শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের

সেই সংবাদে জাতিকে বিভক্ত করার উসকানি রয়েছে

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের যৌথসভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের -যাযাদি

'মাছ, মাংস ও চালের স্বাধীনতা'র বিষয়ে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোতে এক দিনমজুরের নামে যে বক্তব্য ছাপা হয়েছে, সেটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, 'প্রথম আলোর সেই সংবাদটি মিথ্যা'।

তিনি বলেছেন, 'স্বাধীনতা দিবসের দিন অন্যান্য দেশে দেখি, সে দেশের গণমাধ্যমে উদ্দীপনামূলক, অনুপ্রেরণামূলক বাণী দিয়ে নতুনভাবে দেশকে ভালোবাসার উৎসাহ জোগায়। অথচ দৈনিক প্রথম আলো তাদের নিজস্ব ও প্রভুদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য জাতির সামনে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে তরুণ প্রজন্মের মনে হতাশা ক্ষোভ সৃষ্টি করার জন্য উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে। যেখানে সুস্পষ্টভাবে স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতিকে বিভক্ত করারর উসকানি রয়েছে এবং দেশের নৈরাজ্য, অশান্তি সৃষ্টি করে এটি মহলের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এটা দেশের কোনো বিবেকবান মানুষের না বোঝার কথা নয়।'

শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়স্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'স্বাধীনতা দিবসের দিনে এ ধরনের সাংবাদিকতা ফৌজদারি অপরাধ। প্রথম আলো বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধারে কাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশবাসীর কাছে জনপ্রিয়। মানুষ ভালোবেসে টানা তিন মেয়াদে এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। কিন্তু প্রথম আলো জনপ্রিয় সরকারকে হেয় করার জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে ছোট করার চেষ্টা করছে।'

তিনি বলেন, বিশেষ দিনে বিশেষ এজেন্ডা সেটিংয়ের মাধ্যমে প্রথম আলো মহান মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্যকে অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে এবং বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করছে। এ ছাড়া বর্তমান সরকারকে প্রথম আলো তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৪

মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ তা সফল হতে দেবে না। ষড়যন্ত্র করলে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সংবাদটি যে ভাষায় একটি দিনমজুরের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে সেটি কি সাধারণ দিনমজুরের বক্তব্য, না কি প্রথম আলোর দেওয়া বয়ান- সেটি ভাববার সময় এসেছে। ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশনার দায় পত্রিকাটির সম্পাদক কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। অথচ ক্ষমা না চেয়ে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে পত্রিকাটি। তরুণ প্রজন্মকে উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদদের আত্মত্যাগ, লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর এ উদ্যোগ জাতিসত্তাবিনাশি অপতৎপরতা নয় কি? স্বাধীনতা দিবস তরুণ প্রজন্মের কাছে দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধ সৃষ্টির একটি অনন্য দিন। অথচ এই দিনে পলিটিক্যালি সিলেকটেড বিশেষ এক এজেন্ডা সেটিংয়ের উদ্দেশ্যে ওই সংবাদটি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অর্জনকে অস্বীকার করার শামিল নয়?'

রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারের বিবৃতি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এই প্রতিষ্ঠান বলছে- সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্যই সরকার এ ধরনের মামলা করেছে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে। আমি প্রথমে বলতে চাই সরকার কিন্তু এখানে মামলা করেনি। মামলা সাধারণ একজন নাগরিকও করতে পারে। সরকার মামলা করেছে এটা সর্বাগ্রে মিথ্যা। আর ভয় দেখানোর কথা যে বলা হচ্ছে- কাকে ভয় দেখাব? যাকে ভয় দেখানোর কথা বলা হয়েছে- তিনিই এই দেশের মানুষকে ভয়ের মধ্যে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাজনীতিকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশের সাংবিধানিক সরকারকে ভয় দেখিয়েছিলেন আসংবিধানিক সরকারের পক্ষে ওকালতি করে। তারপরও কি ওয়ান-ইলেভেন আমাদের মনে নেই? কে কাকে ভয় দেখায়। তিনি বিরাজনীতির ফায়সালা নিয়ে পত্রিকার রিপোর্ট করেছেন আমরা কি ভুলে গেছি? '

যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে