বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
৯৯৯-এ ভাইয়ের কল

পাচারের হাত থেকে রক্ষা পেলেন তরুণী

দুই পাচারকারী গ্রেপ্তার
যাযাদি রিপোর্ট
  ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০

জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তায় এক ভাই তার বোনকে নিশ্চিত পাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওই তরুণীকে দুবাই পাচার হওয়া থেকে রক্ষা করেছে পুলিশের একটি দল। এ সময় মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন তারা। গ্রেপ্তার দুইজনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. মনজুর রহমান জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একজন কলার জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে তার বোন পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে কান্নাকাটি করতে থাকেন। তার বোনকে পাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে পুলিশের সহায়তা চান। ওই কলার নিজেকে কলেজের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেন।

সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান, কলটি রিসিভ করে কনস্টেবল মিজানুর রহমান দ্রম্নত বিমানবন্দর থানা ও ইমিগ্রেশন পুলিশকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের ডিসপাচার এএসআই আসাদুজ্জামান সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও কলারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকেন। একই সঙ্গে তিনি পুলিশি তৎপরতার খোঁজ-খবরও নেন।

ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহনাজ বেগম জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সঙ্গীয় ফোর্সসহ পাচার হতে যাওয়া ওই নারীর বিমান যাত্রা স্থগিত করতে ব্যবস্থা নেন এবং ওই নারীকে উদ্ধার করে ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসে আনা হয়।

ইমিগ্রেশন পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ওই নারীর ভাই ও স্বামীসহ পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা সেখানে হাজির হন। পরে ওই নারীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এমন ঘটনায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন তারা। তারা একে-অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন ঢাকার খিলক্ষেত মধ্যপাড়ার মৃত আবদুল করিম বেপারির ছেলে আবদুল খালেক (৪৩) ও কুমিলস্না জেলার বরুড়া থানাধীন সরাপতি গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে ফয়েজুলস্নাহ সবুজ (৫৩)।

জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার পাচার হতে যাওয়া ওই নারীর ভাইয়ের বরাত দিয়ে জানান, বোনের বিদেশ যাওয়া নিয়ে তার ছোট ভাইয়ের আগাগোড়াই সন্দেহ ছিল। তার ২৬ বছর বয়সি বড় বোন এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে দুবাই যাচ্ছিলেন। দুবাইয়ে পার্লারের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয় তার বোনকে। ভিসার কপি দেখে ভাইয়ের সন্দেহ হয়। তিনি ইউএই দূতাবাসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভিসাটি ভুয়া। কিন্তু ততক্ষণে প্রতারক চক্রের সঙ্গে তার বোন রওনা দিয়ে বিমানবন্দরে চলে গেছেন। তার বোনের কাছে কোনো মোবাইল ফোন ছিল না। রাত ৯টায় তার বোনের দুবাইয়ের উদ্দেশে বিমানে যাত্রা করার কথা। উপায়ান্তর না দেখে ওই ভাই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। তারই দ্রম্নততার সঙ্গে উদ্যোগ নিয়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয় ওই নারীকে।

পুলিশ জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মানব পাচারের চেষ্টার অভিযোগে মঙ্গলবার দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে