শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
চট্টগ্রাম-২

ফটিকছড়িতে লড়াই দুই মাইজভান্ডারীর

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ফটিকছড়িতে লড়াই দুই মাইজভান্ডারীর

বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের শরিক জোট থেকে দুইবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। এছাড়াও আরও দুইবারসহ ওই আসনে মোট চারবারের এমপি তিনি। কিন্তু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চাচার পথে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারেন তার ভাতিজা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী। চাচা নজিবুল বাশারের পাশাপাশি নতুন নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সভাপতি সাইফুদ্দীনও একই আসন থেকে এবার নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট থেকে

চাচা-ভাতিজা দু'জনের একজনকে এই আসন থেকে সমর্থন জানানো হতে পারে। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সানি। তিনি গতবারও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জোটের কারণে তাকে সরে দাঁড়াতে হয়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, 'রাজনীতিতে সুষ্ঠু ধারা ফিরিয়ে আনা, অবহেলিত ফটিকছড়ির শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, পর্যটনসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করার জন্য এবারও নির্বাচন করব। ফটিকছড়িবাসী চায় আমি নির্বাচন করি।' চাচা নজিবুল বশরের মনোনয়ন নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করব। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হয়নি।'

গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা যায়।

চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় উপজেলা ফটিকছড়ি। মাইজভান্ডার শরিফের কারণে দেশব্যাপী এই উপজেলার আলাদা পরিচিতি রয়েছে। তরীকত ফেডারেশন ও সুপ্রিম পার্টির প্রধান দু'জনই সুফি ও সুন্নি মতাদর্শী তরিকার পরিচিত মুখ। সারা দেশের মতো ফটিকছড়িতেও দুই ভান্ডারীর ভক্ত-মুরিদ রয়েছে। চাচা-ভাতিজা একই আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ ভোটারের পাশাপাশি ভক্ত-মুরিদরা।

এদিকে, ভাতিজার প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, নির্বাচনে যে কেউ দাঁড়াতে পারেন। এটি তার অধিকার। সেদিকে নজর দেওয়ার সুযোগ নেই। ফটিকছড়ির উন্নয়নে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। তাই জনগণ এবারও তাকে নির্বাচিত করবেন। নৌকার জন্য ইতোমধ্যে আবেদন জমাও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

ফটিকছড়ির বাসিন্দা ও মাইজভান্ডারের ভক্তরা জানিয়েছেন, দরবারের ভক্ত হিসেবে এখান থেকে যিনিই প্রার্থী হন, তাকে তারা ভোট দেন। কিন্তু এবার দু'জন হওয়ায় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, সে অপেক্ষায় আছেন তারা।

এদিকে নৌকা মনোনয়ন পাওয়া সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ফটিকছড়িবাসীর দাবি দলীয় প্রার্থী পাওয়া, এটা সবার প্রাণের দাবি। এখনো জোটের সঙ্গে দলের কোনো কথা হয়নি। যখন যেটা হয় তখন সেটা দেখা যাবে। এখনো এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।

তবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খাদিজাতুল আনোয়ার সনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও লড়াইয়ে থাকতে পারেন ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র এমপি পদপ্রার্থী হোসাইন মো. আবু তৈয়ব। নির্বাচন করার জন্য তিনি সম্প্র্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

এবার ফটিকছড়ি আসনটি থেকে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দিলে যাচাই-বাছাই শেষে মো. শাহজাহান, মো. নওশের ও মো. রিয়াজের ১% ভোটারের স্বাক্ষর ত্রম্নটিপূর্ণ হওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে