বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

আলোচনায় ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব

পরিবারকে বিএনপির রাজনীতিতে আনতে চান শ্রাবণ ব্যক্তি পছন্দ নয়, পরীক্ষিতদের নেতৃত্বের পক্ষে জুয়েল
ম যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
আলোচনায় ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব

আসন্ন সরকারবিরোধী আন্দোলনে সামনে রেখে সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করেছে বিএনপি। কমিটিতে শীর্ষ পদ পাওয়া রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ পুরো পরিবার আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকায় রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ বিষয়ে শ্রাবণের ইচ্ছা পরিবারকে জাতীয়তাবাদী দলের পতাকাতলে আনার। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের লক্ষ্য হচ্ছে ব্যক্তি পছন্দের নয়, ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের সামনে আনবেন যাতে জাতীয় আন্দোলন সফল করতে ছাত্রদল কার্যকরী ভূমিকা পালন করেত পারে।

রোববার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সুপার ফাইভ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন এ কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে। নেতৃত্ব পাওয়ার পর অনুভূতি ও লক্ষ্যসহ নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া দেন এই দুই নেতা।

রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ এর আগের কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় জড়িত। আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হয়ে কীভাবে ছাত্রদলের রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেজ জীবনে ছাত্র রাজনীতির যে সংস্কৃতি চলমান ছিল তাতে ছাত্রদলের রাজনীতিতেই বেশি আকৃষ্ট হন। এ দলের নেতাকর্মীদেরই অত্যন্ত মেধাবী, স্মার্ট ও রুচিশীল হিসেবে মনে হওয়ায় ছাত্রদলকে বুকে লালন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন আপনার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ তথ্য সঠিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত ১০ বছর যাবৎ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। কারণ তারা ভিন্ন মতাদর্শের রাজনীতিকে বিশ্বাস করে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সঙ্গে আদর্শিক দূরত্ব রয়েছে। তাদের হয়তো এমন ধারণা যোগাযোগ রাখলে তাদের রাজনীতিতে ক্ষতি হতে পারে। তাই তারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এটা শুধু এই পরিবার নয় পুরো দেশের চিত্র। এখন একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত দেশকে বিভক্ত করা হয়েছে। ঘরে ঘরে কোন্দল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবার যেহেতু আওয়ামী লীগ করে তাই তাদের চরিত্রও আওয়ামী লীগের বাইরে কিছু হবে না। সংগঠনের কারণে পরিবার বিসর্জন দিলেও দল সেই আত্মত্যাগের মূল্যায়ন করায় গর্বিত শ্রাবণ।

ছাত্রদলের মতো এত বড় সংগঠনের সভাপতি হয়েছেন বিষয়টি পরিবারকে অবহিত করেছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মা-কে টেলিফোনে জানিয়েছি। তার মাধ্যমে পরিবারকে বিএনপির আদর্শের রাজনীতিতে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছি। তাদের জাতীয়তাবাদী দলের পতাকাতলে আসার জন্য বলেছি।'

সংগঠন শক্তিশালী করার বিষয়ে শ্রাবণ বলেন, তাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জই হচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ করা, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা এবং সাধারণ ছাত্র সমাজের দাবি ও প্রত্যাশাকে পূরণ করা।

অন্যদিকে নতুন সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এর আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এবার সাধারণ সম্পাদক হলেন। ছাত্রদলের বিষয়ে তার আগামী দিনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জুয়েল বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন একটা সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। একটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মধ্যে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের রাজনীতি করতে হচ্ছে। এরমধ্যে থেকেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করতে হচ্ছে। তবে ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে এরই মধ্যে ছাত্রদলের সাংগঠনিক ভিত্তিও তৈরি হয়েছে। সারাদেশে থানা, উপজেলা, পৌরসভা এবং কলেজ কমিটির প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটিগুলোর কাজও অগ্রসরমাণ আছে। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত পুনর্গঠিত হয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সংগঠন শক্তিশালী। এখন সবাইকে নিয়ে এই সংগঠন আরও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হবে। সবমিলে মেধাবী, নিবেদিতপ্রাণ এবং রাজপথে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে তাদের নিয়ে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। কোনো ব্যক্তি পছন্দ কিংবা অংশ বিশেষের পছন্দ বাস্তবায়ন করা হবে না। ব্যক্তি পছন্দের কোনো প্রতিফলন ঘটবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে