শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক

সুইজারল্যান্ড থেকে এক কার্গো এলএনজি কিনছে সরকার

যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
সুইজারল্যান্ড থেকে এক কার্গো এলএনজি কিনছে সরকার

সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদু্যৎ ও সুইজারল্যান্ডের একটি কোম্পানি থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি, কুশিয়ারা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পূর্ত কাজ যৌথভাবে দুটি কোম্পানিকে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রয় পদ্ধতিতে রোমানিয়া থেকে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনাসহ বেশ কয়েকটি ক্রয়প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব ক্রয়াদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলাকে (২০২৪ সালের প্রথম) এলএনজি সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের কাছ থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৯১ কোটি ৭৩ লাখ ২০৮ টাকা।

জানা গেছে, এলএনজি আমদানির জন্য বেশকিছু দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু সরকার সংক্ষিপ্ত সময়ে এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা করে। এজন্য ২০১৯ সালে খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তির (এমএসপিএ) পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২১ সালে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং দুবাইয়ের চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয় চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর ওপর ৮৩৮ দশমিক ৪০ মিটার সেতু নির্মাণের পূর্ত কাজ যৌথভাবে এমবিইএল এবং এসইএলকে দিয়ে করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। এতে ব্যয় হবে ১৪৪ কোটি ২০৯ টাকা।

সাঈদ মাহবুব খান জানান, প্রতি লিটার প্রায় ১৫৫ টাকা দরে রোমানিয়া থেকে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রির লক্ষ্যে এ তেল কেনা হবে।

এর আগে ভারত থেকে প্রায় একই দামে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেলা কেনা হয়। ভারতের গ্রিন নেশন বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপারসের কাছে থেকে এ সয়াবিন তেল কেনার পর এবার রোমানিয়ার অ্যালোনাইট মেডিটাইম অ্যান্ড ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড অ্যান্ড মার্ক এক্সিম লিমিটেড থেকে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

সাঈদ মাহবুব খান বলেন, টিসিবির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সরকারি ক্রয় পদ্ধতিতে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে মোট ব্যয় হবে ২৮৩ কোটি ২১ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

এর আগে গত ২২ আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ভারতের গ্রিন নেশন বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপারসের কাছ থেকে কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১৪৩ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। প্রতি লিটারের খরচ ধরা হয় ১৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।

তারও আগে গত ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে টিসিবির জন্য ৩৪৪ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সয়াবিন তেল এবং মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭৭ কোটি ১৪ লাখ ৫০ টাকার তেল এবং ২৬৭ কোটি ৭১ লাখ ৯০ হাজার টাকার মসুর ডাল ছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে টিসিবির জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৭৭ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া স্থানীয় উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১১ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। ১০০ টাকা কেজি দরে এ ডাল কিনতে মোট খরচ ধরা হয় ১১০ কোটি টাকা। অপরদিকে, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতিকেজি ১০২ টাকা ১৩ পয়সা হারে এ মসুর ডাল কিনতে মোট খরচ ধরা হয় ৯৭ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

তিনি জানান, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদু্যৎ আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে বছরে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা। এ বিদু্যৎ আসতে ভেড়ামারার এইচভিডিসি সাব স্টেশন ব্যবহার করা হবে।

জানা গেছে, বিদু্যৎ আমদানির বিষয়ে গত মে মাসে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের ত্রিশুলি প্রকল্প থেকে ২৪ মেগাওয়াট এবং অন্য একটি বিদু্যৎকেন্দ্র থেকে ১৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদু্যৎ বাংলাদেশে আসার কথা। বাংলাদেশের ভেড়ামারায় জাতীয় গ্রিডে এই বিদু্যৎ আসবে ভারতের বহরমপুর সঞ্চালন লাইন দিয়ে। এ বিদু্যৎ আমদানির চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর হলেও নেপালের পক্ষ থেকে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে