গাজীপুরের শ্রীপুরে দিনের বেলায় নলকূপের পানিতে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে রাতে তিন বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়েছেন ৬জন। এদিকে একই রাতে একটি কারখানায় মাল লুটের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার গভীর রাত ২টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ভেড়ামতলি গ্রামের পাশাপাশি তিনটি বাড়িতে এ চুরির ঘটনা ঘটে। একই রাতে উপজেলার চকপাড়া এলাকায় অবস্থিত সানা এক্সেসরিজ লিমিটেড নামক কারখানায় সিকিউরিটির হাত-পা বেঁধে মালামাল লুট করে ডাকাতদল। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সিকিউরিটি মাসুদ রানা। ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালের কোনো এক সময় বাড়ির নলকূপে চেতনানাশক মিশিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। দুপুরের দিকে নলকূপের পানি পান করার পরপরই ভুক্তভোগীরা অসুস্থ অনুভব করেন। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদের ঘরের দরজা ভেঙে মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। তিনটি পরিবারের মোট চার লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় তিন পরিবারের বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়েছেন। তারা হলেন, ভেড়ামতলি গ্রামের আনিসুর রহমান (৪৫), তার স্ত্রী সালমা আক্তার (৩৫) এবং ছেলে তৌহিদুর রহমান (১০), পাশের বাড়ির মোকছেদ আলী (৫০) ছেলে মাসুদ (৩০) এবং মেয়ে মালা (২৭)।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় প্রতি রাতেই কোনো না বাড়িতে চুরি, লুট হচ্ছে। কারো গবাদিপশু, আসবাপত্র, টাকাপয়সাসহ মূল্যবান জিনিস। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
ভুক্তভোগী আনিসুর রহমান বলেন, 'নলকূপের পানি পান করে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই শরীর ঝিম ঝিম করছিল। বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের সবারই শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। রাত ৮টার দিকে রাতের খাবার শেষে সবাই ঘুমাতে যাই। সকালে ঘুম থেকে দেরি উঠায় পাশের বাড়ির লোকজন ডাকাডাকি ও দরজা ধাক্কা দেয়। পরে ঘুম থেকে জেগে দেখি ঘরের সবকিছু এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে এবং মূল্যবান জিনিস চুরি হয়েছে।' সালমা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, 'আমি দুপুরে খাবার শেষে বাড়ি থেকে কারখানায় যাওয়ার পর থেকেই আমার চোখে ঘুম আসছিল। পরে কারখানা থেকে বাড়িতে ফিরে খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। অচেতন অবস্থায় আমাদের ঘরের দরজা খুলে সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে দৃর্বৃত্তরা।'
সানা এক্সেসরিজ লিমিটেড নামক কারখানার ম্যানেজার আসাদুলস্নাহ বলেন, বুধবার গভীর রাত ২টার দিকে ৬/৭ জনের একদল ডাকাত কারখানায় প্রবেশ করে। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কারখানার নিরাপত্তাকর্মীর হাত-পা খাটের সঙ্গে বেঁধে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এ সময় কারখানার বিভিন্ন কক্ষের তালা ভেঙ্গে টাকাসহ ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে কাজ চলছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'