রংপুর চিড়িয়াখানা চলছে কার্পেন্টার ও নিরাপত্তা প্রহরী দিয়ে। জনবল সংকট, পদোন্নতি, মৃতু্য ও বদলীজনিত কারণে এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নতুন প্রাণি না এলে ইজারাদার হারানো আশঙ্কা করছেন সেখানকার কর্তৃপক্ষ। এতে করে রাজস্ব হারাবে সরকার। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর হনুমানতলায় ২২ দশমিক ৪০ একর জমিতে সরকারি এই চিড়িয়াখানাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি নগরীতে প্রায় তিন যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত চিত্তবিনোদনের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান। সেসময় রংপুরে বেসরকারিভাবে চিত্তবিনোদনের কোন কেন্দ্র ছিলোনা।
ইজারাদার সুমন আক্তার জানিয়েছেন, চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠার পর রংপুর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীদের আনাগোনা ছিল উলেস্নখযোগ্য। সেসময় প্রাণির সংখ্যাও ছিলো বেশি। মৃতু্য ও অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কারণে প্রাণির সংখ্যা এখন অনেক কমে। কিছু প্রাণির আয়ুষ্কাল পেড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় উচ্চ মহল থেকে কর্মকর্তারা পরিদর্শণে এসে প্রাণি দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হলেও কাজে আসেনি। প্রাণির জন্য উচ্চপর্যায়ে লেখালেখি কম হয়নি। তারপরও দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়নি চিড়িয়াখানাটি। এতে করে দর্শনার্থীদের সংখ্যা উলেস্নখযোগ্যহারে কমে গেছে। বর্তমানে এটিতে সিংহ, বাঘ, গন্ডারসহ ৩২ প্রজাতির ২৬০ টি প্রাণি আছে
চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, একজন কার্পেন্টার ও নিরাপত্তা প্রহরী দিয়ে চলছে এখন চিড়িয়াখানা টি। কিউরেটর ও জু্য অফিসার পদটি করা হয়েছে বিলুপ্ত। বর্তমানে কিউরেটরের পরিবর্তে ভেটেরিনারি সার্জনের পদে ডা. মো আম্বার আলী তালুকদারকে সেখানকার অতিরিক্ত দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। জু্য অফিসারের পরিবর্তে ডা. এইচ এম শাহাদতকে সেখানে সংযুক্তি করা হয়েছে। এছাড়া আগের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয়েছে রংপুর চিড়িয়াখানা।
এদিকে, সেখানে অন্যনা্য শূন্য পদগুলো হলো ১ জন করে ভেটেরিনারি সার্জন, উপসহকারী প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা, উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, অ্যানিমেল কেয়ারটেকার, অফিস সহায়ক ও ৫ জন নিরাপত্তা প্রহরী। তবে অস্থায়ী ভাবে ১৫জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এপদগুলোতে জনবল না থাকায় প্রাণিদের সুরক্ষায় বিঘ্নিত ঘটছে বলে জানিয়েছেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন পরিশদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান। তিনি জনবল ও প্রাণির সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি জানান।
রংপুর চিড়িয়াখানার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মো. আম্বার আলী তালুকদার জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিড়িয়াখার প্রধান ফটক ইজারা দেওয়া হয়েছিল ১ কোটি ২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে ছিলো ৪১ লাখ ৪১ হাজার ৬০০ টাকা। তিনি এও জানান, নতুন প্রাণি প্রাপ্তিতে অসংখ্যবার লেখালেখি হয়ে থাকে। ফল শ্রম্নতিতে নতুন প্রাণি আর আসেনা। ফলে দর্শনার্থদের সংখ্যা কমে গেছে। এভাবে চলতে থাকালে আগামীতে ইজারাদার পাওয়া কঠিত হবে। তিনি সরকারি রাজস্ব বাড়াতে নতুন প্রাণি বিশেষ করে জিরাফ, জেব্রাসহ আকর্ষনীয় অন্যন্যা প্রাণি বৃদ্ধির দাবি জানান।