পাকিস্তান ও ভারতের কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংঘাতের পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১১ জন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে বলে পুলিশের বরাতে জানিয়েছে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যম।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির সূত্রে মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে বাসস।
ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর হামলার পর এ মাসের শুরুতে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ব্যাপক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
পাকিস্তানকে এ হামলার পৃষ্ঠপোষকতার জন্য অভিযুক্ত করে ভারত। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে হিমালয় অঞ্চল নিয়ে একাধিক যুদ্ধে লিপ্ত উভয় দেশই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের ওপর পূর্ণ অধিকার দাবি করে।
সোমবার ভারতীয় সম্প্রচারকমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশ থেকে নয়জন ‘গুপ্তচর’কে গ্রেফতার করেছে।
পাঞ্জাবের পুলিশ মহাপরিচালক গৌরব যাদব সোমবার বলেছেন, পুলিশ ‘সংবেদনশীল সামরিক তথ্য ফাঁসের সাথে জড়িত’ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশ ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ পেয়েছে এ দুই ব্যক্তি গত ৬ থেকে ৭ মে রাতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডের গভীরে নয়াদিল্লির হামলার সাথে সম্পর্কিত গোপন তথ্য বিনিময়ের সাথে জড়িত ছিল।
যাদব আরো বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, তারা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেরন্সের (আইএসআই) পরিচালকদের সাথে ‘সরাসরি যোগাযোগ’ করেছিল এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাঠিয়েছিল।
এদিকে হরিয়ানায় পুলিশ গত সপ্তাহে একই অভিযোগে এক ভ্রমণ ব্লগারকে গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই নারী কমপক্ষে দু’বার পাকিস্তান ভ্রমণ করেছিলেন এবং দেশটির দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন।
অন্যান্য গ্রেফতারদের মধ্যে একজন ছাত্র, একজন নিরাপত্তারক্ষী এবং একজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।
অপরদিকে আরেকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ১১ জনের গ্রেফতারের খবর জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘অভিযুক্তদের সোশ্যাল মিডিয়া, আর্থিক প্রণোদনা, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, মেসেজিং অ্যাপ এবং পাকিস্তানে ব্যক্তিগত ভ্রমণের মাধ্যমে গুপ্তচর নেটওয়ার্কে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল।’
১৯৯৯ সালে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে শেষ প্রকাশ্য সংঘাতের পর থেকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে সহিংসতার সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির পরে এদের গ্রেফতার করা হয়।