গাজীপুরের শ্রীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের সময় পুলিশের এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) গাড়ি ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আরও দেড় হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে গাজীপুর শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাব জোনের উপপরিদর্শক (এসআই) সুশান্ত কুমার রায় বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন। এর আগে মঙ্গলবার ওই হামলার সময় ২৩ শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আজ বুধবার দুপুরে তাঁদের গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাব জোনাল ইনচার্জ আবদুল লতিফ বলেন, মামলায় কোনো নারী শ্রমিককে আসামি করা হয়নি। তবে তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাঁদেরও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
শ্রমিকদের এ বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় গত সোমবার সন্ধ্যায় এক শ্রমিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। কারখানা সূত্র ও স্থানীয় লোকজনের বরাতে জানা যায়, শ্রীপুরের নয়নপুর নতুন বাজার এলাকায় জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেডের আটতলা থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক জাকির হোসেন (২৭)। পরে রাত ৯টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। জাকির হোসেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে।
পরদিন মঙ্গলবার কারখানার অন্য শ্রমিকেরা সকালে দল বেঁধে কারখানার সামনে অবস্থান নেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, কারখানায় ছুটি চেয়েছিলেন জাকির হোসেন। ছুটি না দিয়ে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে তিনি কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মঙ্গলবার কারখানা ঘেরাও করে ভাঙচুরের চেষ্টা চালান শ্রমিকেরা। তাঁরা কারখানা ভাঙচুর করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন শ্রমিকেরা। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সংঘর্ষে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটা করে।