চলমান বিপিএলে মাঝে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান নিয়ে রংপুরের সঙ্গে লড়াই করছিল কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স। তবে নিজেদের দশম ম্যাচে সিলেটের কাছে ১২ রানে হেরে সেই লড়াই থেকে পিছিয়ে গেছে সালাউদ্দিনের শিষ্যরা। এতে আসরের চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে সিলেট।
এই জয়ে সিলেটের খুব বেশি লাভ না হলেও কুমিলস্নার অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে। জিতলেই পেস্ন-অফ নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ ছিল তাদের সামনে। কিন্তু হেরে যাওয়ায় এখন অপেক্ষায় থাকতে হবে চারবারের চ্যাম্পিয়নদের।
শক্তি-সামর্থ্যে দুই দলের পার্থক্য বিশাল ছিল আগে থেকেই। এই ম্যাচে সেই ব্যবধান আকাশ-পাতাল হয়ে ওঠে কুমিলস্না আন্দ্রে রাসেল ও সুনিল নারিনকে পাওয়ায়। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে সিলেট ঘুচিয়ে দিল সেই ব্যবধান। কুমিলস্নার অধিনায়ক লিটন দাস যদিও খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। কিন্তু ম্যাচ জয়ের হাসি মোহাম্মদ মিঠুন ও তার দলের।
সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে কুমিলস্নাকে ১৭৮ রানের লক্ষ্য দেয় সিলেট। নির্ধারিত ওভারে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে কুমিলস্না। এতে ১২ রানের জয় পায় সিলেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন সিলেটের বেনি হাওয়েল।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সিলেটের জয়ের নায়ক বেনি হাওয়েল। আগের ম্যাচে ফিফটি করা অলরাউন্ডার আবারও দলের বিপর্যয়ের মধ্যে উপহার দেন ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৩১ বলে ৬২ রানের ইনিংস। তার ২১৬ ম্যাচের টি২০ ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোর এটিই। পরে বল হাতে শেষ সময়ে মইন আলির গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন তিনি। রান তাড়ায় ওপেন করতে নেমে শেষ ওভারে বিদায় নেওয়া লিটন করেন ৫৮ বলে ৮৫ রান। কিন্তু তা যথেষ্ট হলো না দলের জয়ের জন্য।
বড় লক্ষ্য নিয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি কুমিলস্না। শুরুতে ৫ বলে ৩ রান করে এই ম্যাচে ওপেন করতে নামা ইমরুল কায়েস সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু অপর প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন লিটন দাস। তৃতীয় উইকেটে ১৫ বলে ১৭ রান করেন তাওহিদ হৃদয়। আরিফুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেনি ক্যারিবিয়ান তারকা ব্যাটার জনসন চালর্স। ২১ বলে ১২ রান করে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। কিন্তু ব্যাট চালিয়ে ব্যাট চালিয়ে ৩২ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেন লিটন। ৫ বলে শূন্য রান করে আউট হন মঈন আলী। এরপর দ্রম্নতগতিতে রান তুলতে থাকে লিটন। শেষ ১২ বলে কুমিলস্নার জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩৭ রান। এ সময় ব্যাটিংয়ে ছিলেন লিটন দাস ও আন্দ্রে রাসেল। ১৯তম ওভারে এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে ১২ রান তুলতে পারে রাসেল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫ রান।
কিন্তু শেষ ওভারের প্রথম বলেই আউট হন লিটন। ৫৮ বলে ৮৫ রান করে পেস্ন-ডাউনে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। পরের বলে পিচে এসে ছক্কা মারেন জাকের আলী। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইকে যান রাসেল। লক্ষ্য তিন বলে তিন ছয়। কিন্তু কোনো রান পাননি তিনি। পঞ্চম বলে চার মারলেও ম্যাচ থেকে যায় কুমিলস্না। শেষ বলে তানজিম সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ১৪ বলে ২৩ রান করে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন রাসেল। এতে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তুলতে পারে কুমিলস্না। ফলে ১২ রানের জয় পায় সিলেট। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন তানজিম সাকিব। এ ছাড়া আরিফুল ইসলাম, শফিফুল ইসলাম ও বেনি হাওয়েল একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট স্ট্রাইকার্স
২০ ওভারে ১৭৭/৫
(লুইস ৩৩, জাকির ১৮, শান্ত ১২, ইয়াসির ২, মিঠুন ২০, হাওয়েল ৬২*, আরিফুল ৭*; রাসেল ০/৩৫, মইন ০/১৩, আলিস
০/৩৮, নারিন ২/১৬, মুশফিক হাসান
২/৩২, রিশাদ ২/৩৭)।
কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স
২০ ওভারে ১৬৫/৬
(ইমরুল ৩, লিটন ৮৫, হৃদয় ১৭, চার্লস ১২, মইন ০, রাসেল ২৩*, জাকের ৭*; আরিফুল ০/৩৬, সামিত ১/১৫, শফিফুল ১/১৮, সানজামুল ০/২৫, তানজিম ৩/৩৩, হাওয়েল ১/৩৬)।
ফল
সিলেট স্ট্রাইকার্স ১২ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা
বেনি হাওয়েল