বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে ব্রেনকে হ্যাক করে?

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
  ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে ব্রেনকে হ্যাক করে?
সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে ব্রেনকে হ্যাক করে?

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন রিলিজ করে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে।

আপনি কি জানেন, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ডেভেলপার ঝবধহ চধৎশবৎ বলেছেন, ফেসবুক ডেভেলপ করার সময় আমি মানুষকে কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বেঁধে রাখা যায় সেটার ওপরে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। সে কারণেই আমরা ফেসবুকে এমনভাবে ডিজাইন করেছি যেন ফেসবুক হিউম্যান সাইকোলজি থাকা দুর্বলতাগুলোকে ব্যবহার করে মানুষকে বেঁধে রাখতে পারে। এক কথায় বললে মস্তিস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। ডোপামিন রিলিজের কারণেই মানুষ প্রতিদিন বারবার সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন চেক করতে থাকে। অবাক করার বিষয় ফেসবুকে ডেভেলপ করা সিস্টেমের কারণে ডোপামিন মানুষের ওপর ড্রাগের মতো কাজ করে। ফলে, মানুষ ফেসবুকের প্রতি আসক্ত হয়ে যায়।

1

বর্তমানে সব সোশ্যাল মিডিয়াগুলো এসব ইৎধরহ হ্যাকিং মেথড ব্যবহার করে তাদের অঢ়ঢ় মানুষের ব্যবহার করতে বাধ্য করছে। যাতে করে মানুষ বেশিরভাগ সময় তাদের মোবাইলে এসব অঢ়ঢ়ং এ কাটাতে পারে। এখনে আরেকটা বিষয় হয়তো আপনি ভাবছেন কীভাবে এসব সোশ্যাল মিডিয়ার অঢ়ঢ় আমাদের এডিকটেড করছে এর উত্তর হচ্ছে ডোপামিন দ্বারা। সোশ্যাল মিডিয়ার এডিকশন মূলত বিজনেসের কাজেই ব্যবহার করা হয়।

এখন এই ডোপামিন কি জিনিস। আসলে ডোপামিন হচ্ছে একটা হরমোন। যেটা আপনার ইৎধরহ থেকে নিউরনের মাধ্যমে রিলিজ হয়। আপনাকে এটা বুঝতে হবে যখনি আপনার নিউরন থেকে ডোপামিন রিলিজ হয় তখনি এই ডোপামিন আপনাকে একটি ঝধঃরংভধপঃরড়হ বা আনন্দ দিয়ে থাকে। এই ডোপামিন কখন রিলিজ হয়। আসলে কোনো মানুষ যখন ড্রাগ নেয় তখন এই ডোপামিন রিলিজ হয়। ড্রাগের আনন্দ বা ফিলিং দেখা যায় সেটা প্রচুর পরিমাণে ডোপামিন রিলিজ হওয়ার কারণে হয়। প্রথমবার যখন এই ডোপামিন রিলিজ হয় তখন দ্বিতীয়বার তার ইৎধরহ এ এই ডোপামিন হরমোন রিলিজ করার জন্য পেসার দেয়। এভাবে চাহিদা বাড়তে বাড়তে আস্তে আস্তে ওই ব্যক্তি ড্রাগ এডিকটেট হয়ে পড়ে।

এখন প্রশ্ন এর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার কি সম্পর্ক? পরীক্ষা এটা জানা গিয়েছে যে, যখন আমাদের কোনো কাজ করার বদলে কোনো পয়েন্ট দেওয়া হয় তখন আমাদের মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন রিলিজ হতে থাকে, যেমনটি ড্রাগ নেওয়ার ফলে হয়ে থাকে। মানুষের এই দুর্বলতাকে কাজ লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে মেন্টালি এডিকটেট করানোর জন্য করে থাকে। এসব সোশ্যাল মিডিয়া জেনে শুনে লাইক কমেন্ট এবং ারবংি-এর মাধ্যমে আপনাকে এডিকটেট করে রাখে। এসব লাইক এবং কমেন্ট আপনার ইৎধরহ রিওয়ার্ড পাওয়া অনুভূতি দেয়। এসব লাইক কমেন্ট পাওয়া ফিলিং আপনার ইৎধরহ-কে ডোপামিন রিলিজ করানোর জন্য পেসার দেয়।

এটাই একমাত্র কারণ যখন আপনি কোনো ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন তখন বারবার সোশ্যাল মিডিয়ায় চেক করেন কতগুলো লাইক পড়ল কে কতটা কমেন্ট করল এটা দেখার জন্য। কারণ এসব লাইক এবং কমেন্টের ফলে আপনি আনন্দ পান। ফলে, আপনার ইৎধরহ থেকে ডোপামিন রিলিজ হতে থাকে। কিছুক্ষণ পারে যখন আপনার পোস্ট পুরাতন হয়ে যায় ওই পোস্টে লাইক আসা বন্ধ হয়ে যায়। তখন আপনি ডোপামিন রিলিজ করানো জন্য আবার আরেকটি নতুন পোস্ট করেন যাতে করে আপনি আরো লাইক কমেন্ট পেতে পারেন।

এভাবে আপনি রোজ পোস্ট করতেই থাকেন লাইক পেতেই থাকেন আর আপনি ডোপামিনের সাগরে ডুবতেই থাকেন। কিন্তু আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে এই ডোপামিনের ভয়াবহতা এত বেড়ে যায় যে, আপনি লাইক কমেন্ট পাবার জন্য যে কোনো কিছু করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। হোক সেটা কোনো ছেলেমেয়ে সেজে অভিনয় করা বা অশ্লীল কাপড় পরে সবার সামনে আসা। এটা কোথাই হয় সেই অঢ়ঢ় সম্পর্কে নিশ্চয় আপনাকে আর বলে দিতে হবে না- আপনি আমার থেকে ভালো জেনে থাকবেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে বেশি সময় ধরে ফোনে আটকে রাখা যাতে করে তাদের প্রডাক্ট যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে, টিকটক বেশি সময় ধরে ব্যবহার করে। আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না যে, এসব কোম্পানি আপনাকে বেশি সময় ধরে ফোনে আটকে রাখা জন্য কোন কোন টেকনোলজি কোন টেকনিকে ব্যবহার করছে। এমন কিছু কোড তৈরি করেছে যাতে করে ইনস্টাগ্রামে ইউজার বারবার ইনস্টাগ্রামে এসে তাদের ফটো লাইক কমেন্ট চেক করতে পারে।

নানান গবেষণার পরে সাইকোলজিস্টরা জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়ে গেছে। ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে অল্প বয়সি ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে মানসিক চাপ। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে বিশেষ করে পরিবারের ভেতরেও নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে