টাঙ্গাইলের সন্তোষের ওবায়দুলস্নাহ আল ওবায়দি সোহরাওয়ার্দী মাতৃসদন ও হাসপাতালটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে অন্যত্র সরানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর এতেই ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে যে কোনো সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তবে 'মাতৃসদন ও হাসপাতালটি' মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে রাখার দাবিতে বৃহস্পতিবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ১৯৫৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী 'ওবায়দুলস্নাহ আল ওবায়দি সোহরাওয়ার্দী মাতৃসদন ও হাসপাতাল'টি তৎকালীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর প্রতিষ্ঠা করেন। নানা আন্দোলন-সংগ্রামের নীরব সাক্ষী ওই হাসপাতাল। অবিভক্ত পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সন্তোষ ও আশপাশের এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করছেন। হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি সন্তোষ থেকে অন্যত্র সরানোর পাঁয়তারা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে হিসাব বিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের
অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে বহিরাগতদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কয়েক দফা বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। এরপর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাছুম আহমেদ জানান, 'হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সন্তোষ ও এর আশপাশের লোকজন সহজে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি সন্তোষ থেকে অন্যত্র সরানোর পাঁয়তারা করছে। জানতে পেরে এলাকাবাসী জোটবদ্ধ হয়েছে। তারা কোনোভাবেই এই হাসপাতালটি অন্যত্র সরাতে দেবে না।
তিনি আরও জানান, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে বাইরে এসে এলাকার পাড়া-মহলস্নায় হামলা চালাচ্ছে। একাধিক লোকজনকে মারধর করেছে। হাসপাতালটি অন্যত্র সরানোর অংশ হিসেবে প্রতিনিয়ত তারা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের যন্ত্রণায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক হোসেন জানান, তারা কোনোভাবেই হাসপাতালটি অন্যত্র সরাতে দেবেন না। এলাকাবাসী হাসপাতালটি সন্তোষ অথবা এর আশপাশে রাখার দাবি জানিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ডক্টর মো. ফরহাদ হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, তার কাছে দেওয়া আবেদনটি তার হাতে এসে পৌঁছায়নি। কাগজটি হাতে পেলে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।