পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গভীর রাতে বসতবাড়ির আগুনে দগ্ধ হয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল হামিদ (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃতু্য হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের নৌবাড়িয়া নতুনপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত আব্দুল হামিদ ওই গ্রামের বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ছিলেন। তিনি উপজেলা কৃষকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুব হোসেনের বাবা।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল হামিদসহ তার পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এমন সময় আব্দুল হামিদের বাড়িতে আগুন লাগে। আশপাশের লোকজনের চিৎকারে আব্দুল হামিদের ছোট ভাই ফজলুল হক ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান তার বড় ভাই আব্দুল হামিদের বসতঘরে আগুন জ্বলছে।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ঘন্টাখানেক চেষ্টা করে রাত একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ দিকে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে পার্শ্ববর্তী উপজেলা চাটমোহর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিস এর গাড়ি ভেতরে ঢুকতে পারেনি।
আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে ওই পরিবারের সবাই ঘর থেকে বের হতে পারলেও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত আব্দুল হামিদ বের হতে পারেননি। ফলে ওই ঘরেই তিনি দগ্ধ হয়ে মারা যান। পরের স্থানীয় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
কৃষকদল নেতা মাহবুব হোসেন জানান, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইস রোগী ছিলেন। তিনি হাঁটাচলা করতে পারতেন না। আগুনের খবরে সবাই বের হতে পারলেও তিনি বের হতে পারেননি। যার কারণে শয়নরত অবস্থাতেই তিনি আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান।
চাটমোহর ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে আমাদের গাড়ি সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। তবে আমরা হেটে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। লাশ উদ্ধার করার পর সব কাজ শেষে আমরা ফিরে আসি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদু্যতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।'
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানাতে পেরে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আগুনে একজনের মৃতু্যসহ আনুমানিক ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।