বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জয়ী চীন’

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ মে ২০২৫, ১৮:০৯
আপডেট  : ২০ মে ২০২৫, ১৮:২১
‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জয়ী চীন’
ছবি: সংগৃহীত

'চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী' ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনের সংঘর্ষ শেষ হয়েছে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এবং দুই দেশই দাবি করেছে যে 'তারাই জয়ী' হয়েছে।

কিন্তু দুই পক্ষের এই সংঘর্ষে আলোচনার বাইরে থেকে চীনের প্রতিরক্ষা শিল্পখাতেরও বড় জয় হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

1

গত মাসের ২২ তারিখে পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এর জবাবে সাতই মে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে 'সন্ত্রাসী অবকাঠামোগুলোর' উপর হামলা শুরু করে ভারত ।

ভারত-শাসিত কাশ্মীরের মনোরম উপত্যকায় যাদের নিশানা করা হয়েছিল, তাদের অনেককে স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের সামনে হত্যা করা হয়। দিল্লি ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত 'সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে' সমর্থন করার অভিযোগ এনেছে, যদিও পাকিস্তান সেই অভিযোগ অস্বীকার করে।

'সন্ত্রাসী হামলার' জবাবে ভারত পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা এই অভিযানের নামকরণ করে 'অপারেশন সিন্দুর'। এরপর উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে 'টিট-ফর-ট্যাট' (আঘাতের জবাবে পাল্টা আঘাত) জাতীয় সামরিক হামলা চালায়। এই সংঘর্ষে ব্যবহার করা হয় ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান।

ফ্রান্স এবং রাশিয়ান তৈরি জেট ভারত ব্যবহার করেছে বলে জানা গেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান বেইজিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি তাদের জে-১০ এবং জে-১৭ বিমান ব্যবহার করে।

ভারত ও পাকিস্তান দুই পক্ষই জানিয়েছে, তাদের বিমান সীমান্ত অতিক্রম করেনি এবং দূর থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে।

এরই মাঝে ইসলামাবাদ দাবি করে তাদের যুদ্ধবিমান কমপক্ষে ছয়টা ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ফ্রান্স-নির্মিত রাফায়েল যুদ্ধবিমানও রয়েছে। পাকিস্তানের তরফে এই দাবির বিষয়ে ভারত কোনও জবাব দেয়নি।

ভারতীয় বিমান বাহিনীর এয়ার মার্শাল একে ভারতী গত সপ্তাহে এই দাবি সংক্রান্ত একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, "ক্ষয়ক্ষতি কম্ব্যাটের (সংঘর্ষের) একটা অংশ।"

পাকিস্তানের তরফে ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার সুনির্দিষ্ট দাবির বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি এয়ার মার্শাল একে ভারতী।

তিনি বলেছিলেন, "আমরা যে সমস্ত লক্ষ্যগুলোকে বেছে নিয়েছিলাম, সেই নিশানা আমরা অর্জন করেছি এবং আমাদের সমস্ত পাইলট দেশে ফিরে এসেছেন।"

ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদের মতো 'সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর' সদর দফতরে হামলা চালিয়ে তারা অন্তত '১০০জন সন্ত্রাসীকে' হত্যা করেছে।

আকাশপথে চালানো দুই পক্ষের এই হামলায় আসলে কী ঘটেছিল তার কোনও নির্দিষ্ট বিবরণ এখনও প্রকাশিত হয়নি। গণমাধ্যমে পাঞ্জাব এবং ভারত শাসিত কাশ্মীরে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার কথা প্রকাশ পেলেও ভারত সরকার এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় যুদ্ধবিমানের মোকাবিলা করতে পাকিস্তান এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল (আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র) ছুঁড়তে সম্ভবত চীনের তৈরি জে-১০ বিমান ব্যবহার করেছে।

সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষে চীনা অস্ত্র ব্যবস্থার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে পাকিস্তানের এই 'জয়ের' দাবিকে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা শিল্পের ব্যাপক উন্নতি বলে মনে করছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ আবার এই দাবির সঙ্গে একমত নন।

কিছু বিশেষজ্ঞ আবার একে চীনা অস্ত্র শিল্পের জন্য 'ডিপসিক মোমেন্ট' বলে অভিহিত করেছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চীনা এআই স্টার্ট-আপ ডিপসিক তাদের কস্টএফেক্টিভ (ব্যাপক খরচ না করে ভাল ফলাফল পাওয়া গিয়েছে) প্রযুক্তি দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয়দের 'কাঁপিয়ে' দিয়েছিল।

চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র কর্নেল ঝাও বো বিবিসিকে বলেছেন, "ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক আকাশ যুদ্ধ চীনা অস্ত্র শিল্পের জন্য একটা বড়সড় বিজ্ঞাপন ছিল। এতদিন চীনের কাছে সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে তাদের তৈরি প্ল্যাটফর্ম কেমন কাজ করে, সেটা পরীক্ষা করে দেখার কোনও সুযোগ ছিল না।"

বেইজিংভিত্তিক এই বিশ্লেষক জানিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে আকাশের লড়াই দেখিয়ে দিয়েছে যে "চীনের এমন কিছু ব্যবস্থা আছে যেমনটা অন্য কারও নেই।"

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের পর জে-১০-এর মতো যুদ্ধবিমান প্রস্তুতকারী চীনের অ্যাভিক চেংদু এয়ারক্রাফট কোম্পানির শেয়ারের দাম গত সপ্তাহে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন, চীনের অস্ত্র শিল্পের জন্য 'শ্রেষ্ঠত্ব' ঘোষণা করার সময় এখনও আসেনি।

লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক ওয়াল্টার ল্যাডউইগের মতে, চীনা যুদ্ধবিমান সত্যিই ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমান, বিশেষত রাফালকে টেক্কা দিতে পেরেছে কি না, সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তার কথায়, "আদর্শ সামরিক কৌশল বিবেচনা করলে, আগে শত্রুর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধংস করে দিতে হবে, এবং স্থলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার আগেই আকাশে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কিন্তু এখানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে পাল্টা হামলার জন্য উস্কে দেওয়া ভারতীয় বিমান বাহিনীর লক্ষ্য ছিলনা বলেই মনে হয়েছে।''

মি. লাডউইগ মনে করেন যে পাকিস্তানি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাদের 'উচ্চ সতর্কাতায়' থাকা অবস্থায় এবং তাদের জেটগুলো ইতিমধ্যে আকাশে থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় পাইলটদের 'ওড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল'। তবে ভারতীয় বিমান বাহিনী তাদের অভিযান বা কৌশল সম্পর্কে বিশদে জানায়নি।

এদিকে, বেইজিংও কিন্তু জে-১০ ব্যবহার করে রাফাল-সহ ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার খবর নিয়েও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে অসমর্থিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জে-১০ ব্যবহার করে একটা 'পশ্চিমা অস্ত্র শক্তি' (রাফালকে ইঙ্গিত করে) ভূপাতিত করা নিয়ে চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক উল্লাস শুরু হয়েছে।

ভেরোনার ইন্টারন্যাশনাল টিম ফর দ্য স্টাডি অফ সিকিউরিটির চীন বিষয়ক গবেষক কার্লোটা রিনাউডো জানিয়েছেন, চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জাতীয়তাবাদী বার্তায় ভরে গেছে, যদিও যেটুকু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়ে কোনও রকম সিদ্ধান্তে পৌঁছানোটা কঠিন।

তিনি বিবিসিকে বলেছেন, "এই মুহূর্তে বাস্তবতার তুলনায় মানুষের ধারণা বা মনোভাবের বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি বিষয়টাকে সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখি, তাহলে এখানে আসলে বিজয়ী হচ্ছে চীন।"

চীনের কাছে পাকিস্তান কৌশলগত ও অর্থনৈতিক মিত্র। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ হিসেবে পাকিস্তানে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ৫০ বিলিয়ন (পাঁচ হাজার কোটি) ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে চীন।

তাই পাকিস্তান 'দুর্বল' হয়ে পড়লে তা চীনের 'স্বার্থের জন্য ভাল নয়।'

পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বলেন, "সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে চীন একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এটা ভারতের নীতিনির্ধারকদের বিস্মিত করেছে।"

"আধুনিক যুদ্ধ ইস্যুতে পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে সহযোগিতা যে কতটা গভীর, সেটি তারা সম্ভবত কল্পনাও করেননি।"

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে চীনা জেটের সক্ষমতা পশ্চিমা দেশগুলোতে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে কারণ এটা বিশ্বব্যাপী অস্ত্র বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক দেশ এবং এই তালিকায় চীন চতুর্থ।

মূলত মিয়ানমার ও পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রি করে চীন। এর আগে, চীনা অস্ত্র তাদের 'নিম্নমান' এবং 'প্রযুক্তিগত সমস্যার' জন্য সমালোচিত হয়েছে।

কারিগরি ত্রুটির কারণে ২০২২ সালে মিয়ানমার বিমান বাহিনীর বহরের অন্তর্ভূক্ত চীন ও পাকিস্তানের যৌথ উদ্যোগে তৈরি বেশ কয়েকটা জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়।

নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী চীনের তৈরি এফ-৭ যুদ্ধবিমানে বেশ কয়েকটা কারিগরি সমস্যার কথা জানিয়েছে।

আরেকটা লক্ষণীয় বিষয় হল, পাকিস্তানের কাছে ভারতের বিমান 'খোয়ানোর' ঘটনা এই প্রথম নয়।

এর আগে, ২০১৯ সালে পাকিস্তানে সন্দেহভাজন 'সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে' ভারতীয় বিমান হামলার পরে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা সংক্ষিপ্ত আকাশ যুদ্ধের সময়, রাশিয়ার তৈরি একটা মিগ -২১ জেটকে পাকিস্তানের ভূখণ্ডের ভিতরে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল এবং পাইলটকে আটক করা হয়েছিল। কয়েকদিন পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভারত অবশ্য বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ সহ পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান সফলভাবে ভূপাতিত করার পর ওই পাইলট বিমান থেকে 'অটো ইজেক্ট'-এর মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছিলেন। অন্যদিকে, পাকিস্তান সেই দাবি অস্বীকার করে।

ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর সত্ত্বেও মি. লাডউইগের মতো বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, দশই মে ভোরের দিকে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে 'বেশ কিছু লক্ষ্যবস্তুতে' আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলছেন, এই তথ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুব একটা আসেনি।

ভারতীয় সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক সদর দফতরের অদূরে রাওয়ালপিন্ডির বাইরে কৌশলগত নূর খান বিমান ঘাঁটিসহ দেশের ১১টা পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতে তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এটা একটা স্পর্শকাতর লক্ষ্যবস্তু যা ইসলামাবাদকে হতবাক করে দিয়েছে।

সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে একটা ছিল করাচি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভোলারিতে।

মি. লাডউইগ মনে করেন এইবার আইএএফ 'স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিওর' বা প্রচলিত নিয়মকানুন মেনে কাজ করেছে- প্রথমে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও রাডার সিস্টেমে হামলা চালিয়েছে এবং তারপর স্থলে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করা মনোযোগ দিয়েছে।

পাকিস্তানিরা চীনের সরবরাহ করা 'এইচকিউ ৯' আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করা সত্ত্বেও ভারতীয় বিমানগুলো প্রচুর পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র, লয়টারিং মিউনিশন এবং ড্রোন ব্যবহার করেছে।

"ভারত বেশ সুনির্দিষ্ট এবং নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে বলেই মনে হয়েছে। রানওয়ের মাঝখানে হামলায় গর্ত তৈরি হয়েছে, যা একেবারে আদর্শ জায়গা। যদি এই সংঘর্ষ দীর্ঘমেয়াদি হতো, তাহলে এই সমস্ত স্থাপনা চালু করতে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর কত সময় লাগত, আমি বলতে পারব না।"

তবে তিনি মনে করেন , ওই অভিযান সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত বিবরণ দিতে রাজি না হয়ে ভারতের সামরিক বাহিনী এ সংক্রান্ত গল্পগুজবের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

পাকিস্তান বলেছে ভারতের হামলার জবাবে তারা বেশ কয়েকটা ভারতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে দিল্লি জানিয়েছে যে ওই হামলায় কোনও সরঞ্জাম ও কর্মীদের ক্ষতি হয়নি।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা 'হস্তক্ষেপ' করে এবং যুদ্ধ বন্ধের জন্য উভয় দেশের ওপর 'চাপ সৃষ্টি করে'।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের জন্য পুরো ঘটনাটা একটা 'সতর্ক বার্তার' মতো।

এর কারণ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ নিয়ে বেইজিং বিস্তারিত কোনও মন্তব্য না করলেও, চীন এটা দেখাতে আগ্রহী যে তাদের অস্ত্র পশ্চিমাদের তৈরি অস্ত্রে সাথে 'পাল্লা দিতে পারছে'।

এদিকে, দিল্লি ভালভাবেই জানে পাকিস্তানকে যে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করেছে চীন, সেগুলো পুরনো মডেলের। বেইজিং ইতিমধ্যেই আরও উন্নত জে-২০ স্টিলথ ফাইটার জেট অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে।

ভারত ও চীনের মধ্যে হিমালয় অঞ্চলে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে এবং ১৯৬২ সালে একটা সংক্ষিপ্ত সীমান্ত যুদ্ধ হয়েছিল যেখানে ভারতের পরাজয় হয়। এদিকে, ২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখে দুই দেশের মধ্যে একটা সংক্ষিপ্ত সীমান্ত সংঘর্ষ দেখা গিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত কিন্তু বেশ ভালভাবেই সচেতন যে তাদের দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগ দ্রুত শুরু করা দরকার। একই সঙ্গে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রয়ের গতিও বাড়ানো দরকার।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের চীনের বিমানের 'সাফল্য' নিয়ে দাবি ওঠার পর চীনা প্রতিরক্ষা শিল্প আপাতত 'লাইমলাইট'-এ চলে এসেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে