যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম গাজীপুর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে গরিব, দুস্থ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র প্রদানের জন্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী বন্ধুরা ১১ জানুয়ারি শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় সকাল-সন্ধ্যা হোমিও হল, উত্তর বিলাসপুর গাজীপুরে মিলিত হয়। স্থান নির্ধারণ করা হয় গাজীপুরের ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের হলরুম। প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতিত্ব করেন ডা. খোন্দকার শাহিদুল হক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন তপন কুমার চক্রবর্তী। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. নুরুজ্জামান, অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী, টাকশাল ও উপদেষ্টা, যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম, গাজীপুর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. আখতার হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গাজীপুর; মোহা. ইব্রাহিম হোসেন, টাকশাল; মো. সিহাব উদ্দীন, টাকশাল; মো. সোহেল রানা, টাকশাল ও সাইফুজ্জামান, বিওএফ। সংগঠনের সম্মানিত সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. রাসু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূরে আলম সিদ্দিকীসহ ক্রীড়া সম্পাদক মো. সেকান্দর হোসেন নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুক জিতু, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক দন্ত্যন লিটন, সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুলস্নাহ আল জুবায়ের তুষার, সহ-অর্থ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন টুটুল, সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. ইসরাফিল হোসেন, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সম্মানিত সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মো. মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শেখ রিমায়েত হোসেন, মো. শফিকুল ইসলাম খান (এসআই খান), মো. শিমুল খান প্রমুখ।
সভাপতি সম্মানিত উপস্থিতিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সভার কাজ শুরু করেন। অতঃপর সঞ্চালক তপন কুমার চক্রবর্তী জানান যে, গত ১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সভায় গরিব ও দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তুতিমূলক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপস্থিত সদস্যদের মতামত দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. রাসু। তিনি বলেন, দেশে বয়ে চলা তীব্র শৈত্যপ্রবাহে এবং শীতজনিত রোগে গরিব ও দুঃস্থ জনসাধারণ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পুষ্টিহীন মানুষ সহজেই শীতে কাবু হয়ে পড়ে। শীতের তীব্রতায় শীতজনিত নানা রোগে এই দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় যাদের সামর্থ্য আছে তাদের শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য পাশে দাঁড়ানো উচিত। যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম সব সময়ই মানবিক কাজে এগিয়ে থাকে, তাই শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপনের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
অতঃপর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূরে আলম সিদ্দিকী তার বক্তব্যে বলেন যে, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নয়, বরং মানবিক চেতনা থেকে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক। দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গরমের সময় বেশি গরম পড়ে আবার শীতের সময় প্রতি বছর অতিতের রেকর্ড ভঙ্গ হয়। শীতকাল সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কষ্টের কারণ। তিনি বিপন্ন ও ?দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে বক্তব্য শেষ করেন। মো. ওমর ফারুক জিতু বলেন, শীতে বয়স্ক ও শিশুরা বেশি ভোগান্তির শিকার হয়। তিনি প্রত্যেককে তার সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্তদের প্রতি সহায়তার হাত প্রসারিত করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, তার ব্যক্তিগত গাড়িটি ফ্রেন্ডস ফোরাম বন্ধুদের পরিবারের কেহ অসুস্থ হলে তার গাড়িটি হাসপাতালে রোগি আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। সেখানে তিনি নিজেই চালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রম্নতিও ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, যে, যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরামে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই তিনি সমাজের প্রতি আরও বেশি দায়বদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এই ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর। তিনি শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম, গাজীপুর জেলার নবগঠিত কমিটির মিলনোৎসব করার জন্যও প্রস্তাব রাখেন।
তারপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তার বক্তব্যের শুরুতে সম্মানিত সদস্যদের সালাম ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানান। উপদেষ্টা হিসেবে রাখার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বারবার উলেস্নখ করেন যে, এই সংগঠনের সভাপতি একজন সফল সংগঠক। তার নেতৃত্বে এবং সবার সহযোগিতায় এ পর্যন্ত এই সংগঠন থেকে যতগুলো কর্মসূচিত বাস্তবায়ন করা হয়েছে তা শতভাগ সফল হয়েছে। এই সংগঠনে যুক্ত থেকে সামাজিক ও মানবিক কাজ বাস্তবরূপটা বুঝতে পেরেছেন। সক্রিয়ভাবে এই সংগঠনের যুক্ত থাকার প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে সংগঠনের সাফল্য কামনা করে বক্তব্য শেষে করেন।
এ পর্যায়ে সভাপতি গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করলে তপন কুমার চক্রবর্তী, মো. নূরে আলম সিদ্দিকী, মো. ওমর ফারুক জিতু, মো. রাসু, মিজানুর রহমান, আব্দুলস্না আল জুবায়ের তুষার, মো. নূরে আলম সিদ্দিকী, দন্ত্যন লিটন, মো. ইব্রাহিম, মো. সোহেল, মো. সিহাব, মো. সাইফুজ্জামান, মো. আখতার হোসেন ও মো. নুরুজ্জামানসহ উপস্থিত সবারই আর্থিক ও সার্বিক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে অনুষ্ঠান বায়স্তবায়নের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও মতামত প্রদান করেন।
অতঃপর সবার মতামতের ভিত্তিতে অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য নিম্নোক্তভাবে দায়িত্ব বণ্টনসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:
হলরুম প্রস্তুত ও নিয়ন্ত্রণ উপকমিটি: আহ্বায়ক দন্ত্যন লিটনসহ মো. ওমর ফারুক জিতু, সেকান্দর হোসেন নাহিদ, আরমান হোসাইন, তামজিদুর রহমান ও মিশু।
অতিথি আমন্ত্রণ ও আপ্যায়ন উপকমিটি: আহ্বায়ক মো. নুরে আলম সিদ্দিকী, মো. জিলস্নুর রহমান, আফরোজা আখতার সানি, মাসুমা আক্তার মিম ও সিন্থিয়া আক্তার।
অনুষ্ঠানের চিত্রধারণ ও শুভেচ্ছা প্রদান উপকমিটি: আহ্বায়ক তপন কুমার চক্রবর্তী, মো. আওলাদ হোসেন, মো. ইসরাফিল হোসেন, আব্দুলস্নাহ আল জুবায়ের তুষার, ও আলমগীর হোসেন টুটুল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন উপকমিটি: আহ্বায়ক মো. আব্দুল মান্নান, সুবর্ণ কুমার মজুমদার, তপতী চক্রবর্তী, শাম্মী আক্তার ও তামান্না আখতার।
শীতবস্ত্র সংগ্রহ উপকমিটির আহ্বায়ক মো. রাসু, বিএম নাসির উদ্দিন, শেখ রিমায়েত হোসেন, আল জাব্বির ও মো. মিজানুর রহমান।
অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয়নির্বাহ উপকমিটির আহ্বায়ক মো. নুর আক্কাস, মো. আখতার হোসেন, মো. শফিকুল ইসলাম খান, ডা. সাদিয়া সুলতানা ও এহেতে শামুল হক সুমন।
সার্বিক তদারকি ও দিকনির্দেশনাবিষয়ক উপকমিটিতে আছেন উপদেষ্টা পরিষদের মো. আবুল হোসেন, মো. নুরুজ্জামান, এস এ কে রেজাউল করিম, মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, জলি চৌধুরী।
শোক প্রস্তাব গ্রহণ : ফোরামের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বি এম নাসির উদ্দিনের মাতা মোছা. পরিজান নেজা গত ২২ ডিসেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি মৃতু্যকালে ৬ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে যান। মরহুমার বড় ছেলে বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে এবং অন্যান্যরা দেশের বিভিন্ন স্তরে সরকারি চাকরি ও ব্যবসা করছেন। মোছা. পরিজান নেজার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারে প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
সুস্থতার জন্য দোয়া : ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক সাদিয়া আক্তার তার মাতৃবিয়োগের পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং বর্তমানে শারীরিক ও মানসিকভাবে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া এবং প্রয়োজনে চিকিৎসায় ফোরামের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন: সভা চলাকালীন সময়ে বিভাগীয় সম্পাদক জ্যোতিষ সমাদ্দার বাবু, ভিডিও কলের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও দিক নির্দেশনা প্রদান করায় তাকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। মো. ওমর ফারুক জিতু সবার জন্য পিঠা, মিষ্টান্ন ও চায়ের আয়োজন করায় তাকেও ধন্যবাদ জানানো হয়। পরিশেষে সভাপতি অর্পিত দায়িত্বের বাইরেও সবাইকে অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে যথাসাধ্য প্রশংসনীয় অবদান রাখার আহ্বান জানান এবং পুনরায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
সভাপতি
ফ্রেন্ডস ফোরাম গাজীপুর।