প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে সফর করছে বাংলাদেশ নারী দল। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় নিগার সুলতানা জ্যোতির দল মাঠে নামার কথা আছে। ২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এই সিরিজকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক জ্যোতি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ, প্রথম দ্বিপাক্ষিক লড়াই। রোমাঞ্চ তাই এমনিতেই বেশি থাকার কথা। তবে আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজটিতে জ্যোতি ও তার দলের জন্য মজুদ আছে আরও রোমাঞ্চের উপকরণ। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার ছাড়পত্র মিলতে পারে যে এই সিরিজ থেকেই! তাইতো বাংলাদেশ অধিনায়ক তাকিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণেই।
ক্যারিবীয়দের কঠিন কন্ডিশনে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচের নারীদের ওয়ানডে সিরিজ। ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে বাংলাদেশের জন্য এই সিরিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিন ম্যাচের সিরিজটি নিজেদের করে নিতে পারলেই সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার টিকিট পাবে বাংলাদেশ দল। দলের অধিনায়ক জ্যোতি সিরিজ জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না।
তিন বছর আগে ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলেছিল ক্যারিবীয়রা। বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট পাঁচবারের দেখায় সবকটিতেই জয় পেয়েছে হেইলি ম্যাথিউসরা। যেখানে চারটি ম্যাচ জিতেছে টি২০। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জিততে না পারা বাংলাদেশের এবার লক্ষ্যটা ভিন্ন।
ম্যাচের আগে বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় জ্যোতি বলেছেন, 'এখানে এসে আমরা দুটা অনুশীলনের সেশন পেয়েছি। যা আমাদের কাছে খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। কারণ এই কন্ডিশনে অনেকেই আগে খেলিনি। তবে উইকেট দেখে যা বুঝতে পেরেছি, ব্যাটাররা এখানে অনেক ভালো করবে। আশা করি সিরিজটা দারুণভাবেই শুরু করতে পারবো।'
বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলকে মেলাতে হবে কঠিন সমীকরণ। সেটি মাথায় আছে উলেস্নখ করে জ্যোতি বলেছেন, 'এখানে আসার আগে অনেক সমীকরণই মাথায় এসেছিল, তবে আমার কাছে মনে হয় দল হিসেবে খেলাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আসলে ভালো ক্রিকেট খেলাটাই এই মুহূর্তে বেশি দরকার। দলের সবার মধ্যে একটা মনোভাব দেওয়ার চেষ্টা করেছি যে, এখানে আমাদের ওয়ানডে কোয়ালিফাই করতে হবে বা পয়েন্ট লাগবেই- এই ধারণা মাথা থেকে ফেলে দিতে। চাপ কমিয়ে সবাই যেন নিজেদের সেরাটা খেলতে পারে এই জন্যই এভাবে চিন্তা করা।'
দলের কেউই বাছাই পর্ব খেলতে চায় না- এটিই জ্যোতির কাছে ইতিবাচক লাগছে। দলের অধিনায়ক আরও বলেছেন, 'আমাদের সবার জন্যই এটা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু পয়েন্ট নিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের যাওয়ার জন্য দলের এটা খুবই ভালো একটি সুযোগ। কেউই কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে যেতে চায় না, আমরাও না। এখানকার সুযোগ কাজে লাগাতে চাই? আমাদের একটি ভালো দল হয়েছে, সুযোগ আছে কিছু পয়েন্ট আদায় করে নেওয়ার। এটা শুধু আমাদের জন্যই না, যেসব নারীরা অপেক্ষা করছেন, আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন, সবার জন্যই। আমি সামনের দিনগুলোর অপেক্ষায় আছি।'
আর এমন সমীকরণের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ মাঠে গড়াবে ১৯ জানুয়ারি। জ্যোতি, নাহিদা আক্তাররা পরের দুটি ম্যাচ খেলবেন ২১ এবং ২৪ জানুয়ারি। এরপর ২৭, ২৯ এবং ৩১ জানুয়ারি হবে তিনটি টি২০। সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে সেন্ট কিটসে। দল নিয়েও বেশ আশাবাদী বাংলাদেশের অধিনায়ক, 'আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে যা আমরা নির্দিষ্ট দিনে মাঠে বাস্তবায়ন করতে চাই। আমাদের প্রত্যেক পেস্নয়ারের আলাদা আলাদা পস্ন্যান আছে? আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছি যা এখানে প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের ভালো বোলার আছে, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান আছে। দেখার অপেক্ষায় আছি তারা দলে কীভাবে ভূমিকা রাখে।'
এমনিতেই সেন্ট কিটসের উইকেট কিছুটা ব্যাটিং বান্ধব। দুই দিন অনুশীলনের অভিজ্ঞতা থেকে জ্যোতি জানালেন, 'উইকেট অনেক ভালো। এখানকার উইকেটে খেলাটা ব্যাটারদের জন্য তুলনামূলক সহজ হবে। ব্যাটে-বলে খুব ভালো সংযোগ হয়। ছেলেদের দল যখন খেলে গেছে সেটাও দেখেছি। এই ভেনু্যতে অনেক বেশি রান হয়েছে। এদিক থেকে বলবো, এটা আমাদের জন্য স্বস্তির। কারণ এই সংস্করণে ব্যাটাররা আগের সিরিজে ভালো করেছেন এবং ছন্দে আছেন। আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী। অবশ্যই টপঅর্ডারকে ভালো করতে হবে, তাহলে ভালো একটা স্কোর করা সম্ভব।'