রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
মন্তব্য বিএনপিপন্থি শিক্ষক ফোরামের

জাবি উপাচার্য নিয়োগে অর্থ লেনদেন সিনেটের চূড়ান্ত অসম্মান

জাবি প্রতিনিধি
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
জাবি উপাচার্য নিয়োগে অর্থ লেনদেন সিনেটের চূড়ান্ত অসম্মান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রভাব খাটিয়ে উপাচার্যকে চেয়ারে বসিয়েছেন বলে একটি অডিওতে স্বীকার করেছেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের চূড়ান্ত অসম্মান হয়েছে- এমন মন্তব্য করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপিপন্থি

শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বুধবার রাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন নেতারা।

বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা বলেন, 'গত বছরের ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সর্বাধিক ভোট পেয়েও বিজয়ী প্রার্থী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনৈতিক অর্থ লেনদেনের কারণে উপাচার্য হতে পারেনি।'

এতে আরও বলা হয়, 'অনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থের বিনিময়ে নারী শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও নিয়োগে বেআইনি প্রভাব বিস্তারের অপরাধে অভিযুক্ত "একজন শিক্ষক" উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছেন বলে নিজেই স্বীকার করেছেন। তার অনুগ্রহে উপাচার্য চেয়ারে বসে তাকেই ভুলে গেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তার এই স্বীকারোক্তির ফলে জাবিতে আর্থিক অনিয়মের যে অভিযোগ ইতোপূর্বে উঠেছিল, তা মজবুত ভিত্তি পেল। এছাড়া অভিযোগ সত্য হলে বর্তমান উপাচার্য তার পদে থাকার নৈতিক ভিত্তি হারিয়েছেন।'

নেতারা আরও বলেন, ইতোপূর্বে প্রশাসনপন্থি একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। তবে এর সুষ্ঠু সুরাহা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। এর আগে, শিক্ষক জনির বিরুদ্ধে একই বিভাগের একাধিক ছাত্রীকে শিক্ষক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ ওঠে। তাছাড়া গত বছরের ২১ নভেম্বর মাহমুদুর রহমান জনি ও একই বিভাগের প্রভাষক আনিকা বুশরা বৈচির একটি অন্তরঙ্গ ছবি (সেলফি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৮ ডিসেম্বর জনির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপনের পর প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, এ ঘটনার সত্যতা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষক জনিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চিন্তা করছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর কুরিয়ার যোগে একটি খামে উপাচার্যকে গালিগালাজ করার অডিও ক্লিপ সংবলিত ডিভিডি, একটি দায়মুক্তিপত্র প্রত্যাহারের আবেদন ও একটি উড়োচিঠি সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়। ৫২ সেকেন্ডের ওই অডিও ক্লিপে মাহমুদুর রহমান জনিকে 'অস্বাভাবিক' কণ্ঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার-পাঁচটা মুখ শেষ করে দেবেন বলে হুমকি দেন তিনি। তার কারণেই অধ্যাপক মো. নূরুল আলম উপাচার্যের চেয়ারে বসেছেন বলে অডিওতে মন্তব্য করেন শিক্ষক জনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে