বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাকিবের চোখে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ফল খুব খারাপ না

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
সাকিবের চোখে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ফল খুব খারাপ না
সাকিবের চোখে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ফল খুব খারাপ না

বিশ্বকাপের উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার আগে বাংলাদেশ জানিয়েছিল, সুপার এইটে যাওয়াই তাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য পূরণ করলেও বাংলাদেশ চলমান বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে স্রেফ হতাশাই উপহার দিয়েছে। তবে সাকিব আল হাসান জানালেন, ফলাফলের দিক দিয়ে চিন্তা করলে ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপ তাদের খুব একটা খারাপ যায়নি। যদিও একইসঙ্গে সুপার এইটে লড়াই করতে না পারা যে হতাশাজনক, তা স্বীকার করে নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

ডি গ্রম্নপে শ্রীলংকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় পর্বে অ্যান্টিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৪০ রানেই আটকে গিয়েছিলেন টাইগাররা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসেই কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে নাজমুল হাসান শান্তর দল। একই মাঠে ভারতের বিপক্ষে ১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থেমে গিয়েছিল ১৪৬ রানে। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের তৃতীয় ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

1

সাকিব বলেন, 'যদি ফলাফলের কথা বলেন, আমি বলব আমরা মোটামুটি অবস্থানে আছি। আমরা ছয়টি ম্যাচ খেলে তিনটি জিতেছি, তিনটি হেরেছি। পঞ্চাশ শতাংশ জয় যদি দেখেন, সেদিক দিয়ে খুব একটা খারাপ না। আমি যেটা অনুভব করি, আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেভাবে লড়াই করেছি, (সুপার এইটের) এই দুটি ম্যাচের একটিতে যদি এভাবে লড়াই করতে পারতাম, আমার কাছে মনে হয় বিশ্বকাপটা তখন আমাদের জন্য অনেক সফল হতো। দুটি ম্যাচে আমরা যেভাবে প্রথম থেকেই পিছিয়ে ছিলাম, ওই জায়গাটা আসলে আমাদের জন্য একটু দুঃখজনক।'

শক্তিশালী দুই প্রতিপক্ষের সামনে বাংলাদেশের রুগ্ন দশা ফুটে ওঠে। দলগুলোর সঙ্গে যে ব্যবধান এখনো অনেক, সেটা দেখে দুঃখ হয় সাকিবের, 'আপনি যদি মাঠের পারফরম্যান্স দেখেন, আমরা ওভাবে লড়াই-ই দেখাতে পারিনি। যেটা আমি স্বীকার করব যে হতাশাজনক। আমরা যখন বিশ্বকাপের দাবিদার দুটি দলের বিপক্ষে খেললাম, তখন তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবধানটা খুব ভালোভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। আমাদের যে এত বেশি ব্যবধান এখনো আছে, সেটা আমার কাছে হতাশার।'

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষেও ৫০ রানের একপেশে হার টাইগারদের ভাগ্যে জুটেছে।

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ আদতে কত রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেছিল। ১৯৭ রান তাড়ায় টাইগারদের করা ব্যাটিং সে প্রশ্নই তুলে দিয়েছিল। ব্যাট হাতে নাজমুল হাসান শান্তর দলে লক্ষ্য তাড়ার যে তাড়না, সেটির অভাব স্পষ্টতই ফুটে উঠেছিল। অন্তত চেষ্টা করছে বাংলাদেশ, সেটিও বোঝাতে পারেনি তারা। সাকিব আল হাসানের দুঃখও সেখানেই।

অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে লক্ষ্য থেকে ৫০ রান দূরে আটকে গিয়েছিলেন সাকিবরা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার বলেন, 'ব্যাটিং হতাশাজনক। এর বড় একটা কারণ হতে পারে যে, রানের অভাব। তো ওই আত্মবিশ্বাস ছিল না, যেভাবে এক্সপ্রেস করার দরকার হতো। বিশেষ করে এই মাঠে যে দুটি ম্যাচ খেললাম। আমি অনুভব করেছি যে, ১৭৫-১৮৫ মোটামুটি স্কোর এখানে, মানে লড়াই করার মতো স্কোর। সেটার নিচে হলে আসলে কঠিন। সেই জায়গা থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম।'

'আগের দিন ১৪০ করলাম, আজকে ১৪৬। আগের দিনের পর আমাদের অন্তত আজকে আরেকটু ভালো অবস্থায় যাওয়া উচিত ছিল। যেহেতু আমরা জানি কী হচ্ছে, কোন টার্গেটে ব্যাটিং করছি। আমার কাছে মনে হয়, আমরা প্রথম থেকেই ওই অবস্থাতেই যাইনি, যেখানে আমরা অন্তত চেষ্টা করছি, এই জিনিসটা মানুষদের বোঝাব। তো এই জায়গাটা দুঃখজনক।'

অধিনায়ক শান্তর মুখেও এসেছে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ব্যাটিং না করার কথা। তিনি বলেন, 'আমাদের অনেক ব্যাটিং অপশন ছিল আজকে। কিন্তু যতটুকু ইন্টেন্ট দেখানোর প্রয়োজন ছিল, তা আমরা পারিনি। কারণ, যখন ১৯০ রানের বেশি তাড়া করছি, আমাদের কিছু ইন্টেন্ট দেখানো উচিত ছিল। বিশেষ করে, প্রথম ছয় ওভারে।'

ঘরোয়া ক্রিকেটে হাইস্কোরিং ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত নন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। সে রকম ম্যাচে মানসিকতায়ও তাই বাংলাদেশ পিছিয়ে যায় বলে মনে করেন সাকিব, 'আমরা ১৩০-১৪০-১৫০ রানের খেলাটা খুব ভালো জানি। কারণ, আমরা এ ধরনের ম্যাচই সবসময় খেলে অভ্যস্ত। যখনই আমরা ১৮০-১৯০ রানের খেলায় যাই, তখন আমাদের চিন্তা ওই পর্যায়ের আসে না।'

সাকিব আরও বলেন, 'বড় মঞ্চে যখন খেলা হয়, আপনাকে ১৮০ রান তাড়া করতেই হবে। আমরা খুব বেশি হাইস্কোরিং ম্যাচে লক্ষ্য তাড়া করিনি। এমনকি বিপিএলে বিদেশিরা যখন করে দেয় তখন হয়। শুধু একটা ম্যাচ আমি দেখেছি এ বছর, যখন রংপুরের বিপক্ষে কুমিলস্নার ম্যাচে লিটন আর হৃদয় খুব ভালো ব্যাটিং করে ১৮০ রান তাড়া করেছিল। ওইটা বাদে আমি খুব বেশি দেখিনি যে, দেশি ব্যাটাররা এ রকম রানে চেজ করে জেতাতে পারে। এই জায়গাটাতে সবসময় আমাদের দুর্বলতা ছিল, এখনো আছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে