গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ২০২৫ শিক্ষা বর্ষে স্নাতক ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। এবছর ১৫২৫ আসন সংখ্যা থেকে ২৭০ আসন বাড়িয়ে মোট ১৭৯৫ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট, শিক্ষক সংকট, ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ সংকট রয়েছে আগের মতোই।
সব থেকে বেশি আসন সংখ্যা বেড়েছে কৃষি অনুষদে। কৃষি অনুষদে যেখানে গত বছর আসন সংখ্যা ছিল ৩০০ টি এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩৭৫ টি। বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের চার বিভাগে ২০ টি করে মোট আসন বেড়েছে ৮০ টি। এছাড়াও ফিসারিজ অনুষদ, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স অনুষদ, ইংরেজি, অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া সকল বিভাগ অনুষদেই ৫ থেকে ১০ টি করে আরো ১১৫ টি আসন বাড়ানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
ইউজিসির নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের নূন্যতম মানদন্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। প্রায় অধিকাংশ বিভাগেই নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। অপর দিকে প্রায় প্রত্যেক বিভাগ থেকেই একাধিক শিক্ষক আছেন শিক্ষা ছুটিতে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কোনো কোনো বিভাগে মাত্র তিনজন শিক্ষক নিয়েই চলছে বিভাগের চার থেকে পাঁচটি ব্যাচ। এর ফলাফল হিসেবে এক থেকে দুই বছরের সেশনজটে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী।
নবনির্মিত ১০ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ক্লাস রুম সংকট কাটালেও নেই পর্যাপ্ত ফ্যাসিলিটিজ। ক্লাসরুমে নেই প্রজেক্টর, সাউন্ড সিস্টেম, পর্যাপ্ত চেয়ার টেবিল ও বেঞ্চসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ। ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ এর সংকটও প্রকট। ল্যাব রুম থাকলেও নেই ফ্যাসিলিটিজ ও সরঞ্জাম।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি ছেলেদের ও চারটি মেয়েদের আবাসিক হল থাকার পরেও বর্তমান শিক্ষার্থীর প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন সংকট বিদ্যমান।
শুধু আবাসন সংকটই না বর্তমান শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা দিতেও প্রতিনিয়তই হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখা। অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর পরিবহনে ঝুঁকির মধ্যেই চলছে পরিবহন সেবা। বাসের সংখ্যা না বাড়লেও শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে চলতি বছরে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর কবির জানান, সব বিশ্ববিদ্যালয়েই আবাসন সংকট রয়েছে। এছাড়াও সকল অনুষদের ডিনগণের সভায় তাদের সক্ষমতা অনুসারে স্ব স্ব অনুষদ ও বিভাগে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছেন। আমরা শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ এবং একটা ডেভেলপমেন্ট বাজেট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেগুলো পাশ হয়ে গেলে সংকট অনেকটা কমে আসবে। একজন শিক্ষক ৪০ জনের যে রকম ক্লাস নিবে ৬০ জনেও সেরকমই হবে আমাদের ক্লাসরুমেরও সেরকম সক্ষমতা রয়েছে।
প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলাম শিকদার বলেন, ডিনদের সভায় তাদের মতামত অনুযায়ী আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। মূলত নিজস্ব ভবন সহ নতুন দশতলা একাডেমিক ভবনে কিছু রুম বরাদ্দ পাওয়ায় কৃষি অনুষদ সব থেকে বেশি আসন বাড়িয়েছে। এছাড়াও ক্লাসরুমের সক্ষমতা অনুযায়ী ডিনদের সুপারিশে অন্যান্য অনুষদের পরিমিত আসন বাড়ানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, হাবিপ্রবিতে ভর্তির আবেদন শুরু ৬ ফেব্রম্নয়ারি এবং চারটি ইউনিটে পরীক্ষা শুরু ২১ এপ্রিল। ১০০ মার্কের এমসিকিউ পরীক্ষার মাধ্যমে হাবিপ্রবি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।