স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অনেক কিছু ধ্বংসের পাশাপাশি মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তবে দেশকে নিয়ে এখনো সম্ভাবনা আছে। আর সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়নে মানুষ বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে। মানুষের সেই প্রত্যাশা পূরণে আমাদের নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিলস্না নগরের ঢুলিপাড়া এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, 'বিএনপির ওপর মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের। আর এ জন্য আমাদের ওঠাবসা, কাজকর্ম ও কথাবার্তা এমন হতে হবে, যাতে মানুষ আমাদের ওপর আস্থা ধরে রাখতে পারে। সবার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে এ কাজ করতে হবে।'
দেশের প্রতিটি খাতে জবাবদিহি থাকলে দেশ পরিবর্তন হয়ে যাবে উলেস্নখ করে তারেক রহমান বলেন, 'আমাদের প্রত্যাশা আগামীতে দেশের জনগণের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা, যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। তাহলেই দেশের সমস্যাগুলো আমরা সমাধান করতে সক্ষম হব পর্যায়ক্রমিকভাবে।'
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, 'বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে কী করতে চায়, সেই বিষয়গুলোর বর্ণনা আছে ৩১ দফায়। গত কয়েক মাসে সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠন রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনর্গঠনে সংস্কারের কথা বলেছেন। বিএনপি কিন্তু এ কথা দুই বছর আগে থেকেই বলে আসছে। যখন স্বৈরাচার দেশে ছিল, তখনো এই সংস্কারের কথা বলেছে বিএনপি। বিএনপির সব সময় দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করে। অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইত না যে স্বৈরাচার বিদায় হবে, কিন্তু বিএনপি বিশ্বাস করত, স্বৈরাচারের বিদায় হবেই। এ জন্য তারা প্রথমে ২৭ দফা দিয়েছিলেন, পরে সেটা ৩১ দফায় পরিণত হয়।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, 'আমাদের বহু নেতা-কর্মী বিগত স্বৈরাচারের সময়ে গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতিত হয়েছে। এরপরও নেতা-কর্মীরা দল ছাড়েনি একটি বিশ্বাস নিয়ে। এ বিশ্বাস হলো জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সফল হবেই। আমার বাবাকে দেশের জন্য কাজ করায় শহীদ হতে হয়েছে ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে। আমার ভাইকেও শহীদ হতে হয়েছে বা মারা গিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীদের অত্যাচারে। আপনারা দেখেছেন, আমার মাকে কীভাবে অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বাংলাদেশের বিএনপির বহু নেতা-কর্মীর পরিবারের কাহিনী একই রকম। অনেক নেতা-কর্মীর এই কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে ১৬ বছর ধরে।'
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, 'যে দলের ৬০ লাখ নেতাকর্মী গায়েবি মামলা ও অত্যাচারের শিকার হয়েছে, সেই দলের ওপর এ দেশের মানুষ প্রত্যাশা রাখে। তাই আমাদের প্রস্তুত করতে হবে মানুষের জন্য। নিজের কথা নয়, আমাদের দেশ ও মানুষের কথা ভাবতে হবে।'
কর্মশালায় কুমিলস্না বিভাগীয় বিএনপির আওতাধীন কুমিলস্না দক্ষিণ ও উত্তর জেলা, কুমিলস্না মহানগর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের সাড়ে ছয় শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
বিএনপি কুমিলস্না বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে কর্মশালা পরিচালনা করছেন বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন।