব্যাহতি দেয় তাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। অব্যাহিত দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চাহিদা অনুযায়ী আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন পদবির ৯০ জন জনবল সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ওই ১৫ জন বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড ও মিটিং-মিছিলের সঙ্গে জড়িত থাকায় নিয়োগপত্রের ৩নং শর্তাবলী অনুযায়ী অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হওয়ায় তাদের নিয়োগপত্র বাতিল করা হলো। অব্যাহতি পাওয়া ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পাপিয়া আক্তার জানান, আওয়ামী লীগের সময় নিয়োগ পাওয়ায় নাকি অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই এমন চিঠি ইসু্য করা হয়। কোম্পানি থেকেও কিছু বলা হয়নি। অব্যাহতির চিঠিটা আদৌ সঠিক কি না তারা জানেন না। অব্যাহতি পাওয়া অনেকেই এখনও হাসপাতালে ডিউটি করছেন।

হাসপাতালের সুপার ভাইজার আল আমিন জানান, অব্যাহতি পাওয়া কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে মিছিল-মিটিং করা, চাকরির কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠান তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। হাসপাতালের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার মো. জিলানও একই কথা বলেন।

টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানান, বিষয়টি তারা জানেন না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো চিঠি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে