শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
ঈদ-বৈশাখ দুই পার্বণ

টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানীতে তৈরি হচ্ছে ফতুয়া-থ্রিপিস-পাঞ্জাবি

৪শ' কোটি টাকার শাড়ি বিক্রির টার্গেট ভারতে রপ্তানি ৭৫ লাখ পিস
জোবায়েদ মলিস্নক বুলবুল, টাঙ্গাইল
  ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
টাঙ্গাইলের পাথরাইলে একটি শো-রুমে বিক্রি হচ্ছে শাড়ি, থ্রিপিস, ফতুয়া ও পাঞ্জাবি -যাযাদি

ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী পাথরাইল। আসন্ন ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে পাথরাইল এখন সরগরম। তাঁত শাড়ির রাজধানীর প্রতিটি দোকান ও কারখানায় পাইকার এবং খুচরা ক্রেতাদের ভিড়। পাইকাররা চাহিদানুযায়ী শাড়ি নিচ্ছেন। খুচরা ক্রেতাদের অনেকে শাড়ি কিনছেন, আবার কেউ কেউ দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের পণ্য খুঁজছেন। অনেকে শাড়ি তৈরি করা দেখতে কারখানায় যাচ্ছেন।

টাঙ্গাইলের ছোট বড় সব তাঁতশাড়ির কারখানায় কারিগররা অবিরাম শাড়ি বুনছেন। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাঁতের খট খট শব্দে মুখর থাকছে পুরো তাঁতি এলাকা। কারখানাগুলোয় মেরা-মাকু আর শানার ঠোকাঠুকির অবিরাম শব্দ। খটাখট শব্দে পরস্পরকে জড়িয়ে লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি

সরঞ্জামে রাখা সুতাগুলো মিলে তৈরি হচ্ছে শাড়ি। নানা রঙের সুতার মিশ্রণ আর কারিগরের হাত-পায়ের নান্দনিক ছন্দে তৈরি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বর্ণিল টাঙ্গাইল শাড়ি।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার পর থেকে টাঙ্গাইল শাড়ির কারখানাগুলোয় শাড়ির সঙ্গে যোগ হয়েছে ফতুয়া, সালোয়ার, কামিজ ও পাঞ্জাবির কাপড় তৈরি। আগামী ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখে ব্যবসায়ীরা ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রির আশা করছেন। ইতোমধ্যে ৭৫ লাখ পিস শাড়ি ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে।

জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার, কালিহাতী, ভূঞাপুর, গোপালপুর, বাসাইল, মির্জাপুর, নাগরপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তাঁত শাড়ির কারখানা রয়েছে। তবে জেলার বাজিতপুর, কৃষ্ণপুর, বেলতা, পুটিয়াজানি, বলস্না, রামপুর, কুকরাইল এলাকা তাঁত সমৃদ্ধ হলেও দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল এলাকা টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী হিসেবে খ্যাত। করোনাভাইরাসের প্রভাবে বৈশ্বিক মন্দার পর এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখে উৎসবে মেতেছে টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী। মহামারি করোনার পর বাঙালি ললনারা শাড়ি পরিধান করা এক প্রকার ছেড়ে দিয়েছেন- এজন্য কারিগররাও তাঁত শাড়ির সঙ্গে যোগ করেছে ফতুয়া, লুঙ্গি, থ্রি-পিস ও পাঞ্জাবির কাপড় তৈরি। খাঁটি সুতার মিহি বুননকৃত কাপড়ে তৈরি ফতুয়া, সালোয়ার, কামিজ, লুঙ্গি ও পাঞ্জাবির কদরও বাড়তে শুরু করেছে। বছরের এ দুই পার্বণে ব্যবসায়ীদের ৪০০ কোটি টাকার শাড়ি বিক্রির টার্গেট পূরণ হয়েও এ সংখ্যা বাড়তে পারে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার টাঙ্গাইল শাড়ির বেচাকেনা ভালো হবে। ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ এবার গ্রীস্মকালের কাঠফাটা রোদের সময়ে প্রায় একসঙ্গে হওয়ায় গরম ও ঘাম সহনশীল শাড়ি বৈশি বিক্রি হচ্ছে। পাইকার ও খুচরা ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শাড়ি বুননের কাজে কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

টাঙ্গাইলের তাঁতিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এতদাঞ্চলের তাঁত কারখানায় শাড়ি বুননের কাজে নিয়োজিতরা নিজেদের শ্রমিক বলতে বা ভাবতে নারাজ। তারা নিজেদের শিল্পী বা কারিগর ভাবতে বা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কারিগররা জানান, করোনার পর এবার কাজের চাপ কিছুটা বেড়েছে। কাজের চাপ বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়েনি। এ কারণে অনেক কারিগর এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। আগে তারা শাড়ির সুতা হাতে কাটতেন। এখন মেশিনে কাটতে হয়। বর্তমানের চেয়ে আগে কাজের দাম বেশি ছিল। এখন মেশিনের বিদু্যৎ বিল ও বেস্নডে মাসে প্রায় হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়। অন্য কাজ ভালো না পেরে বাধ্য হয়ে এ কাজ করতে হচ্ছে।

তারা জানান, তাঁতের শাড়ির বেচাকেনা এখন তেমন ভালো না। একজন কারিগর যে মজুরি পান- তাতে সংসার চলে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে প্রতিটি কারিগর পরিবার সমস্যায় রয়েছে। তারপরও তারা আশা করছেন- সামনে ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তাঁতের শাড়ি ভালো বিক্রি হবে- এতে কারিগরদেরও মজুরি বাড়বে।

টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি সংশ্লিষ্ট কারিগর, কারখানা মালিক ও ব্যবসায়ী সবাই আশা করছেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের উৎসবকে সামনে রেখে তারা দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এ দুই উৎসবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার শাড়ি ও তাঁতে বোনা নানা পোশাক বিক্রির আশা করছেন। দেশের পাশাপাশি অন্য দেশেও রপ্তানি হচ্ছে টাঙ্গাইলের শাড়ি। গত বছর ঈদুল ফিতর ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে টাঙ্গাইলের ৭৪ লাখ পিস শাড়ি ভারতে রপ্তানি হয়েছিল। এবার ৭৫ লাখ পিস শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। এ কারণেই টাঙ্গাইলের তাঁত সমৃদ্ধ এলাকায় ব্যস্ততা বেড়েছে। ছোট-বড় সব ধরনের তাঁত শাড়ির কারখানায় দিনরাত বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নানা ধাপের কারিগররা। ভোর থেকে গভীর রাত অবধি চলছে মেরা-মাকু আর শানার ঠোকাঠুকির শব্দ। তাঁতি বা কারিগরের হাত ও পায়ের ছন্দে তৈরি হচ্ছে এক একটি বর্ণিল শাড়ি। গরমের কথা বিবেচনায় রেখে এবার শাড়িতে এসেছে বৈচিত্র্য আর নতুনত্ব। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁত শাড়ির রাজধানী পাথরাইল ও জেলার হাট-বাজার এবং তাঁত কারখানাগুলোতে ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা আসা-যাওয়া করছেন।

তাঁত শাড়ির রাজধানী পাথরাইলে ৬০০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দামের সুতি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। জামদানি, হাফ সিল্ক, মসলিন, অ্যান্ডি সিল্ক ও সফট সিল্ক বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। নানা দামে খাঁটি সুতার মিহি বুননকৃত কাপড়ে তৈরি ফতুয়া, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, ফোর-পিস ও পাঞ্জাবির কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে যথেচ্ছ।

তাঁত কারখানার কারিগরদের হালচাল

কারখানায় কর্মরত কারিগর মুসলিম মিয়া, রশিদ মিয়া, রুমা রায়, মুসা খাসহ অনেকেই জানান, সাধারণ মানের একটা 'টাঙ্গাইল শাড়ি' তৈরিতে দুই দিন সময় লাগে। তারা বর্তমানে পৌনে সাতশ' টাকা মজুরি পাচ্ছেন। বাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ টাকা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। তারা এ পেশা যে ছেড়ে দেবেন- তাও সম্ভব না। কারণ তারা অন্য কোনো কাজ ভালোভাবে পারেন না। পেটের তাগিদে তারা এ পেশা ধরে রেখেছেন। মহাজন (কারখানা মলিক) ঠিকমতো কাপড় বিক্রি করতে পারলে তাদের কাজ দেন। আর বিক্রি করতে না পারলে তাদের কাজ দেওয়া হয়না- মহামারী করোনার সময় থেকে এভাবেই চলছে বলে জানান তারা।

আরফান আলী নামে এক কারিগর জানান, তিনি ৩৫ বছর ধরে এ পেশায় কাজ করছেন। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি হয়। একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে তিন-চার দিন। বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। কারিগর মজুরি দেওয়া হয় মাত্র এক হাজার টাকা। ছেলেমেয়ে নিয়ে তাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। বেশির ভাগই এ পেশা থেকে চলে গেছেন। তিনি অন্য কোনো কাজ শিখেননি- এজন্য তিনি অন্য পেশায় যেতে পারেননি।

বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা আসছেন

রাজধানী ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, হবিগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, পঞ্চগড়, সাভার, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা আসছেন টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী পাথরাইলে। খুচরা ক্রেতারা অনেকে পরিবার নিয়ে, আবার অনেকে পরিবার-আত্মীয়-স্বজনদের জন্য শাড়ি কিনতে আসছেন গাড়ি নিয়ে। কেউ কেউ শাড়ি কিনতে এসে মান ভালো পেয়ে কিনে নিচ্ছেন- তাঁতে তৈরি কাপড়ের ফতুয়া, সালোয়ার, কামিজ, লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি।

রাজধানী ঢাকা থেকে পরিবার ও আত্মীয়দের জন্য শাড়ি কিনতে টাঙ্গাইলের পাথরাইলে এসেছেন রাবিয়া খাতুন। তিনি জানান, 'টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির কোয়ালিটি ভালো- একটু অন্যরকম। এর আগেও তিনি এখান থেকে শাড়ি কিনেছেন। গতবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি। তারপরও টাঙ্গাইলের শাড়ি বলে কথা- সেজন্য নিয়ে যাচ্ছেন। সঙ্গে ফতুয়া ও পাঞ্জাবিও কিনেছেন।

অপর ক্রেতা সুমাইয়া শিমু জানান, ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তিনি দু'টি তাঁতের শাড়ি কিনেছেন। পরিবারের জন্যও তিনটি নিয়েছেন। শাড়ির গুণগত অনেক ভালো মান ও ডিজাইনে ডিফারেন্ট আছে। এজন্য প্রতি বছর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি কিনতে পাথরাইলে আসেন। গত বছর থ্রি-পিস ও পাঞ্জাবিও নিয়েছিলেন- এবার শুধু শাড়ি। আগের থেকে এবার দাম অনেকটা বেশি রাখা হচ্ছে। দাম একটু কম হলে ভালো হতো।

সাভার থেকে আসা ফাতেমা তাবাসুম নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে টাঙ্গাইল শাড়ির নামে অনেক নকল শাড়ি পাওয়া যায়। পিওর টাঙ্গাইল শাড়ি কেনার জন্য কষ্ট করে তিনি পাথরাইল এসেছেন। নিজের ও পরিবারের জন্য তিনি সাতটি শাড়ি কিনেছেন। গুণে-মানে ভালো- দামও সাধ্যের মধ্যে। তাই কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে তিনি টাঙ্গাইলে শাড়ি কিনতে আসেন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ী হুমায়ুন সিকদার জানান, বাহারি ডিজাইন এবং দাম নাগালের মধ্যে থাকায় ঈদসহ যে কোনো উৎসব-পার্বণে গ্রাহকদের কাছে বিভিন্ন মানের টাঙ্গাইল শাড়ির কদর রয়েছে। তুলনামূলকভাবে দামে কম হওয়ায় যেকোনো উৎসবের আগে তিনি এখান থেকে শাড়ি কিনে নিজ এলাকায় বিক্রি করে থাকেন।

শিল্প মালিকরা আশাবাদী

পাথরাইল এলাকার তাঁতশিল্পের মালিক গোবিন্দ সূত্রধর জানান, বর্তমানে তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। একদিকে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাব এখনো পুরোপুরি কাটেনি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব। তার মধ্যে 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে পাওয়ার লুম। হ্যান্ডলুমের তৈরি শাড়িতে খরচ বেশি- তাই দামও কিছুটা বেশি। পাওয়ার লুমের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে পাঁচশ' থেকে সাতশ' টাকায়। হ্যান্ডলুমের শাড়ি তৈরি করতেই মজুরি দিতে হয় পাঁচশ' থেকে সাতশ' টাকা। এজন্য হ্যান্ডলুমের শাড়ি চলে কম। তারপরও তিনি আশা করছেন, এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ পাশাপাশি হওয়ায় বিক্রি ভালো হবে। গতবারের থেকে এবার বেশি বিক্রি হবে।

টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসায়ী মিনহাজ মিয়া জানান, রোজা শুরু হওয়ার আগে থেকেই তারা শাড়ি তৈরি করে মজুত করেছেন। এবার হাফ সিল্ক, মিক্স কটন, পিওর সিল্ক ও সুতি শাড়ি বেশি তৈরি হয়েছে। রোজা শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারি শাড়ি কিনতে আসছেন। এবার শাড়ি ভালোই বিক্রি হচ্ছে।

জেলা শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক জানান, এ বছর ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে তারা যা উৎপাদন করেছেন- তা বাজারে ছেড়ে দিয়েছেন। পাইকারি বিক্রি মোটামুটি শেষের দিকে- এখন খুচরা বেশি বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার বিক্রি ভালো হবে। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। এদিকে মানুষের মধ্যে ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। সে কারণে এবার তাঁতিরা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

তিনি জানান, এ বছর টাঙ্গাইল শাড়ির রপ্তানিও বেশি হয়েছে। এবার বাংলাদেশ থেকে ঈদ ও পূজা উপলক্ষে ভারতে ৭৫ লাখ পিস শাড়ি রপ্তানি হয়েছে- গত বছর রপ্তানি হয়েছিল ৭৪ লাখ পিস। ক্রমবর্ধমান রপ্তানির এ ধারা ধরে রাখতে হবে। কারণ শুধু আমাদের দেশের বাজার দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।

টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক জানান, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িতে প্রতি বছরই নতুন কালেকশন থাকে- এবারও নতুনত্ব আছে। তবে এবার অভিনবত্ব নিয়ে তাঁতিদের হাতে বোনা ফতুয়া, সালোয়ার, কামিজ, লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি এসেছে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী এবার প্রায় ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। এবার তাঁতিরা মোটামুটি সবাই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডেও (বাতাঁবো) টাঙ্গাইলের বাজিতপুরের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, বাতাঁবো'র নিয়মে তাঁতিদের তারা চলমান প্রক্রিয়ায় ঋণ দিয়ে থাকেন। প্রণোদনামূলক ঋণ হিসেবে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জে তারা তাঁতিদের সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারেন। তবে চলমান ঋণের এ হার বাড়ানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে