ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া স্থলবন্দর দিয়ে ১৭ দিন যাবত ভারতীয় কয়লা আসছে না। এতে শ্রমিকদের মধ্যে নেই আগের মতো কর্মচাঞ্চল্য।
এদিকে ভারতীয় কয়লার দামে ক্ষুব্ধ আমদানিকারকরা। তারা বলছেন, দাম কিছুটা কমানো হলে বন্দর দুটিতে সারাবছর আমদানি চাঙা থাকবে। অন্যথায় ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলবে বন্দরের কার্যক্রম।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, গত বছরের এপ্রিলে ভারত থেকে মাত্র ৯৬৪ টন কয়লা আমদানি হয়। এরপর আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। ৪ ডিসেম্বর দুই স্থলবন্দর দিয়ে ৮ ট্রাকে ৯৬ টন কয়লা বাংলাদেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে আবারও কার্যক্রম শুরু হয়। সেসময় থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯০ ট্রাক কয়লা বাংলাদেশে আসে। এসব ট্রাকে ১ হাজার ৮০ টন কয়লা ছিল। এরপর বড়দিন ও নতুন বছরে কয়েকদিন ছুটির কথা বলে রপ্তানি বন্ধ রাখে ভারতীয়রা।
বুধবার বিকেলে কড়ইতলী-গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানি গ্রম্নপের সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার অপু বলেন, ভারত থেকে প্রতিটন কয়লা কেনাসহ সবমিলিয়ে খরচ হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। আমরা ৫০০ টাকা লাভ করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছি। ত্রেতা ধরে রাখাসহ বন্দর দুটির কার্যক্রম সচল রাখতে আমরা লাভ কম করছি। তবুও ২২ ডিসেম্বরের পর থেকে বড়দিন ও নতুন বছর শুরু হওয়ায় কয়েকদিন রপ্তানি বন্ধ রাখার কথা বলে এখন পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ভারতীয়রা। এজন্য ঝিমিয়ে চলছে বন্দরের কার্যক্রম।
তিনি বলেন, এখন ইটভাটায় প্রচুর কয়লা প্রয়োজন। মালিকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়লা নিচ্ছেন। এসময় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে মালিক-শ্রমিক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতীয় কয়লার দাম কমানো দরকার উলেস্নখ করে আমদানি-রপ্তানি গ্রম্নপের এই নেতা বলেন, দাম কিছুটা কমালে সারাবছর ব্যবসা চাঙা থাকবে। প্রচুর কয়লা আমদানি করা যাবে। এতে ক্রেতারা কম দামে কিনতে পারবে। ফলে শ্রমিকদের অলস সময় কাটাতে হবে না।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কড়ইতলী-গোবরাকুড়া বন্দরের সহকারী পরিচালক পার্থ ঘোষ বলেন, ইন্দোনেশিয়ার কয়লা জাহাজে করে বাংলাদেশে আসে। এগুলোর গুণগত মান ভারতীয় কয়লার চেয়ে কিছুটা কম। এজন্য কয়েক হাজার টাকা কম দামে বিক্রি করা হয়। কিন্তু ভারতীয়রা দাম কমাতে নারাজ। ফলে তাদের কয়লা আমদানি কম হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাবছর আমদানি-রপ্তানি ঠিক থাকলে স্থলবন্দরের কার্যক্রম জমজমাট থাকবে। এতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের লাভবান হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশী আমদানিকারকরাও বেশি পরিমাণ কয়লা আমদানি করতে পারবে। ফলে শ্রমিকদেরও বেকার থাকতে হবে না। ভারতীয়রা ইচ্ছা করলেই সহনীয় দামে কয়লা বিক্রি করতে পারে।
হালুয়াঘাট স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা তমাল কান্তি বলেন, গত অর্থবছরে কয়লা আমদানি খুব কম হয়েছে। তবুও ২০ লাখ টাকার মতো রাজস্ব আদায় হয়েছে। সারাবছর আমদানি-রপ্তানি চাঙা থাকলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।