বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

তাহিরপুরে ৫ ক্লোজার বাঁধ নির্মাণে টাকা দিয়েও মিলছে না মাটি

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
তাহিরপুরে ৫ ক্লোজার বাঁধ নির্মাণে টাকা দিয়েও মিলছে না মাটি
তাহিরপুরে ৫ ক্লোজার বাঁধ নির্মাণে টাকা দিয়েও মিলছে না মাটি

তাহিরপুরে মাটিয়ান ও দরুন হাওড়ের ৫ ক্লোজার বাঁধে টাকা দিয়েও মিলছে না মাটি। মাটি না পাওয়ায় দুই হাওড়ের ক্লোজার বাঁধ নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন প্রকল্প সভাপতিরা। বাঁধের আশপাশে মাটি না থাকায় অনেক দূরে বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে বেশি দামে মাটি কিনে কোনো রকম কাজ শুরু করছেন। এতে করে পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) মাটি বাবাদ যে খরচ ধরা হয়েছে তার থেকে দ্বিগুন তিনগুন খরচ বাড়ছে। ফলে প্রকল্প সভাপতিরা লাভের মুখ দেখার চেয়ে লোকশানের আশংকা প্রকাশ করছেন। সেই সঙ্গে ২৮ ফ্রেব্রম্নয়ারী যথা সময়ে কাজ সমাপ্ত করতে পারবেন কিনা তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়।

জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে তাহিরপুরে শনি, মাটিয়ান, মহালিয়াসহ ২৩টি ছোট বড় হাওড়ে বোরো ফসল রক্ষায় পাউবো হাওরপাড়ের কৃষকদের প্রকল্প দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে আসছে। তখন থেকে প্রকল্প সভাপতিরা বাঁধের আশপাশের কান্দাগুলো থেকে ইচ্ছে মত মাটি কেটে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন। এ ভাবে ৩ থেকে ৪ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ২৩-২৪ সালে এসে বিভিন্ন বাধে মাটি সংকট দেখা দেয়। ২৪-২৫ সালে এ সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। যে কারনে এখনো কাজ শুরু করতে পারেননি প্রকল্প সভাপতিরা। বিষয়টি নিয়ে এখনই চিন্তত হয়ে পড়ছেন বিভিন্ন হাওড়পাড়ের কৃষক।

সরজমিন উপজেলার মাটিয়ান হাওর পার কামারকান্দি, বড়দল মেশিনবাড়ি, গাজিপুর, জামলাবাজ এবং দরুন ক্লোজার বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা যায়- বাঁধের আশপাশের স্থানগুলো গর্ত। গর্তগুলোতে এখনো পানি। বাঁধের দুইপাশে বা আশপাশে কোথাও মাটি নেই। আশপাশে মাটি না থাকায় প্রকল্প সভাপতিরা অনেক দূর থেকে বিভিন্ন কৃষকরে ফসলি জমি কিনে ড্রাম্প ট্রাক দিয়ে মাটি এনে বাঁধে ফেলছেন। এতে করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে পরিমাণ মাটি বরাদ্দ দিয়েছে তা থেকে খরচ বেড়ে যাচ্ছে দ্বিগুন তিনগুন। বর্তমানে প্রকল্প সভাপতিরা না পারছেন প্রকল্প ছেড়ে দিতে, না পারছেন কাজ করাতে।

বড়দল মেশিনবাড়ি ক্লোজার বাধের সভাপতি আশরাফুল আলম বলেন, 'আগামী ১৫-২০ দিন পর হলে কিছু মাটি পাওয়া যেত। এখন মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। আমি একজনের কাছে থেকে মাটি কিনে বাঁধের কাজ শুরু করেছি।'

একই অবস্থার কথা জানালেন দরুন হাওড় ক্লোজার বাধের প্রকল্প সভাপতি দেবাশীষ সরকার। তিনি জানান, তিনি মাটির জন্য কাজ করাতে হিমশিম খাচ্ছেন। টাকা দিয়ে কিনেও মাটি পাচ্ছেন না।

তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড তাহিরপুর মনিটরিং কমিটির সদস্য জুনাব আলী জানান, দরুন ক্লোজার বাঁধের প্রকল্প সভাপতি ৩ হাজার টাকে ধরে প্রতি হাজার মাটি কিনে বাঁধের কাজ করাচ্ছেন। আমি জামালগড়ের এক কৃষকের কাছ থেকে মাটি কিনে দিয়েছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড তাহিরপুর দায়িত্বরত উপ-সহাকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন বলেন, মাটি সংকট রয়েছে, এ জন্য এ বছর বাঁধের কাজ শেষ করতে নির্ধারিত সময় থেকে একটু বিলম্ব হতে পারে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড তাহিরপুর মনিটরিং কমিটির সভাপতি আবুল হাসেম বলেন, 'মাটি সংকটের কথা আমাকে অনেকে বলেছেন। অনেকে টাকা দিয়ে মাটি কিনে কাজ করাচ্ছেন এতে করে খরচ বাড়ছে বিষয়টি আমি জেলা মনিটরিং কমিটির মিটিংয়ে উত্তাপন করব।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে