যশোরের বাঘারপাড়ায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে গেছে। এসময় স্বেচ্ছাসেবী ঔই সংগঠনটির নেতাকর্মীদেরও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সংগঠনের তিনজন আহত হয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শনিবার বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। মারধর ও হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকালে বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে বাঘারপাড়া সমাজ কল্যাণ ক্লাব নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ছিলো। অনুষ্ঠানে কেককাটা ও হতদরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরণের আয়োজন রাখা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার। অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাফিস ইকবাল ঈসার নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রদলের নেতাকর্মী অনুষ্ঠান স্থলে আসেন। এসময় তারা অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠান বন্ধ না করায় তারা অনুষ্ঠান স্থলে হামলা চালান। এসময় তাদের হামলায় সংগঠনটির তিন সদস্য আহত হন। হামলাকারীরা একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করেন। হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সমাজ কল্যাণ ক্লাবের সভাপতি নাফিস খান লিটন জানান, 'সংগঠনটির পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদের চত্ত্বরে শোভাযাত্রা, কেক কাটা ও কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রধান অতিথি ছিলেন। ইউএনও আসার আগে ছাত্রদলের আহ্বায়কের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা উপজেলা গেটে আমাদের কয়েকজন সদস্যকে মারমিট করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি আমরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তারা আমাদের উপর চড়াও হন। আমাদের কয়েকজনকে মারপিট ও একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেন। এই ঘটনায় আমাদের তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসিকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।'
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাফিস ইকবাল ঈসা বলেন, 'হামলার ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। তবে ছাত্রদলের কোন নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি আমিও কয়েকদিন যশোরের বাইরে। এই ঘটনার ছাত্রদলের কোন নেতাকর্মী জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি।'
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলীম জানান, 'কম্বল বিতরণের বিষয়টি পুলিশ আগে থেকে কিছুই জানত না। হামলার ঘটনা শুনে পুলিশ তাৎক্ষনিক ফোর্স পাঠিয়ে তা নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার জানান, 'স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে আমার কাছে খবর আসে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। ওই সময় আমি আমার কার্যালয়েই ছিলাম। পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে এসে পরিবেশ শান্ত করে।'